• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ১৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ৯ জুন, ২০২২
সর্বশেষ আপডেট : ৯ জুন, ২০২২

মহানবীকে নিয়ে কটুক্তি: অবশেষে দিল্লি পুলিশ দুটি মামলা

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

ইসলাম ধর্মের নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে ভারতের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতাদের বিতর্কিত মন্তব্যের দুই সপ্তাহ পর মামলে (এফআইআর) দায়ের করেছে দিল্লি পুলিশ।

মামলায় ধর্মীয় অবমাননা, ঘৃণা ছড়ানো বার্তা, বিভিন্ন গোষ্ঠীকে উসকানি দেওয়া এবং সমাজের শান্তি-সম্প্রীতি বিনষ্টকারী পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগ আনা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ জুন) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিজেপির মুখপাত্র, একজন সাংবাদিক, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারী এবং বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠনের সদস্যদের নাম উল্লেখ করে এই দুটি এফআইআর (ফার্স্ট ইনফরমেশন রিপোর্ট) নথিভুক্ত করা হয়েছে।

পুলিশের ইন্টেলিজেন্স ফিউশন অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক অপারেশন (আইএফএসও) ইউনিটের দায়ের করা মামলায় বহিষ্কৃত বিজেপির দিল্লির মিডিয়া সেলের প্রধান নাভিন কুমার জিন্দাল, পিস পার্টির প্রধান মুখপাত্র শাদাব চৌহান, সাংবাদিক সাবা নাকভি, হিন্দু মহাসভার পদধারী নেতা পূজা শাকুন পাণ্ডে, রাজস্থানের মাওলানা মুফতি নাদিম, আব্দুর রেহমান, অনিল কুমার মিনা এবং গুলজার আনসারির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে পূজা শকুন পাণ্ডের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও গণহত্যার উসকানি দেওয়ার অভিযোগও আনা হয়েছে।

অন্যদিকে, একই বিভাগের দায়ের করা অপর এফআইআরে বহিষ্কৃত বিজেপির মুখপাত্র নূপুর শর্মাকে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে।

গণমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্মীয় বিদ্বেষপূর্ণ মন্তব্য করার পর আইনি পদক্ষেপ নিতে পুলিশের বিলম্ব নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন। ১৬টিরও বেশি দেশ বিজেপির দুই নেতার মন্তব্যের নিন্দা করার পর মামলা দায়ের হওয়া নিয়ে অনেকের মনেই সন্দেহের জন্ম নেয়।

সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর করা হয়েছে নাকি দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেলের সাইবার ইউনিট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এফআইআর করেছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও পুলিশের দাবি, ধর্ম নিয়ে ঘৃণাত্মক বক্তব্য এবং সহিংসতার প্ররোচনা নিয়ে তারা নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম পর্যবেক্ষণ করে।

পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (আইএফএসও) কেপিএস মালহোত্রা বলেন, “বিভিন্ন ধর্মের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। ইন্টারনেট জগতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মিথ্যা এবং ভুল তথ্য ছড়িয়ে দেশের সামাজিক কাঠামোর এবং অবস্থানের ওপর প্রভাব ফেলা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অ্যাকাউন্টের ভূমিকা নিয়ে পুলিশের এ ইউনিট তদন্ত করবে।”

উল্লেখ্য, ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা গত সপ্তাহে এক টেলিভিশন বিতর্কে মুহাম্মদ (সা.) ও তার স্ত্রী হযরত আয়েশাকে নিয়ে “অবমাননাকর” মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে বিজেপির দিল্লি শাখার গণমাধ্যমপ্রধান নবীন কুমার জিন্দাল মহানবীকে নিয়ে একই ধরনের একটি টুইট করেন। এই টুইটের জেরে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তিনি টুইটটি মুছে দেন। অপরদিকে নূপুর শর্মাও তার বক্তব্য প্রত্যাহার করেন।

বিজেপির এই দুই নেতার মন্তব্যের জেরে গত ৩ জুন জুমার নামাজের পর উত্তর প্রদেশের কানপুরে সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। ভারতে বিজেপির এই নারী মুখপাত্রকে গ্রেপ্তারেরও দাবি ওঠে। পরবর্তীতে বিজেপি জানায়, মহানবীকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে রবিবার নূপুর শর্মা এবং দলের দিল্লি ইউনিটের মিডিয়া প্রধান নাভিন জিন্দালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এদিকে, মহানবীকে নিয়ে দুই বিজেপি নেতার অবমাননাকর মন্তব্যের প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাতে থাকে আরব বিশ্ব। ওমান, কাতার, কুয়েত, ইরান ও সৌদি আরব, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এ বিষয়ে সোচ্চার হয়ে ওঠে। দেশগুলো সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রদূতকে তলব করে প্রতিবাদলিপি হস্তান্তর করে এবং ভারত সরকারকে এ ঘটনায় প্রকাশ্যে নিন্দা প্রস্তাবের আহ্বান জানায়। এছাড়া মহানবীকে নিয়ে অবমাননাকর মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি)।

কাতার, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তান, ইরান এবং আফগানিস্তানের মতো ইসলামিক দেশগুলির নেতারা ভারত সরকারের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানান। এবং ইসলাম বিরোধী মন্তব্যের প্রতিবাদে কূটনীতিকদের তলব করার পরে দেশীয় ক্ষোভ নতুন গতি লাভ করে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • আন্তর্জাতিক এর আরও খবর
error: Content is protected !!