অনেকের মনেই প্রশ্ন জাগে ফিলিস্তিনের অধিকৃত পশ্চিম তীরে আধুনিক সমরাস্ত্র সজ্জিত প্রবল প্রতাপশালী ইসরাইলি বাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্লা দিয়ে প্রতিরোধমূলক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে সেখানকার স্বাধীনতাকামী ও সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো। তাদের ক্রমবর্ধমান কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, কোথা থেকে কিভাবে তাদের অস্ত্র সংগ্রহ করছে তারা? বিষয়টি নিয়ে ভাবছে আন্তর্জাতিক মহল। অবরুদ্ধ অঞ্চলে এতো অস্ত্র আসে কোথায় থেকে।
দুই সপ্তাহ আগে যখন ইসরাইলি সামরিক বাহিনী অধিকৃত পশ্চিম তীরে তাদের ব্যাপক সামরিক অভিযান শুরু করে, তখন ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসসহ প্রতিরোধকারী গোষ্ঠীগুলোর সামরিক শাখাগুলো ঘোষণা করে যে, তারা বিস্ফোরক ব্যবহার করে দখলদার বাহিনীর সামরিক যানগুলো ধ্বংস করেছে।
ফিলিস্তিনি বাহিনীর পরিচালিত অভিযানে ইসরাইলি বাহিনী উল্লেখযোগ্য মানবিক ও যুদ্ধ সরঞ্জামগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়। যার মধ্যে তাদের বেশ কিছু সামরিক যানও ধ্বংস হয়।
পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিনিরা অস্ত্র কোথা থেকে পায়?
ইসরাইল অধিকৃত পশ্চিম তীর মূলত দখলদার বাহিনীর কড়া সামরিক ও নিরাপত্তা ব্যবস্থার অধীনে রয়েছে। যেখানে ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর ৭ শতাধিক চেকপয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। এতো চেক পোস্ট ফাঁকি দিয়ে সেখানে অস্ত্র ডোকা অনেকটাই অসম্ভব।
যদিও ফিলিস্তিনি প্রতিরোধকারী গোষ্ঠীগুলো কখনো তাদের অস্ত্র ও সরঞ্জামের উৎস প্রকাশ করে না। তবে ইসরাইলি মিডিয়া, সামরিক সূত্র এবং বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদনের মাধ্যমে কিছু তথ্য পাওয়া যায়।
ফিলিস্তিনি সামরিক বিষয়ক বিশ্লেষক ইউসুফ আল-শারকাভি মনে করেন, ইসরাইলি দখলদারিত্বই পশ্চিম তীরে প্রতিরোধকারী গোষ্ঠীগুলোর অস্তিত্বের মূল কারণ।
তার মতে, পশ্চিম তীরের অস্ত্রের বাজার মূলত উন্মুক্ত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাজারটি সজ্জিত ইসরাইলি সেনাবাহিনীর নিজস্ব অস্ত্র দিয়েই। ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো বিভিন্ন উপায়ে দখলদার বাহিনীর সেসব অস্ত্র সংগ্রহ করে।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি দখলের ৭৬ বছর এবং পশ্চিম তীর দখলের ৫৬ বছর পর, ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীগুলো এমন অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে যে, তারা ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে অস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে। আর এ কারণেই তাদের অস্ত্রের উৎস প্রকাশ করতে হয় না।
বিস্ফোরকের উৎস
এদিকে ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা পশ্চিম তীরে যেসব বিস্ফোরক ব্যবহার করে, সে সম্পর্কেও কিছু তথ্য জানা যায়। ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট করেছে যে, এসব বিস্ফোরক তৈরির কাঁচামাল খোলা বাজারেই পাওয়া যায় এবং তা প্রস্তুত করার পদ্ধতিও ইন্টারনেটে সহজলভ্য।
অস্ত্র সংগ্রহ এবং সামরিক সরঞ্জাম তৈরিতে প্রতিরোধকারী গোষ্ঠীগুলোর দক্ষতা তাদের লড়াইয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করে। যা ইসরাইলি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তাদের প্রতিরোধকে আরও শক্তিশালী করে তুলেছে। সূত্র: মেহের নিউজ এজেন্সি