যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের একটি বহুদলীয় গ্রুপ সংসদে বাংলাদেশ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এটি কোন দেশের সংসদীয় গ্রুপে সবচেয়ে বড় পদক্ষেপ। এ দিকে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলছে ভারতীয় সংসদ। আজ ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সংসদের বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের নির্যাতন নিয়ে বিবৃতি দিতে পারেন বলে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের সংসদ সদস্যদের একটি বহুদলীয় গ্রুপ সংসদে বলেছে, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আশার সঞ্চার হলেও, সেখানে ইসলামি উগ্রবাদীদের উত্থান হচ্ছে এবং বর্তমান সরকার প্রতিশোধ নিতে বিচার ব্যবস্থাকে ব্যবহার করছে।গতকাল সোমবার প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের সংসদ দ্য হাউস অফ কমন্স-এর একটি বহুদলীয় গ্রুপ বাংলাদেশ নিয়ে একটি প্রতিবেদন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে পাঠিয়েছেন, যেখানে তারা কয়েকটি “উদ্বেগজনক উপসংহার” টেনেছেন।
এই উপসংহারগুলোর অন্যতম হচ্ছে, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে ইসলামি উগ্রবাদীরা লাভবান হচ্ছে। পত্রিকাটির খবরে বলা হয়, বিগত কয়েক মাসে বাংলাদেশে ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের যেভাবে নিশানা করার হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তা নিয়ে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপ (এপিপিজি) ফর দ্য কমনওয়েলথ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘এখানে প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে, উগ্র ইসলামপন্থীরা ক্রমশ রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এবং দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।’
এই সংসদীয় গ্রুপ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশে ২ হাজারের বেশি সহিংসতার ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। সংসদ সদস্যরা আরও হুঁশিয়ারি দেন যে, বর্তমান সরকার প্রতিশোধ নেয়ার জন্য বিচার ব্যবস্থাকে ‘অস্ত্রে পরিণত করেছে।’
প্রতিবেদন উদ্ধৃত করে দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানায়, ‘অস্থিতিশীলতা এবং সহিংসতা সত্ত্বেও, শেখ হাসিনার পতন অনেকের জন্য আনন্দ এবং আশার বানী নিয়ে এসেছিল। কিন্তু আমরা সাক্ষ্য প্রমাণ পেয়েছি যা বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আইনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার সংস্কৃতির অবসান হওয়ার এবং মানবাধিকার আর আইনের শাসন সমুন্নত রাখার জরুরি প্রয়োজন রয়েছে।’
এটা করতে ব্যর্থ হলে তা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবমূর্তির জন্য ভাল হবে না বলেও জানায় তারা।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানায়, বাংলাদশে অস্থিতিশীলতার ঢেউ যুক্তরাজ্যে এসে পড়তে পারে, কারণ ইংল্যান্ড আর ওয়েলস-এ ২০২১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী ৬ লাখ ৪৪ হাজার ৮৮১ বাংলদেশি-বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক আছেন, যা মোট জনসংখ্যার ১ দশমিক ১ শতাংশ।