শনিবার থেকে অনলাইনে এমপিওর আবেদন করতে পারবেন ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী

  • আপডেট: ০১:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০
  • ২৫

ছবি-নতুনেরকথা।

নতুনেরকথা অনলাইন;

আগামীকাল (২ মে) শনিবার থেকে অনলাইনে এমপিওর আবেদন করতে পারবেন ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দীর্ঘ  ১০ বছর বন্ধ ছিল নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। র্সবশেষ ২০১০ সালে এমপিওভূক্ত হয়েছিল কয়েক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আর কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত হয়নি। এই সময়ে একাধিকবার কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষকরা। বেশির ভাগ সংসদ সদস্যও এমপিওভুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন জাতীয় সংসদে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। এরপর গত নভেম্বরে আরো সাতটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। করোনার মধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাপ্রাপ্তির সব পথ উন্মুক্ত হলো।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ছয় মাস ধরে নানা যাচাই-বাছাইয়ের কবলে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এই নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের হাহাকার আরো দীর্ঘ হচ্ছিল। অবশেষে সাধারণ ছুটির মধ্যেও কাজ অব্যাহত রেখে যাচাই-বাছাই শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক হাজার ৬৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। আর গতকাল বৃহস্পতিবার কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ ৯৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড প্রদানে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। এতে ভাগ্য খুলল প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর। এখন শিক্ষক-কর্মচারী হিসেবে তাঁদের এমপিওভুক্তির এবং বেতন-ভাতা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।

আরো পড়ুন; চাঁদপুরে ১৮টি স্কুল-কলেজ এমপিওভূক্ত

মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের মধ্যেই স্কুল-কলেজের এমপিও কোড প্রদান শেষ হবে। যেহেতু এসব কাজ অনলাইনে হয়, তাই শিক্ষক-কর্মচারীরা ঘরে বসেই তাঁদের প্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড জানতে পারবেন। এরপর ২ মে থেকেই তাঁরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করব মে মাসের এমপিও মিটিংয়েই বেশির ভাগ শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করতে। যদিও জুন মাসে এমপিওর সভা নেই, তার পরও প্রয়োজন হলে ওই মাসে বিশেষ মিটিং করে তাঁদের এমপিও প্রদান করা হবে। আমরা চলতি অর্থবছরেই প্যাটার্নভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সবার এমপিও নিশ্চিত করতে চাই।’

চূড়ান্ত অনুমোদিত তালিকার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৩০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯৯১টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৮টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৯২টি এবং ডিগ্রি কলেজ রয়েছে ৫২টি। মোট এক হাজার ৬৩৩টি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্তি চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এতে আগের তালিকায় থাকা ২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে।

আরো পড়ুন; এবার এমপিওভূক্ত হলো কারিগরি ও মাদরাসার ৯৮২ প্রতিষ্ঠান

মাদরাসার দাখিল স্তরে ৩২৪টি, আলিম স্তরে ১১৯টি, ফাজিল স্তরে ৩৪টি, কামিল স্তরে ২২টি এবং কারিগরি পর্যায়ে ডিপ্লোমা ইন অ্যাগ্রিকালচার পর্যায়ে ৬০টি, বিএম (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট) পর্যায়ে ২৬৩টি এবং এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পর্যায়ে ১৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে আগের তালিকায় থাকা ৯৮টি প্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোড প্রদানের আদেশে বলা হয়, এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্ত হবেন। কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাম্য যোগ্যতা বজায় রাখতে না পারলে এমপিও স্থগিত করা হবে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

প্রথম দফায় এমপিওভুক্তির তালিকা ঘোষণার পর বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ না করেও এমপিওভুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম, পাসের হার কম, অবকাঠামো নেইসহ নানা অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দুটি কমিটি গঠন করে। তারা দীর্ঘদিন যাচাই-বাছাই শেষে ১২২টি নাম বাদ দিয়ে তালিকা চূড়ান্ত করল।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

শনিবার থেকে অনলাইনে এমপিওর আবেদন করতে পারবেন ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী

আপডেট: ০১:২৪:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১ মে ২০২০

নতুনেরকথা অনলাইন;

আগামীকাল (২ মে) শনিবার থেকে অনলাইনে এমপিওর আবেদন করতে পারবেন ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারী। দীর্ঘ  ১০ বছর বন্ধ ছিল নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি। র্সবশেষ ২০১০ সালে এমপিওভূক্ত হয়েছিল কয়েক হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে আর কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভূক্ত হয়নি। এই সময়ে একাধিকবার কঠোর আন্দোলনে রাজপথে নেমেছেন শিক্ষকরা। বেশির ভাগ সংসদ সদস্যও এমপিওভুক্তির দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন জাতীয় সংসদে। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন। এরপর গত নভেম্বরে আরো সাতটি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য অন্তর্ভুক্ত করা হয়। করোনার মধ্যেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতাপ্রাপ্তির সব পথ উন্মুক্ত হলো।

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরও ছয় মাস ধরে নানা যাচাই-বাছাইয়ের কবলে পড়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের মধ্যে এই নন-এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের হাহাকার আরো দীর্ঘ হচ্ছিল। অবশেষে সাধারণ ছুটির মধ্যেও কাজ অব্যাহত রেখে যাচাই-বাছাই শেষ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বুধবার মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এক হাজার ৬৩৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড দেওয়ার জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। আর গতকাল বৃহস্পতিবার কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগ ৯৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড প্রদানে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে। এতে ভাগ্য খুলল প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষক-কর্মচারীর। এখন শিক্ষক-কর্মচারী হিসেবে তাঁদের এমপিওভুক্তির এবং বেতন-ভাতা পেতে আর কোনো বাধা থাকল না।

আরো পড়ুন; চাঁদপুরে ১৮টি স্কুল-কলেজ এমপিওভূক্ত

মাউশি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবারের মধ্যেই স্কুল-কলেজের এমপিও কোড প্রদান শেষ হবে। যেহেতু এসব কাজ অনলাইনে হয়, তাই শিক্ষক-কর্মচারীরা ঘরে বসেই তাঁদের প্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড জানতে পারবেন। এরপর ২ মে থেকেই তাঁরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন। আমরা চেষ্টা করব মে মাসের এমপিও মিটিংয়েই বেশির ভাগ শিক্ষক-কর্মচারীকে এমপিওভুক্ত করতে। যদিও জুন মাসে এমপিওর সভা নেই, তার পরও প্রয়োজন হলে ওই মাসে বিশেষ মিটিং করে তাঁদের এমপিও প্রদান করা হবে। আমরা চলতি অর্থবছরেই প্যাটার্নভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সবার এমপিও নিশ্চিত করতে চাই।’

চূড়ান্ত অনুমোদিত তালিকার মধ্যে নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে ৪৩০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৯৯১টি, স্কুল অ্যান্ড কলেজ ৬৮টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ৯২টি এবং ডিগ্রি কলেজ রয়েছে ৫২টি। মোট এক হাজার ৬৩৩টি স্কুল-কলেজের এমপিওভুক্তি চূড়ান্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। এতে আগের তালিকায় থাকা ২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে।

আরো পড়ুন; এবার এমপিওভূক্ত হলো কারিগরি ও মাদরাসার ৯৮২ প্রতিষ্ঠান

মাদরাসার দাখিল স্তরে ৩২৪টি, আলিম স্তরে ১১৯টি, ফাজিল স্তরে ৩৪টি, কামিল স্তরে ২২টি এবং কারিগরি পর্যায়ে ডিপ্লোমা ইন অ্যাগ্রিকালচার পর্যায়ে ৬০টি, বিএম (বিজনেস ম্যানেজমেন্ট) পর্যায়ে ২৬৩টি এবং এসএসসি ভোকেশনাল ও দাখিল ভোকেশনাল পর্যায়ে ১৬০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিও কোড প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে আগের তালিকায় থাকা ৯৮টি প্রতিষ্ঠান বাদ পড়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোড প্রদানের আদেশে বলা হয়, এমপিও নীতিমালা ২০১৮ অনুযায়ী শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্ত হবেন। কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির কাম্য যোগ্যতা বজায় রাখতে না পারলে এমপিও স্থগিত করা হবে। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।

প্রথম দফায় এমপিওভুক্তির তালিকা ঘোষণার পর বেশ কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শর্ত পূরণ না করেও এমপিওভুক্ত হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। বিশেষ করে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম, পাসের হার কম, অবকাঠামো নেইসহ নানা অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া যুদ্ধাপরাধীসহ বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠানও এমপিওভুক্ত হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠানগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দুটি কমিটি গঠন করে। তারা দীর্ঘদিন যাচাই-বাছাই শেষে ১২২টি নাম বাদ দিয়ে তালিকা চূড়ান্ত করল।