হাজীগঞ্জ সরকারি মডেল কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে নানান অনিয়ম, দুর্নীতি, শিক্ষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও শিক্ষা ব্যবস্থায় ধ্বংসের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতাকালিন শিক্ষক অধ্যাপক ফাতেমা আক্তার।
(সোমবার) ৪ নভেম্বর কলেজের শিক্ষক মিলনায়তন রুমে সাংবাদিকদের সামনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, হাজীগঞ্জ মডেল সরকারি কলেজ ১৯৯৭ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে ভালো ফলাফল করে আসছে। কলেজটি কুমিল্লা বোর্ডের অন্যতম প্রসিদ্ধ একটি কলেজ হঠাৎ করে গত এইচএসসি ফলাফল কেন হতাশ জনক হলো। এ জন্য তিনি কলেজের অধ্যক্ষকে ৬০ ভাগ দোষী করেন। তিনি ২০২৩ সালে যোগদানের পর ফি নিয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীর নির্বাচনী পরীক্ষা নিয়েছেন। পরীক্ষার হলো মোবাইল দেখে দেখে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দেন। মেয়েদের দিয়ে লম্বা দৌড়ের খেলা চালু করেন। ইচ্ছে মতো শিক্ষার্থীদের নানা সুযোগ দিয়ে অবাদে মেলামেশার সুযোগ তৈরি করেছেন। এতে কলেজের শিক্ষাব্যবস্থা এবং শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়েছে।
সরকার থেকে বাড়ী ভাড়া, চিকিৎসা ভাতাসহ নানা সুযোগ সুবিদা ভোগ করে তিনি কলেজের স্কাউট অফিসে কেন থাকেন। সেখানে নির্জন একটি রুমে অফিসের স্টাফ রূপাকে দিয়ে রাত ১০/১১ টা পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়ার জন্য নিয়োজিত রাখেন। কেন তিনি পুরুষ পিয়ন রাখেন না। হিসাব বিজ্ঞান রাশেদ স্যারকে অতিরিক্ত প্রশ্রয় দিয়েছেন। তার বাসায় ছাত্রী-ছাত্রীরা অবাধে মেলামেশাকরছে এবং কিছু অনৈতিক কাজও হচ্ছে। মারুফ নামে এক শিক্ষক যে কিনা গত এক বছর ধরে কলেজে উপস্থিত নেই তাকে রেগুলার বেতন দিচ্ছে কিভাবে!!!
অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন আমার সাথে এবং মল্লিকা ম্যাডাম, হারুন স্যারসহ সিনিয়র অধ্যাপকদের সাথে বৈষম্য আচরণ শুরু করেন। আমাকে জোরপূর্বক অবসরে পাঠানো হয়েছে। মল্লিকা ম্যাডাম ও আমার বেতন ও ঈদ বোনাস না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেন। সবাই জানে আমরা এ কয়েকজন কলেজটির সুশৃঙ্খল বিষয়ে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখি। তাই তিনি আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করছেন।
কলেজের নাইট গার্ড রফিকের ছেলের নামে ও শাহাদাতের স্ত্রীর নামে কলেজ থেকে কিসের টাকা দেয়া হয়। এটাতো কিছুই জানিনা। ক্লাস টাইমে অনেক শিক্ষক ক্লাসে যাইতে চাইলে তিনি শিক্ষকদের ক্লাসের যেতে বারণ করেন, বলেন ক্লাস না নিলে কি আপনাদের বেতন বন্ধ হয়ে যাবে। এটা কি একজন অধ্যক্ষ বলতে পারেন??? উনি কলেজে যোগদানের পর কলেজের পুরোপুরি শিক্ষা শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। আগে মডেল কলেজ প্রায় শতভাগ শিক্ষার্থীর উপস্থিতি থাকতো বর্তমানে ৩০ ভাগ শিক্ষার্থীও শ্রেণিতে উপস্থিতি থাকেনা।
এ ছাড়াও তিনি কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেনের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে অসৌজ্যমূলক আচরণ, কলেজের অর্থ তছরুপসহ নানান অভিযোগ করেন, যা তদন্তে প্রমাণিত হবে।
বিশেষ করে তাকে কলেজ থেকে অন্যায়ভাবে অবসরে পাঠানো এবং তার ঈদ বোনাস দূর্গা পূজার সাথে একই সাথে দেয়া, শিক্ষার্থীদের জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ অনুষ্ঠানে না পাঠানো এসব বিষয়ে তিনি অভিযোগ করেন।
অধ্যাপক ফাতেমা আকতারের অভিযোগের বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ অসত্য, বানোয়াট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত। আমি যা করেছি, সবই আইনগতভাবে করেছি। কারণ ওনাকে অবসরে আমি পাঠাবারকে? আইনগতভাবে ওনার (ফাতেমা আকতার) অবসরে। এখানে আমার কিছুই করার নেই। তিনি বলেন, আমি আইনের বাহিরে কিছুই করতে পারবোনা। তাহলে আবার আমি জবাব দিহি করতে হবে আর নহে জেল খাটতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাছান মাহমুদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকর আরিফসহ প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মীবৃন্দ, কলেজের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।