ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের শঙ্কা, বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

  • আপডেট: ০২:২৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪
  • ৫১

ছবি-সংগৃহিত।

ইসরায়েল অধিকৃত গোলান উপত্যকায় হামলার জেরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আজ বেড়েছে। ফলে গত সপ্তাহে দাম যতটা কমেছিল, আজ দাম বাড়ার কারণে তেল উৎপাদনকারীদের সেই ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে গেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার জেরে আজ সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৮১ দশমিক ৩৩ ডলারে উঠেছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দামও ৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৭৭ দশমিক ২৫ ডলারে উঠেছে।

গোলান উপত্যকায় শনিবার রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছে, যদিও তারা এর দায় স্বীকার করেনি।

গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছিল। তখন মূলত গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ও চীনে তেলের চাহিদা হ্রাসের কারণে দাম কমেছিল বলে সংবাদে বলা হয়েছে।

গতকাল রোববার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে গোলান উপত্যকায় হামলার জবাব দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। সরকার যখন ও যেভাবে যথাযথ মনে করবে, সেভাবেই হামলার জবাব দেবে। এই হামলায় ১২ জন কিশোর ও শিশু মারা গেছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর এটাই এখন পর্যন্ত ইসরায়েল বা ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। অক্টোবরের হামলার জেরে ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে; শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধ বিভিন্ন ফ্রন্টে ছড়িয়ে পড়ছে; সেই সঙ্গে আঞ্চলিক পর্যায়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও ছিল।

ইসরায়েল প্রতিশোধ নেওয়ার পণ করেছে। তাদের জেট বিমানগুলো লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আশা গতি পাচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েল পরিবর্তন আনতে চায় এবং সেই সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তি চায়। এই পরিস্থিতিতে ৯ মাসব্যাপী চলমান এই যুদ্ধে বিরতির বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই আশঙ্কা ছিল তেলের দাম আবার শতকের ঘরে উঠে যাবে। কিন্তু চীন ও সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে তেমন চাহিদা না থাকার কারণে তেলের দাম শেষ পর্যন্ত তেমন একটা বাড়েনি।

তেলের দাম তেমন একটা না বাড়ার কারণ হিসেবে চীনের চাহিদা কমে যাওয়ার বিষয়টি ছিল মূল অনুঘটক। চীনের সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, বছরের প্রথম ভাগে চীনের জ্বালানি তেল আমদানি ১১ শতাংশ কমেছে। বছরের বাকি সময় চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা আছে। এই পরিস্থিতিতে তেলের দাম খুব একটা বাড়বে না বলেই ধারণা।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ব্যাহত হয় তেল সরবরাহ ও উৎপাদন। এর জেরে সে বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম সর্বোচ্চ ১৩৯ মার্কিন ডলারে উঠে যায়।

এর পর থেকে অবশ্য জ্বালানি তেলের দাম কমছে। ২০২৩ সালে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ ৯৮ ডলারে উঠেছিল; তবে তেলের গড় দাম ছিল ৮৩ ডলার। তবে এখন তেলের দাম গত বছরের গড় দামের চেয়ে নিচে নেমে গেছে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

একশ শয্যায় উন্নীত হচ্ছে হাজীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, বাড়বে চিকিৎসা সেবার মান

বৃহৎ পরিসরে চিকিৎসা সেবা দেওয়া সম্ভব হবে : ডা. গোলাম মাওলা নঈম

ইসরায়েল-লেবানন যুদ্ধের শঙ্কা, বিশ্ববাজারে বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

আপডেট: ০২:২৮:২৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

ইসরায়েল অধিকৃত গোলান উপত্যকায় হামলার জেরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম আজ বেড়েছে। ফলে গত সপ্তাহে দাম যতটা কমেছিল, আজ দাম বাড়ার কারণে তেল উৎপাদনকারীদের সেই ক্ষতি অনেকটা পুষিয়ে গেছে।

রয়টার্স জানিয়েছে, হামলার জেরে আজ সোমবার সকালে ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ২০ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৮১ দশমিক ৩৩ ডলারে উঠেছে। ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুড বা ডব্লিউটিআই ক্রুডের দামও ৯ সেন্ট বা শূন্য দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে ৭৭ দশমিক ২৫ ডলারে উঠেছে।

গোলান উপত্যকায় শনিবার রকেট হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, লেবাননের সশস্ত্র বাহিনী হিজবুল্লাহ এই হামলা চালিয়েছে, যদিও তারা এর দায় স্বীকার করেনি।

গত সপ্তাহে ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ এবং ডব্লিউটিআই ক্রুডের দাম ৩ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছিল। তখন মূলত গাজায় যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ও চীনে তেলের চাহিদা হ্রাসের কারণে দাম কমেছিল বলে সংবাদে বলা হয়েছে।

গতকাল রোববার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারকে গোলান উপত্যকায় হামলার জবাব দেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছে। সরকার যখন ও যেভাবে যথাযথ মনে করবে, সেভাবেই হামলার জবাব দেবে। এই হামলায় ১২ জন কিশোর ও শিশু মারা গেছে।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের ইসরায়েলে হামলার পর এটাই এখন পর্যন্ত ইসরায়েল বা ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলে সবচেয়ে মারাত্মক হামলা। অক্টোবরের হামলার জেরে ইসরায়েল গাজায় হামলা শুরু করে; শুরু হয় যুদ্ধ। যুদ্ধ বিভিন্ন ফ্রন্টে ছড়িয়ে পড়ছে; সেই সঙ্গে আঞ্চলিক পর্যায়ে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও ছিল।

ইসরায়েল প্রতিশোধ নেওয়ার পণ করেছে। তাদের জেট বিমানগুলো লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালাচ্ছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরেই গাজায় যুদ্ধবিরতির আশা গতি পাচ্ছে। কিন্তু যুদ্ধবিরতির শর্তে ইসরায়েল পরিবর্তন আনতে চায় এবং সেই সঙ্গে হামাসের হাতে বন্দী জিম্মিদের মুক্তি চায়। এই পরিস্থিতিতে ৯ মাসব্যাপী চলমান এই যুদ্ধে বিরতির বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, গত অক্টোবরে ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর থেকেই আশঙ্কা ছিল তেলের দাম আবার শতকের ঘরে উঠে যাবে। কিন্তু চীন ও সামগ্রিকভাবে বিশ্ব অর্থনীতিতে তেমন চাহিদা না থাকার কারণে তেলের দাম শেষ পর্যন্ত তেমন একটা বাড়েনি।

তেলের দাম তেমন একটা না বাড়ার কারণ হিসেবে চীনের চাহিদা কমে যাওয়ার বিষয়টি ছিল মূল অনুঘটক। চীনের সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, বছরের প্রথম ভাগে চীনের জ্বালানি তেল আমদানি ১১ শতাংশ কমেছে। বছরের বাকি সময় চাহিদা কতটা বাড়বে, তা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই শঙ্কা আছে। এই পরিস্থিতিতে তেলের দাম খুব একটা বাড়বে না বলেই ধারণা।

২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে পশ্চিমারা রাশিয়ার তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। ব্যাহত হয় তেল সরবরাহ ও উৎপাদন। এর জেরে সে বছর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ব্যারেলপ্রতি দাম সর্বোচ্চ ১৩৯ মার্কিন ডলারে উঠে যায়।

এর পর থেকে অবশ্য জ্বালানি তেলের দাম কমছে। ২০২৩ সালে ব্যারেলপ্রতি অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম সর্বোচ্চ ৯৮ ডলারে উঠেছিল; তবে তেলের গড় দাম ছিল ৮৩ ডলার। তবে এখন তেলের দাম গত বছরের গড় দামের চেয়ে নিচে নেমে গেছে।