হাজীগঞ্জে লুটপাটকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পৌর যুবদলের আহবায়ক সেলিমের সংবাদ সম্মেলন

ছবি-নতুনেরকথা।

হাজীগঞ্জে শো-রুম ও গোডাউন থেকে ইলেকট্রনিক্স মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট এবং ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পৌর যুবদলের আহবায়ক মিজানুর রহমান সেলিম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মালিকানাধীন লুটপাট ও ভাংচুরের শিকার শো-রুম ও গোডাউনের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অসযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে গত ৪ আগস্ট হাজীগঞ্জ বাজারে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে। এতে দুই পক্ষের সংর্ঘষ বেঁধে যায়। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংঘর্ষের শুরুতেই শো-রুমটি বন্ধ করে দেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ।

এরপর সংঘর্ষ চলাকালে ওই দিন বিকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শো-রুম এবং দুইটি গোডাউনের তালা, সাটার ও গ্লাস ভেঙ্গে বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক্স মালামাল ও ক্যাশে থাকা নগদ প্রায় ১৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও যেগুলো বহনযোগ্য নয় অর্থ্যাৎ ভারী মালামাল সেগুলো ভাংচুর করে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে। এতে আমার দেড় কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। বর্তমানে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।

মিজানুর রহমান সেলিম বলেন, গত ৩০ বছরের মধ্যে হাজীগঞ্জে কোনো লুটপাট ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মাধ্যমে মানুষ হত্যার নজির নেই। অথচ ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জ বাজারে লুটপাট ও মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের সিনিয়র ও দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করে প্রায় এক কোটি ৫৬ লাখ টাকার ক্ষতি করে।

তিনি বলেন, একই দিন আমার এলাকার ছাত্রনেতা হিমেলের বাবা আজাদ সরকাকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ প্রমাণাদি রয়েছে। যা সবার চোখের সামনে হয়েছে। তাই, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ ও জোর দাবি জানাচ্ছি, তদন্তপূর্বক এসব ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে খুঁজে বের করে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন। যাতে করে এমন ঘটনা হাজীগঞ্জে দ্বিতীয়বার না ঘটে।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, দুইটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। অথচ পুলিশ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমি নিঃস্ব হয়েছি এবং ব্যাংক ঋণ ও ধার-দেনার টাকা নিয়ে বিপাকে আছি। অপর দিকে হিমেলের পরিবার তাদের অভিভাবক ও উপার্জনারীকে হারিয়ে কস্টে দিনাতিপাত করছে। তাই, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন।

হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও কবির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেন পাটোয়ারী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব শাহিন মজুমদার, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানাসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য সদস্য ও সংবাদকর্মী এবং বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং নামীয় আসামিদের পিতা-মাতা ও গ্রামসহ পরিচয় নিশ্চিতকরণে আমরা কাজ করছি। এছাড়াও যাদের নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করা হয়েছে, তাদেরকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

মতলব উত্তর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক এমএ কুদ্দুস’সহ ২০৬ জনকে আসামী করে মামলা

হাজীগঞ্জে লুটপাটকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে পৌর যুবদলের আহবায়ক সেলিমের সংবাদ সম্মেলন

আপডেট: ১১:৩১:৪১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

হাজীগঞ্জে শো-রুম ও গোডাউন থেকে ইলেকট্রনিক্স মালামাল ও নগদ টাকা লুটপাট এবং ভাংচুরের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্ত পৌর যুবদলের আহবায়ক মিজানুর রহমান সেলিম। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় তাঁর মালিকানাধীন লুটপাট ও ভাংচুরের শিকার শো-রুম ও গোডাউনের সামনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি জানান।

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অসযোগ আন্দোলনের প্রথম দিনে গত ৪ আগস্ট হাজীগঞ্জ বাজারে মিছিল ও সড়ক অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধ করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা ধাওয়া করে। এতে দুই পক্ষের সংর্ঘষ বেঁধে যায়। যার ফলে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে সংঘর্ষের শুরুতেই শো-রুমটি বন্ধ করে দেন, আমার প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার ফিরোজ আহমেদ।

এরপর সংঘর্ষ চলাকালে ওই দিন বিকালে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শো-রুম এবং দুইটি গোডাউনের তালা, সাটার ও গ্লাস ভেঙ্গে বহনযোগ্য ইলেকট্রনিক্স মালামাল ও ক্যাশে থাকা নগদ প্রায় ১৩ লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এছাড়াও যেগুলো বহনযোগ্য নয় অর্থ্যাৎ ভারী মালামাল সেগুলো ভাংচুর করে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে। এতে আমার দেড় কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। বর্তমানে আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি।

মিজানুর রহমান সেলিম বলেন, গত ৩০ বছরের মধ্যে হাজীগঞ্জে কোনো লুটপাট ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের মাধ্যমে মানুষ হত্যার নজির নেই। অথচ ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হাজীগঞ্জ বাজারে লুটপাট ও মানুষ হত্যার ঘটনা ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ। দলের সিনিয়র ও দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটিতে হামলা, লুটপাট ও ভাংচুর করে প্রায় এক কোটি ৫৬ লাখ টাকার ক্ষতি করে।

তিনি বলেন, একই দিন আমার এলাকার ছাত্রনেতা হিমেলের বাবা আজাদ সরকাকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। এসব ঘটনার প্রত্যক্ষ প্রমাণাদি রয়েছে। যা সবার চোখের সামনে হয়েছে। তাই, আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ ও জোর দাবি জানাচ্ছি, তদন্তপূর্বক এসব ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদেরকে খুঁজে বের করে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন। যাতে করে এমন ঘটনা হাজীগঞ্জে দ্বিতীয়বার না ঘটে।

পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, দুইটি ঘটনায় মামলা হয়েছে। অথচ পুলিশ এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। আমি নিঃস্ব হয়েছি এবং ব্যাংক ঋণ ও ধার-দেনার টাকা নিয়ে বিপাকে আছি। অপর দিকে হিমেলের পরিবার তাদের অভিভাবক ও উপার্জনারীকে হারিয়ে কস্টে দিনাতিপাত করছে। তাই, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি অনুরোধ, আপনারা তদন্ত করে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন।

হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি হাছান মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে হাজীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন ও কবির আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আরিফ, পৌর যুবদলের সদস্য সচিব বিল্লাল হোসেন পাটোয়ারী, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সদস্য সচিব শাহিন মজুমদার, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সোহেল রানাসহ প্রেসক্লাবের অন্যান্য সদস্য ও সংবাদকর্মী এবং বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিক দল ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের অন্যান্য নেতবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ দিকে আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ বলেন, মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে এবং নামীয় আসামিদের পিতা-মাতা ও গ্রামসহ পরিচয় নিশ্চিতকরণে আমরা কাজ করছি। এছাড়াও যাদের নাম-ঠিকানা নিশ্চিত করা হয়েছে, তাদেরকে গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত আছে।