ভারতে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। এ কথা স্বীকার করে নিলেন টিকাকরণ নিয়ে সরকারের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান এন কে অরোরা।
এই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো শীর্ষ পদে থাকা ব্যক্তি প্রকাশ্যে জানালেন দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে গিয়েছে। অরোরার মতে, এই দফায় কোভিড তরঙ্গকে ত্বরান্বিত করেছে করোনাভাইরাসের নয়া ধরন ওমিক্রন।
তিনি জানিয়েছেন, দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতার মতো মহানগরগুলিতে সংক্রমিতের ৭৫ শতাংশ ওমিক্রনে আক্রান্ত।
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সংক্রমণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তার মধ্যে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি দিল্লি এবং গোয়ার।
গত ডিসেম্বরের একেবার প্রথম দিকে ভারতে ওমিক্রনের খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এক মাসের মধ্যে দেশে ১৭০০ জন করোনাভাইরাসের ওই নয়া স্ট্রেনে আক্রান্ত। বিশেষজ্ঞদের একটা বড় অংশ মনে করেন, সরকারি হিসাব যাই বলুক না কেন, দেশে প্রবল ভাবে ছড়িয়েছে ওমিক্রন। সেই কথাই রাখঢাক না করে জানিয়ে দিয়েছেন এন কে অরোরা।
অরোরা বলেন, ‘যে প্রজাতিরই জিনোম সিকোয়ন্সিং করা হয়ে থাকুক না কেন… প্রথম ভাইরাসটা দেখা যায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। প্রথমে দেশব্যাপী স্ট্রেন শনাক্তকরণে দেখা গেল, ১২ শতাংশই ওমিক্রন। সদ্য শেষ হওয়া সপ্তাহে সেটা বেড়ে হল ২৮ শতাংশ। সুতরাং দেশে সার্বিক কোভিড সংক্রমণে ওই নতুন প্রজাতিটিই দ্রুত আধিপত্য বিস্তার করছে। এ-ও বলব যে, দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতার মতো মহানগরগুলিতে, বিশেষ করে দিল্লিতে মোট সংক্রমণের ৭৫ শতাংশের বেশি হল ওমিক্রন।’
ভারতে করোনা সংক্রমণে প্রথম থেকেই আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে মহারাষ্ট্র। ওই রাজ্যে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যাও সবচেয়ে বেশি। সরকারি তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মহারাষ্ট্রে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে ২২ শতাংশ।
গত ২৮ ডিসেম্বর দেশে দৈনিক করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৬ হাজার ৩৫৮। মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে অর্থাৎ আজ আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে গিয়েছে সাড়ে ৩৩ হাজারের উপরে।
গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ১৭৫ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন বলে স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে। দেশে ওমিক্রনে আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে প্রথম স্থানে মহারাষ্ট্র এবং দ্বিতীয় দিল্লি। রাজধানী অঞ্চলে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ৪ হাজার জন সংক্রমিত হয়েছেন।
দিল্লির স্বাস্থ্যমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন জানিয়েছেন, গত ৩০ এবং ৩১ ডিসেম্বর যারা সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের ৮৪ শতাংশই ওমিক্রনে আক্রান্ত।