হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ইচ্ছেমতো চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক

বন্ধ পড়ে আছে সাদ্রা কমিউনিটি ক্লিনিক। ছবিটি ৬ অক্টোবর সকাল ১১:৩০ তোলা

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কূল ইউনিয়নের সাদ্রা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকটি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনার শিকার। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো সময়ে ক্লিনিক খোলেন এবং কখনো কখনো এক ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ক্লিনিক চালু রাখেন। কখনো আবার তারা আসেনই না, ফলে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অপেক্ষমাণ রোগীদের।

৬ অক্টোবর সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহের ৬ দিন (শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং স্বাস্থ্য সহকারী বা পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিদিন ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবাপ্রদান করার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রমের সঠিক তদারকি না হওয়ায় এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে।

ক্লিনিকের পাশে বসবাসরত হাজী হেলাল উদ্দিন জানান, “স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কখন আসেন আর কখন যান, কেউ বলতে পারে না। তাদের ইচ্ছেমতো ক্লিনিক খোলা হয়—কখনো এক ঘন্টা, কখনো আধা ঘন্টা, আর কখনো পুরোদমে বন্ধ থাকে। জিজ্ঞেস করলে তারা হাজীগঞ্জে কাজ আছে বলে চলে যান।”

আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক জানান, “গত কয়েকদিন ধরে আমি এখানে এসে দেখি ক্লিনিক বন্ধ। স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে মাঝে খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায়। আজও আধা ঘন্টা আগে খোলা ছিল, এখন দেখি বন্ধ।”

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ক্লিনিকের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের নিয়মিত তদারকির কথা থাকলেও সাদ্রার কমিউনিটি ক্লিনিকের ক্ষেত্রে তা অনুপস্থিত বলে মনে হচ্ছে। সিএইচসিপি হিসেবে শারমিন সুলতানা দায়িত্ব পালন করছেন, তবে স্বাস্থ্য সহকারী কে দায়িত্বে রয়েছে তা জানা যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এই অনিয়ম বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

অভিযোগের বিষয়ে সিএইচসিপি শারমিন সুলতানা বলেন, আমি প্রতিদিন আসি। সরকারি ছুটি, আলীগঞ্জে মিটিংয়ের দিন ছাড়া। যে দিন মিটিং থাকে সকল ১১ টায় চলে যাই।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক প্রদীপ কুমার সাহাকে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এই বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম মাওলা নাঈমকেও কল দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সাদ্রা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের এমন অনিয়ম এবং দায়িত্বহীনতার ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিশ্চিত করা।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

সর্বাধিক পঠিত

চট্টগ্রামে কলেজে ছাত্রদলের উপর ছাত্র শিবিরের হামলা

হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের ইচ্ছেমতো চলছে কমিউনিটি ক্লিনিক

আপডেট: ০৯:২৪:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অক্টোবর ২০২৪

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কূল ইউনিয়নের সাদ্রা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকটি স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে চরম অব্যবস্থাপনার শিকার। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ইচ্ছেমতো সময়ে ক্লিনিক খোলেন এবং কখনো কখনো এক ঘন্টা বা তার কম সময়ের জন্য ক্লিনিক চালু রাখেন। কখনো আবার তারা আসেনই না, ফলে সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয় অপেক্ষমাণ রোগীদের।

৬ অক্টোবর সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ক্লিনিকটি তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। অথচ সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, সপ্তাহের ৬ দিন (শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কমিউনিটি ক্লিনিক খোলা থাকার কথা। কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) এবং স্বাস্থ্য সহকারী বা পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিদিন ক্লিনিকে উপস্থিত থেকে সেবাপ্রদান করার কথা থাকলেও বাস্তব চিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ক্লিনিকের সেবা কার্যক্রমের সঠিক তদারকি না হওয়ায় এ সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলছে।

ক্লিনিকের পাশে বসবাসরত হাজী হেলাল উদ্দিন জানান, “স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কখন আসেন আর কখন যান, কেউ বলতে পারে না। তাদের ইচ্ছেমতো ক্লিনিক খোলা হয়—কখনো এক ঘন্টা, কখনো আধা ঘন্টা, আর কখনো পুরোদমে বন্ধ থাকে। জিজ্ঞেস করলে তারা হাজীগঞ্জে কাজ আছে বলে চলে যান।”

আরেকজন স্থানীয় বাসিন্দা এবং হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ফজলুল হক জানান, “গত কয়েকদিন ধরে আমি এখানে এসে দেখি ক্লিনিক বন্ধ। স্থানীয়রা বলছেন, মাঝে মাঝে খুলে আবার বন্ধ হয়ে যায়। আজও আধা ঘন্টা আগে খোলা ছিল, এখন দেখি বন্ধ।”

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, ক্লিনিকের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সেবার মান নিশ্চিত করার জন্য ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শকের নিয়মিত তদারকির কথা থাকলেও সাদ্রার কমিউনিটি ক্লিনিকের ক্ষেত্রে তা অনুপস্থিত বলে মনে হচ্ছে। সিএইচসিপি হিসেবে শারমিন সুলতানা দায়িত্ব পালন করছেন, তবে স্বাস্থ্য সহকারী কে দায়িত্বে রয়েছে তা জানা যায়নি। স্থানীয়দের অভিযোগ, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে এই অনিয়ম বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।

অভিযোগের বিষয়ে সিএইচসিপি শারমিন সুলতানা বলেন, আমি প্রতিদিন আসি। সরকারি ছুটি, আলীগঞ্জে মিটিংয়ের দিন ছাড়া। যে দিন মিটিং থাকে সকল ১১ টায় চলে যাই।

ইউনিয়ন স্বাস্থ্য পরিদর্শক প্রদীপ কুমার সাহাকে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

এই বিষয়ে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য কর্মকর্তা গোলাম মাওলা নাঈমকেও কল দিলে তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

সাদ্রা গ্রামের কমিউনিটি ক্লিনিকের এমন অনিয়ম এবং দায়িত্বহীনতার ফলে স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম নিশ্চিত করা।