কার ভুলে মা হারা হলো ৪ শিশু॥ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা না অবহেলা!

  • আপডেট: ০৮:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫
  • ০ Views

কার ভুলে মা হারা হলো অবুঝ ৪ শিশু। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা, নাকি অবহেলা! এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। গত শনিবার

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় পৌরসভাধীন বলাখাল গ্রামের অন্তঃস্বত্ত্বা ৩০ বছর বয়সি হোসনেয়ারাকে। বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম হোসেনআরার বাচ্চ প্রসবের জন্য চেস্টা করেন। এক পর্যায়ে বিকেল প্রায় ৩টার দিকে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হয়। তবে মায়ের অবস্থা কেমন আছে, হোসনেয়ারার ভাই আবদুর রহমান গাজী যতবারই জানতে চেয়েছে, ততবারই শাহনাজ বেগম বলছিলেন মা ভালো আছে।

এক পর্যায়ে নবজাতককে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য চাঁদপুর নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলে পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম হোসনেয়ারাকেও ডাক্তার দেখানোর জন্য চাঁদপুর নেয়ার কথা বলেন।

আবদুর রহমান গাজী বলেন, আমার বোন সুস্থ্য আছে, ডাক্তার আমাদেরকে বারে বারে এমন কথা বললেও। তার অবস্থা ছিলো খুবই খারাপ। আমরা হোসনেয়ারাকে চাঁদপুর নেয়ার পর জরুরী বিভাগের ডাক্তার জানান, প্রথমে যেখানে বাচ্চা প্রসব হয়েছে, সেখানেই কোন সমস্যা হয়েছে। দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে জানান, হোসনেআরা মারা গিয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বোনের ৩ মেয়ের পর এক ছেলে হয়েছে। শাহনাজ বেগমের চিকিৎসা অবহেলা আর ভুল চিকিৎসা দেয়ার কারণে আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা তার বিচার চাই।

 

হোসনেআরা’র স্বামী আবুল হাসেম জানান, বারে বারে বলার পরেও ডাক্তার বলেছে আমার স্ত্রী ভালো আছে। কোন সমস্যা নেই। তার পরেও কেন মারা গেলো। আমি এখন ৪ অবুঝ শিশু নিয়ে কোথায় যাবো। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।

হোসনেআরা’র মা পারুল বেগম বলেন, আমার ৫ ছেলে, ১ মেয়ে। অনেক আদর করে মেয়েকে লালন-পালন করেছি। ডাক্তার আমার মেয়েকে মেরে ফেলছি। এখন আমি এই এতিম ৪ অবুঝ শিশুকে নিয়ে কোথায় যাবো। আমি ডাক্তারের বিচার চাই। আমি ডাক্তারকে বলেছি, মেয়েকে হাজীগঞ্জে নিয়ে যাই। ডাক্তার বলছে কোন সমস্যা নাই। এখন আমার মেয়ে কেন মারা গেলো।

হোসেনআরা’র শাশুড়ী বলেন, আমার ছেলের বৌর সব ঠিক ছিলো। ডাক্তার অনেকগুলো ইনজেকশান দিয়েছে। সে হোসনেআরারে মাইরা লাইছে।

 

হোসনেআরা’র মৃত্যু প্রসঙ্গে বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম, সব কিছুই ঠিক ছিলো। বাচ্চা প্রসব হওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করি।

 

রোগীর পরিবার অর্ধশত ফোন করেছে, কেন ফোন রিসিভ করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব হাজীগঞ্জ) মো. মফিজুর রহমান জানান, বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম বিষয়টি রবিবার আমাকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমদের প্রসব পরবর্তী যে চিকিৎসা দেয়ার নিয়ম। তা তিনি করেছেন। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বিষয়টি টেকেল দিতে পারেনি। এমন কেইস খুব কমই হয়।

তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিডিকে জানিয়েছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআই প্রধান

কার ভুলে মা হারা হলো ৪ শিশু॥ চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা না অবহেলা!

আপডেট: ০৮:৩৪:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

কার ভুলে মা হারা হলো অবুঝ ৪ শিশু। চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসা, নাকি অবহেলা! এ প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে। গত শনিবার

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয় পৌরসভাধীন বলাখাল গ্রামের অন্তঃস্বত্ত্বা ৩০ বছর বয়সি হোসনেয়ারাকে। বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম হোসেনআরার বাচ্চ প্রসবের জন্য চেস্টা করেন। এক পর্যায়ে বিকেল প্রায় ৩টার দিকে একটি পুত্র সন্তান ভূমিষ্ট হয়। তবে মায়ের অবস্থা কেমন আছে, হোসনেয়ারার ভাই আবদুর রহমান গাজী যতবারই জানতে চেয়েছে, ততবারই শাহনাজ বেগম বলছিলেন মা ভালো আছে।

এক পর্যায়ে নবজাতককে শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখানোর জন্য চাঁদপুর নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিলে পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম হোসনেয়ারাকেও ডাক্তার দেখানোর জন্য চাঁদপুর নেয়ার কথা বলেন।

আবদুর রহমান গাজী বলেন, আমার বোন সুস্থ্য আছে, ডাক্তার আমাদেরকে বারে বারে এমন কথা বললেও। তার অবস্থা ছিলো খুবই খারাপ। আমরা হোসনেয়ারাকে চাঁদপুর নেয়ার পর জরুরী বিভাগের ডাক্তার জানান, প্রথমে যেখানে বাচ্চা প্রসব হয়েছে, সেখানেই কোন সমস্যা হয়েছে। দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে যান।

কুমিল্লা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা নিরিক্ষা শেষে জানান, হোসনেআরা মারা গিয়েছে।

তিনি বলেন, আমার বোনের ৩ মেয়ের পর এক ছেলে হয়েছে। শাহনাজ বেগমের চিকিৎসা অবহেলা আর ভুল চিকিৎসা দেয়ার কারণে আমার বোনের মৃত্যু হয়েছে। আমরা তার বিচার চাই।

 

হোসনেআরা’র স্বামী আবুল হাসেম জানান, বারে বারে বলার পরেও ডাক্তার বলেছে আমার স্ত্রী ভালো আছে। কোন সমস্যা নেই। তার পরেও কেন মারা গেলো। আমি এখন ৪ অবুঝ শিশু নিয়ে কোথায় যাবো। আমি এই ডাক্তারের বিচার চাই।

হোসনেআরা’র মা পারুল বেগম বলেন, আমার ৫ ছেলে, ১ মেয়ে। অনেক আদর করে মেয়েকে লালন-পালন করেছি। ডাক্তার আমার মেয়েকে মেরে ফেলছি। এখন আমি এই এতিম ৪ অবুঝ শিশুকে নিয়ে কোথায় যাবো। আমি ডাক্তারের বিচার চাই। আমি ডাক্তারকে বলেছি, মেয়েকে হাজীগঞ্জে নিয়ে যাই। ডাক্তার বলছে কোন সমস্যা নাই। এখন আমার মেয়ে কেন মারা গেলো।

হোসেনআরা’র শাশুড়ী বলেন, আমার ছেলের বৌর সব ঠিক ছিলো। ডাক্তার অনেকগুলো ইনজেকশান দিয়েছে। সে হোসনেআরারে মাইরা লাইছে।

 

হোসনেআরা’র মৃত্যু প্রসঙ্গে বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম, সব কিছুই ঠিক ছিলো। বাচ্চা প্রসব হওয়ার পর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ শুরু হলে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে রেফার করি।

 

রোগীর পরিবার অর্ধশত ফোন করেছে, কেন ফোন রিসিভ করেননি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ঘুমে ছিলাম।

এ বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব হাজীগঞ্জ) মো. মফিজুর রহমান জানান, বাকিলা মডেল ইউনিয়ন ও স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা শাহনাজ বেগম বিষয়টি রবিবার আমাকে জানিয়েছে। তিনি বলেন, আমদের প্রসব পরবর্তী যে চিকিৎসা দেয়ার নিয়ম। তা তিনি করেছেন। তবে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বিষয়টি টেকেল দিতে পারেনি। এমন কেইস খুব কমই হয়।

তিনি বলেন, বিষয়টি আমি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ডিডিকে জানিয়েছে।