বাংলাদেশের উপর ভিসা (Visa) নিষেধাজ্ঞা বলবৎ করা নিয়ে পদক্ষেপ শুরু করেছে আমেরিকা। শুক্রবার এই নিয়ে ঘোষণা করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এমন সময়ে ঘোষণাটি করা হল যখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই রাষ্ট্রসঙ্ঘের অধিবেশনে যোগ দিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। এবার সেই মার্কিন মুলুকে বসেই সাংবাদিক সম্মেলন করে পাল্টা নিষেধাজ্ঞার হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি (PM Sheikh Hasina)। বাংলাদেশের নাগরিকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা-নীতি নিয়ে ভয় পাওয়া কিংবা ঘাবড়ানোর কিছু নেই।”
বাংলাদেশের সময় মোতাবেক, শনিবার সকালে নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশের রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থায়ী মিশনে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলন থেকেই ভিসা-নীতি নিয়ে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আওয়ামী লিগও চায়। তবে কোনও ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দেশ যদি বাংলাদেশের বাইরে থেকে নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করে, সেক্ষেত্রে ওই দেশের ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উপর নিষেধাজ্ঞা চাপাবে আওয়ামী লিগ সরকার।” যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি মার্কিন প্রশাসনকে তোপ দেগে বলেন, বাইডেন প্রশাসন যদি শুধু আওয়ামী লিগকে টার্গেট করে থাকে তাহলে আমার কিছু বলার নেই। তবে মনে রাখতে হবে, আওয়ামী লিগ অন্য কারও শক্তিতে নয়, বরং দেশের জনগণের শক্তিতে ক্ষমতায় এসেছে। তাই তার কাছে দেশের জনগণের স্বার্থই সবার আগে দেখা হবে।”
এদিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রতি প্রশ্ন ছুড়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, “যারা ভোটের স্বচ্ছতা নিয়ে কথা বলছে, সামরিক শাসকদের আমলে বাংলাদেশের নির্বাচনের সময় তারা কোথায় ছিল?” তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ক্ষমতায় আসতে হলে নির্বাচনই একমাত্র পথ। গোলমাল করে অবৈধভাবে আসতে চাইলে শাস্তি ভোগ করতে হবে সবাইকেই। সে দেশের হোক বা দেশের বাইরের কেউ হোক। তাঁর সরকার জঙ্গিদের প্রশ্রয় দেয় না জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, “বিএনপি-জামায়াত আমলের মতো দুর্নীতি আর জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না আওয়ামী লিগ সরকার।” যদিও যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞায় বিরোধীদলের কথাও বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, শুক্রবার, ২২ সেপ্টেম্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার এক বিবৃতিতে জানান, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়া যারা বাধাগ্রস্ত করবে তাদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ গ্রহণ করতে শুরু করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এর মধ্যে রয়েছে- আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য। বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তা অব্যাহত রাখতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
এরআগে ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর বাংলাদেশের ব়্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন বা ব়্যাব এবং বর্তমান ও প্রাক্তন বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার উপর ভিসা-নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠাতে অনেক তদ্বির করেও সফল হয়নি বাংলাদেশ সরকার। এখনও সেই নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। এর উপর আবার নতুন ভিসা-নীতি চালু করছে যুক্তরাষ্ট্র।