চাঁপুরজেলার প্রাণকেন্দ্র হিসাবে খ্যাত হাজীগঞ্জ মূলত পরিচিতি লাভ করেছে হাজীগঞ্জ ঐতিহাসিক বড় মসজিদের জন্য। আর অনেকেই মনে করেন এ হাজীগঞ্জের ইতিহাস, ঐতিহ্য বাংলাদেশের মানুষের কাছে অতি দ্রুত পরিচিতি পেতে সহায়ক হয়েছে এ বড় মসজিদটির কারণে।
যাই হোক বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তমে’র সার্বিক নির্দেশনায় হাজীগঞ্জ উপজেলাটিকে যিনি একটি আদর্শ নান্দনিক প্রসিদ্ধ উপজেলা হিসাবে গড়ে তোলতে দিন রাত নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, তিনি হচ্ছেন একজন বড় মন এবং বড় মানের মানুষ, এ উপজেলার মানুষের অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসার প্রিয় মুখ হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া।
তিনি এ উপজেলায় যোগদান করার পর থেকে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতা নিয়ে যে ভাবে মাদক, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, হাজীগঞ্জ বাজারের যানযট, দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে দল মত বিবেচনা না করে নিজের জীবন বাজী রেখে কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যি প্রশংসা করে শেষ করা যাবে না।
আমি তাঁর একটি বড় কাজের সাফল্য ও বুদ্ধিদীপ্ত গুণের জন্য ধন্যবাদ জানাই । হাজীগঞ্জে গৃহহীন পরিবারে প্রায় তিন শতাধিক নতুন ঘর বিতরণ কার্যক্রম শেষ করতে তিনি এ অঞ্চলের দানবীর লোকদেরকে হাসি মাখা মুখে মিষ্টি হেসে আনÍরিকতা পূর্ণ কথা বলে যে ভাবে মন জয় করে এ কাজে সম্পৃক্ত করেছেন তা অকল্পনীয় ।
আমি মনে করি, এ অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছেন তাঁর মধুর ব্যবহারের জন্যই। তাঁর আরো একটি গুণের কথা না লিখে পারলাম না, গৃহহীনদের মাঝে ঘর বিতরণ কার্যক্রম শেষ হতে না হতেই সে সময়ের মাননীয় জেলা প্রশাসক আব্দুর সবুর মণ্ডল স্যার প্রমোশন জনিত কারণে চাঁদপুর থেকে চলে যাবেন ঠিক এর সাত-আট দিন পূর্বে হঠাৎ আমাদের ভালোবাসার প্রিয় মুখ হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া স্যারকে বলেন , এ উপজেলায় যারা নতুন ঘর পেয়েছে সবার আলাদা করে তাদের অনুভুতি প্রকাশসহ ১০/১২ লাইনের মধ্যে একটি করে গল্প লিখে অতি দ্রুত স্যারের কার্যালয়ে প্রেরণ করতে।
এতো অল্প সময়ে প্রায় ৩’শ নতুন ঘর প্রাপ্ত পরিবারকে নিয়ে তাদের অনুভুতিসহ গল্প রচণা করা মোটেও সম্ভব ছিলনা, সে অসম্ভবকে সম্ভব করতে তিনি বিচলিত না হয়ে সুন্দর একটি পরিকল্পনা হাতে নিলেন এবং এ বিষয়ে গল্প লিখার কাজে আমাকে সম্পৃক্ত করলেন। সে সূত্রে আমি ইউএনও বৈশাখী বড়ুয়া স্যারকে খুব কাছ থেকে দেখেছি। শত ব্যস্ততা ও কঠোর পরিশ্রমের মাঝেও তিনি ক্লান্তিবিহীন হাসি মাখা মুখে ভাই সম্বোধন করে গল্প লেখা কাজের খোঁজ খবর নিয়েছেন ।
যার ফলে আমি ও আমার সহযোগিরা মুগ্ধ হয়ে অতি দ্রুত কাজ করার প্রেরণা পেয়েছি এবং সময়ের মধ্যে কাজটি শেষ করতে সক্ষম হয়েছি। আর এখান থেকে একটি বিষয় মনে জায়গা করে নিয়েছে যে প্রসাশনিক ক্ষমতার শক্তির চেয়ে ভালোবাসা,ভালো আচরণ,ভালো কথার শক্তি অনেক অনেক বেশি।যা আমাদের হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া স্যারের মাঝে রয়েছে বলেই তিনি হাজীগঞ্জের মানুষের প্রিয় হয়ে উঠেছেন।
অতি সম্প্রতি হাজীগঞ্জের মানুষের মুখে মুখে যে বিষয়টি আলোচিত হয়েছে,তা হচ্ছে আমরা হাজীগঞ্জের মানুষ যখন তীব্র শীতে রাতে লেপ,কাথাঁ,কম্বল গা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছি, ঠিক সে সময়ে গভীর রাতে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া স্যার নিজের আরামের ঘুমকে হারাম করে কম্বল নিয়ে দু:খী ও অসহায় শীতার্থ মানুষের পাশে দাঁড়ালেন। যা একজন বড় মন ও বড় মানের মানুষের পক্ষেই সম্ভব।
বিদ্রোহী ও প্রেমের কবি কাজী নজরুলের কবিতার একটি অংশ যেন বৈশাখী বড়ুয়া স্যারের জীবন কে আলোকিত করেছে। কবি বলেছেন, “মম এক হাতে বাঁকা বাঁশের বাঁশরী,আর হাতে রণ তুর্য”। “আমি প্রাণ-খোলা হাসিউল্লাস, আমি সৃষ্টি বৈরী মহাত্রাস,। “আমি উত্তর বায়ু মলয় অনিল উদাস পূরবী হাওয়া, আমি পথিক কবির গভীর রাগিণী, বেণু-বীণে গান গাওয়া।” নজরুলের এ বাণী যেন বৈশাখী বড়ুয়া’কে পরিচালিত করছে।
তিনি যেমন দু:খী ও অসহায় শীতার্থ মানুষের পাশে গভীর রাতে শীত বস্ত্র নিয়ে দাঁড়ালেন, তেমনি মাদক এবং বাল্যবিয়ে বন্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে অপরাধীদের সাজা দিতে একটুও বিচলিত হননি। আবার তিনি একজন সংস্কৃত মনা মানুষ হিসাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে নিজেই সে অনুষ্ঠানে গানগেয়ে একজন শিল্পী হিসাবে দর্শকদের মন জয় করেছেন । এ যেন সত্যিই তিনি নজরুলের আত্মার উত্তর সূরী এক আত্মা।
তাই তিনি অন্যায়কে অন্যায় আর ন্যায়কে ন্যায় এবং সাদাকে সাদা কালোকে কালো হিসাবেই দেখছেন।তার পরও কিছু কিছু সময়ে একজন মানুষের পক্ষে সব কাজ ঠিক- ঠাক ভাবে শেষ করা সম্ভব হয়ে উঠেনা, প্রয়োজন হয় মহৎ প্রাণ কিছু মানুষের সহযোগিতা তাই আমার অনুরোধ হাজীগঞ্জ উপজেলাকে একটি আদর্শ উপজেলা হিসাবে গড়তে দল মতের উর্ধে উঠে সমাজের মহৎ প্রাণ মানুষ গুলো একজন সাহসী মহৎ প্রাণ ইউএনও হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়ার দু’হাতকে শক্তিশালী করতে তাঁর মহতি কাজগুলো শেষ করতে বাধা না দিয়ে তাঁকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে তাঁর পাশে দাঁড়াই।
সম্প্রতি সারা বিশ্বে এক আতঙ্কের নাম করোনা ভাইরাস আর এ আতঙ্কের হাওয়া লেগেছে হাজীগঞ্জ উপজেলাতেও আসুন করোনা বিষয়ে সরকারের নির্দেশনা বাস্তবায়নে হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়াকে সহোযোগিতা করি।
এ ছাড়া আগামী এসএসসি/সমমান পরীক্ষা দেশ ও জাতী গঠনে মেধার কোন বিকল্প নেই। তাই ইউএনও স্যার হাজীগঞ্জ উপজেলাতে পূর্বে যেভাবে নকল মুক্ত পরিবেশে পরীক্ষা পরিচালনা করে উজ¦ল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা অবশ্যই প্রশংসনীয়। তবে মফস্বলের পরীক্ষা কেন্দ্র গুলোর প্রতি আরো কঠোর নজরদারী বাড়াতে হবে তবেই এর সুফল পাওয়া যাবে। আর এ জন্য পরীক্ষ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।
বর্তমান সংসদ সদস্য মেজর (অব.) রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম এমপি মহোদয় সরকারের উন্নয়নের যে মহা পরিকল্পনা রয়েছে তা হাজীগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধীকার দিয়েছেন এ উপজেলাকে এবং আগামী দিনগুলোতে তা অব্যাহত থাকবে বলে বিশ^াস করেন হাজীগঞ্জ উপজেলার সাধারণ মানুষ। পাশাপাশি হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বৈশাখী বড়ুয়া স্যার যে অপূর্ব কুশলী ভূমিকা নিয়ে কাজ করছেন এতে করে সাধারণ মানুষ এর সুফল পাবেনই পাবেন বলে আমি মনে করি।
এসব লিখার একটাই কারণ প্রতিটি উপজেলার ইউএনও যদি বৈশাখী বড়ুয়া স্যারের মতো আন্তরিক হয় ,তাহলে ঐ উপজেলার উন্নয়ন ও সোন্দর্য বৃদ্ধি পাবেই এতে কোন সন্দেহ নেই ।
লেখক
কবি, সাংবাদিক, কলামিস্ট,
প্রধান সম্পাদক, সাপ্তাহিক হাজীগঞ্জ
সভাপতি, হাজীগঞ্জ উপজেলা সাংবাদিক কল্যাণ সমিতি।