গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার আক্রমণের মাধ্যমে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আর কিছু দিন পরই যুদ্ধের এক বছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। দীর্ঘ এই সময়ে ইউক্রেনীয়দের নেতৃত্ব দিয়ে বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছেন জেলেনস্কি।
এরই মধ্যে এবার নিজ ঘরেই যুদ্ধে জড়ালেন তিনি। যুদ্ধটা তার প্রশাসনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। আর এই লড়াইয়ের শুরু গত সপ্তাহে ইউক্রেনের সংবাদমাধ্যম ‘জেডএন ডট ইউএ’র একটি প্রতিবেদন প্রকাশের মধ্য দিয়ে।
সংবাদমাধ্যমটি তাদের প্রতিবেদনে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও লুটপাটের চিত্র তুলে ধরে। বলা হয়, কিয়েভের বাজারে খাদ্যপণ্যের যে দাম, তার চেয়ে তিনগুণ বেশি দাম দিয়ে খাবার কেনা হচ্ছে সামরিক বাহিনীর জন্য।
ওই প্রতিবেদনের শিরোনামটি ছিল— ‘প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পেছনের সারির ইঁদুরগুলো এখন সামরিক বাহিনী থেকে আরও খাবার চুরি করছে’। শিরোনামে, এমনকি প্রতিবেদনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওপর দুর্নীতির দায় চাপানো হলেও, নিজেদের পক্ষে সাফাই গেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওলেকসি রেজনিকভ। তার ভাষ্যমতে, যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মুখসারির সেনাদের কাছে খাদ্য সরবরাহে নানা বাধাবিপত্তির কারণেই দামে এই বাড়াবাড়ি।
ইউক্রেনের গণমাধ্যমে আরও একটি গুঞ্জন ছড়িয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহালসহ আরও তিন মন্ত্রী পদচ্যুত হওয়ার চিঠি পেতে পারেন।
যাই হোক না কেন, দুর্নীতির দায় সরাসরি এড়িয়ে গিয়ে নিজের পদ এখনো ধরে রেখেছেন রেজনিকভ। তবে গত রোববার থেকে ইউক্রেন সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে চাকরিচ্যুত হওয়া ও পদত্যাগের যেন হিড়িক পড়েছে। এই কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রতিরক্ষা উপমন্ত্রীসহ আরও তিনজন উপমন্ত্রী, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের উপপ্রধান, পাঁচজন গভর্নর, পাঁচজন সরকারি কৌঁসুলি এবং সরকারের দুটি সংস্থার প্রধান।
ইউক্রেনের দুর্নীতি দমন কর্তৃপক্ষ ও বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের তথ্য অনুযায়ী, এই কর্মকর্তাদের ছয়জন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।
এসব থেকে এটিই পরিষ্কার যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি।
গত রোববার টেলিভিশনে দেওয়া বক্তব্যে এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেন, আমি এটা খোলাখুলিভাবে বলতে চাই— এতদিন যা হয়েছে, তা আর এখন হবে না।