ফেসবুকে স্থানীয়দের ক্ষোভ: হাজীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ভুঁইয়া একাডেমির শহীদ মিনার এখন ময়লার ভাগাড়

  • আপডেট: ১০:৩১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩
  • ৩৫

হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ভুঁইয়া একাডেমিতে এভাবেই শহীদ মিনারের পাদদেশ ও শহীদ মিনারের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। ছবিটি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লোটাস দেলোয়ারের ফেসবুক থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। -ইল্শেপাড় কেন অবহেলিত শহীদ মিনারটি! এ দায় নিবে কে।

২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস। বাংলাদেশের জাতীয় এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীসংঘসহ সারা বিশ্বে এই দিনটি পালন করা হলেও অযতœ ও অবহেলায় পড়ে আছে হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ভুঁইয়া একাডেমির (উচ্চ বিদ্যালয়) শহীদ মিনারটি।

বিদ্যালয়ের মাঠে থাকা ভাষা শহীদদের জন্য নির্মিত শহীদ মিনারের পাদদেশ ও শহীদ মিনারের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। এতে চরমভাবে শহীদ মিনারের অবমর্যাদা হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ কারোই নজরে আসে নি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লোটাস দেলোয়ার চারটি ছবি দিয়ে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। গত শনিবার তিনি তাঁর পোস্টে লিখেন (হুবহু), ‘একটি অবহেলিত শহীদ মিনারের গল্প। চিত্রটি রামচন্দ্রপুর ভূঁঞা একাডেমি হাই স্কুলের। ময়লার ডাস্টবিনের রুপ নিল একটি পবিত্র শহীদ মিনার!!’

‘শুধুই কি ২১ শে ফেব্রæয়ারী আসলেই শহীদ মিনারের কদর বেড়ে যায়? মানুষ গড়ার কারিগর মহোদয় গন প্রতিনিয়ত শহীদ মিনারের সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছেন প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে। অথচ, তাদের কাছে শহীদ মিনারটি অবহেলিত। তাই নয় কি………??

জিএম আব্দুর রহমান নামের আরো একজন একটি ছবি পোস্ট দিয়ে তাঁর ফেসবুকে লিখেন (হুবহু), ‘কেন অবহেলিত শহীদ মিনারটি! এ দায় নিবে কে।

‘ভাষা আন্দোলন দিবস (যা রাষ্ট্রভাষা দিবস বা জাতীয় শহীদ দিবস নামেও পরিচিত) বাংলাদেশে পালিত একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫২ সালে তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার ল্েয যারা শহীদ হয় তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য এই জাতীয দিবসটি পালন করা হয়।’

‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, এঁদের একযোগে ‘ভাষা শহীদ’ হিসেবে মনোনীত করেছিলেন অসংখ্য শ্রোতা। বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রæয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত ভাষা শহীদদের অবদান কতটুকু সেটা হয়ত আজ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ভূইয়া একাডেমির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দিকে তাকালে বুঝা যায় ভাষা শহীদদের কোন অবদানই নেই। এ জন্যই হয়তো এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি আজ অবহেলিত! এ দায় নিবে কে?

একদিনের জন্য ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি উল্লেখ করে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও

আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই সরকার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার স্থাপনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। এখন যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরাসহ নতুন প্রজন্ম কি শিখবে?

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না-রিজভী

ফেসবুকে স্থানীয়দের ক্ষোভ: হাজীগঞ্জের রামচন্দ্রপুর ভুঁইয়া একাডেমির শহীদ মিনার এখন ময়লার ভাগাড়

আপডেট: ১০:৩১:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৩

২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস। বাংলাদেশের জাতীয় এ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতীসংঘসহ সারা বিশ্বে এই দিনটি পালন করা হলেও অযতœ ও অবহেলায় পড়ে আছে হাজীগঞ্জের বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ভুঁইয়া একাডেমির (উচ্চ বিদ্যালয়) শহীদ মিনারটি।

বিদ্যালয়ের মাঠে থাকা ভাষা শহীদদের জন্য নির্মিত শহীদ মিনারের পাদদেশ ও শহীদ মিনারের পাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করা হয়েছে। এতে চরমভাবে শহীদ মিনারের অবমর্যাদা হলেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ সহকারি শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ কারোই নজরে আসে নি।

এদিকে বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি লোটাস দেলোয়ার চারটি ছবি দিয়ে তাঁর ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। গত শনিবার তিনি তাঁর পোস্টে লিখেন (হুবহু), ‘একটি অবহেলিত শহীদ মিনারের গল্প। চিত্রটি রামচন্দ্রপুর ভূঁঞা একাডেমি হাই স্কুলের। ময়লার ডাস্টবিনের রুপ নিল একটি পবিত্র শহীদ মিনার!!’

‘শুধুই কি ২১ শে ফেব্রæয়ারী আসলেই শহীদ মিনারের কদর বেড়ে যায়? মানুষ গড়ার কারিগর মহোদয় গন প্রতিনিয়ত শহীদ মিনারের সম্মুখ দিয়ে যাচ্ছেন প্রজন্মকে শিক্ষা দিতে। অথচ, তাদের কাছে শহীদ মিনারটি অবহেলিত। তাই নয় কি………??

জিএম আব্দুর রহমান নামের আরো একজন একটি ছবি পোস্ট দিয়ে তাঁর ফেসবুকে লিখেন (হুবহু), ‘কেন অবহেলিত শহীদ মিনারটি! এ দায় নিবে কে।

‘ভাষা আন্দোলন দিবস (যা রাষ্ট্রভাষা দিবস বা জাতীয় শহীদ দিবস নামেও পরিচিত) বাংলাদেশে পালিত একটি জাতীয় দিবস। ১৯৫২ সালে তদানীন্তন পূর্ব বাংলায় আন্দোলনের মাধ্যমে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার ল্েয যারা শহীদ হয় তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য এই জাতীয দিবসটি পালন করা হয়।’

‘১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর, এঁদের একযোগে ‘ভাষা শহীদ’ হিসেবে মনোনীত করেছিলেন অসংখ্য শ্রোতা। বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রæয়ারি পুলিশের গুলিতে নিহত ভাষা শহীদদের অবদান কতটুকু সেটা হয়ত আজ পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশের নাম দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু হাজীগঞ্জ উপজেলার ৭নং বড়কুল পশ্চিম ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর ভূইয়া একাডেমির কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটির দিকে তাকালে বুঝা যায় ভাষা শহীদদের কোন অবদানই নেই। এ জন্যই হয়তো এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি আজ অবহেলিত! এ দায় নিবে কে?

একদিনের জন্য ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়নি উল্লেখ করে একজন মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ভাষা শহীদদের স্মৃতি ও

আত্মত্যাগের সঠিক ইতিহাস প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতেই সরকার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শহীদ মিনার স্থাপনের প্রতি গুরুত্ব দিয়েছে। এখন যদি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শহীদ মিনার ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরাসহ নতুন প্রজন্ম কি শিখবে?