বর্ষার মজাদার ফল করমচা পুষ্টিগুণে ভরপুর

  • আপডেট: ০৬:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০১৯
  • ৬৯

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

পুষ্টিগুণে ভরপুর টক স্বাদের এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ। যা পাকলে জমাট রক্তের মতো লাল হয়ে যায়। বিশ্ব কোষ উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে এনার্জি ৬২ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৪ গ্রাম, প্রোটিন শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৪০ আইইউ, ভিটামিন সি ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন শূন্য ১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন শূন্য ২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম ও কপার শূন্য দশমিক ২ মিলিগ্রাম।

এতে আরো বলা হয়েছে, করমচায় ফ্যাট বা কোলেস্টেরল না থাকায় তা ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য খুব ভালো। ওজন কমাতে সাহায্য করা এই ফলটি খাবারে রুচি বৃদ্ধি করে। মৌসুমী সর্দি-জ্বর, স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধ ফলটি অতুলনীয়। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোসহ গায়ের চুলকানি ও ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে জুড়ি নেই করমচার। শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সহায়তা করে করমচা। এছাড়া যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেটের অসুখ নিরাময়, শরীরের ক্লান্তি দূর, বাতরোগ ও ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে করমচা।

এছাড়াও করমচায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ যা চোখের জন্য উপকারী। করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ী উপকারি ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা করমচার রস কৃমিনাশক হিসেবেও খুব ভালো। করমচা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল পর্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরা। এজন্য বাড়িতে ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে করমচা লাগানো যেতে পারে।

বর্ষার ফল করমচা। বৃষ্টি ভেজা করমচা ফল, পাতা ও গাছ দেখতে সত্যিই খুব সুন্দর। আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেব মেপে। লেবুর পাতায় করমচা, ঝড়-বৃষ্টি ঝরে যা। ছোট বেলায় এই ছড়া আমরা অনেকেই পড়েছি। কিন্তু এখনো অনেকেই হয়ত সেই করমচা ফলটাই দেখিনি। যদিও বর্তমান সময়ে ঔষধি এই ফলটি দেশের অনেক এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। এখন দেশের বাজারগুলোতেও বর্ষার এই ফলটি বিক্রি করতে দেখা যায়। সাধারণত বর্ষা মৌসুমেই এ ফল বেশি হয়।

করমচা ফলের গাছ বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গাতেই কমবেশি দেখা যায়। আমাদের বাড়ির আঙ্গিনায় তেমন কোন পরিচর্যা ছাড়াই এই করমচা চাষ করা যায়। ফলনও বেশ ভাল হয়।ঔষধি এই ফলের গাছ রোপন করেছেন নবীনগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন। প্রথমে অনেকটা শখের বসে লাগালেও এখন বুঝতে পারছেন ফলটা অনেক দরকারী। এই ফল প্রায় সারা বছরই তরকারি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে যখন অনেক ফল আসে তখন পাকা করমচার রস দিয়ে জেলি তৈরি করা হয়। যা খেতে অনেক স্বুসাদু। মনোয়ার হোসেন জানান, সব থেকে ভালো লাগে যখন ফল আসে, তখন গ্রামের সব বয়সি মানুষ এই ফল নিতে আসে। বিশেষ করে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এই ফল পেয়ে খুব খুশি হয়।

তিনি আরো জানান, ফলটি বৃষ্টির পরশ পেলেই যেন লালচে হতে শুরু করে। এটি দেখতে অনেকটা কুলের মত। খেতে টক, জিহ্বায় রস আনার মত। তবে এটি পাকলে দেখতে অনেকটা জামের মতো। তখন খেতে কিছুটা মিষ্টি স্বাদ লাগে। পুরো গাছ ভরে থাকে থোকায় থোকায় ফলে এটি। একটি থোকায় ৩ থেকে ৮টির মত ফল হয়। গাছে যখন ফুল আসে দেখতে অনেকটা বকুল ফুলের মত। এই ফুল থেকে ফল হয়। ফলের রং প্রথম দিকে হয় সবুজ অথবা সাদাটে হয়। তারপর ক্রমেই লালচে হতে শুরু করে। সম্পূর্ণ পেকে গেলে এটি গাড় লাল থেকে কাল বর্ণ ধারণ করে। এ সময় ফলটি মুখে দিলে লাল রসে ভরে যায়। খেতেও খুব ভাল লাগে। টক-মিষ্টি স্বাদ। তবে ফলটি পাকার আগে যখন এর বর্ণ সবুজ থাকে তখন এতে কাঁঠালের মত সাদা আঠা জাতীয় পদার্থ থাকে। এসময় খেতে টক লাগে।

বর্তমানে দেশের প্রায় সর্বত্র কৃষি বা বৃক্ষ মেলা হয়। এসব মেলায় বা বিভিন্ন হাটে বাজারে মাত্র ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকার মধ্যে একটি চারা কিনতে পাওয়া যায়। একটু যতœসহকারে রোপন করলেই দু’এক বছরের মধ্যেই গাছে ফল আসে। এমনকি এক বছরের মধ্যেও গাছে ফল আসতে পারে। তথ্যভান্ডার উইকিমিডিয়ার থেকে জানা যায়, করমচায় ভিটামিন সি ও আয়রনে পরিপূর্ণ। করমচা দিয়ে আচার ও জেলি তৈরি করা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে বহুকাল আগে থেকে করমচ ওষুধ হিসাবে হয়ে আসছে। করমচা ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারিসা ক্যারান্ডাস। উদ্ভীদ জগতের এপোসিনেসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। পার্শবর্তীদেশ ভারতে এই করমোচার অতি পরিচিত নাম কারাউন্ডা। করমচা’র ইংরেজি নাম ইবহমধষ পঁৎৎধহঃ বা ঈযৎরংঃ’ং ঃযড়ৎহ. খেতে টক স্বাদের এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আর পাকলে জমাট বাধা রক্তের মতো লাল হয়ে যায়। কাটাযুক্ত গুল্মজাতীয় গাছের এ ফলটির রয়েছে বেশ পুষ্টিগুণ। করমচা গাছে ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল আসে, ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে। আর ফল পাকে বর্ষায়।
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোসহ গায়ের চুলকানি ও ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে জুড়ি নেই করমচার। শরীরের দূষণ বের দূর করতে সহায়তা করে করমচা যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেটের অসুখ নিরাময়, শরীরের ক্লান্তি দূর, বাতরোগ ও ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে করমচা। গাছে ঝুলে রয়েছে করমচা। এছাড়াও করমচাতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ‘এ’ যা চোখের জন্য উপকারী। করমচা গাছের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ী উপকারী ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা করমচার রস কৃমিনাশক হিসেবেও খুব ভালো। করমচার বিষয়ে উদ্ভিদবিদ্যাবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, করমচা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল পর্যন্ত সবই পুষ্টিগুণে ভরা। এজন্য বাড়িতে প্রতিবেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে করমচা লাগানো যেতে পারে।

করমচা কেন খাবেন? কারণ করমচার রয়েছে অনেক উপকারিতা- ১. করমচায় চর্বি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না। ২. ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা মুখে রুচি ফিরিয়ে দেয়। ৩. করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপি-ের সুরক্ষা দেয়। ৪. শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে। ৫. যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা। ৬. মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে। ৭. করমচা কখনো কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। ৮. এ ছাড়া পেটের নানা অসুখের দাওয়াই করমচা। ৯. শরীরের ক্লান্তি দূর করে করমচা শরীরকে চাঙা রাখে। ১০. বাতরোগ কিংবা ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী। ১১. করমচাতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী। ১২. এটি ত্বক ভালো রাখে ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। ১৩. এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

বর্ষার মজাদার ফল করমচা পুষ্টিগুণে ভরপুর

আপডেট: ০৬:২২:৩০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ জুন ২০১৯

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

পুষ্টিগুণে ভরপুর টক স্বাদের এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ। যা পাকলে জমাট রক্তের মতো লাল হয়ে যায়। বিশ্ব কোষ উইকিপিডিয়ায় বলা হয়েছে, প্রতি ১০০ গ্রাম করমচায় রয়েছে এনার্জি ৬২ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ১৪ গ্রাম, প্রোটিন শূন্য দশমিক ৫ গ্রাম, ভিটামিন-এ ৪০ আইইউ, ভিটামিন সি ৩৮ মিলিগ্রাম, রিবোফ্লাভিন শূন্য ১ মিলিগ্রাম, নিয়াসিন শূন্য ২ মিলিগ্রাম, আয়রন ১ দশমিক ৩ মিলিগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ১৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ২৬০ মিলিগ্রাম ও কপার শূন্য দশমিক ২ মিলিগ্রাম।

এতে আরো বলা হয়েছে, করমচায় ফ্যাট বা কোলেস্টেরল না থাকায় তা ডায়াবেটিস ও হার্টের রোগীদের জন্য খুব ভালো। ওজন কমাতে সাহায্য করা এই ফলটি খাবারে রুচি বৃদ্ধি করে। মৌসুমী সর্দি-জ্বর, স্কার্ভি, দাঁত ও মাড়ির নানা রোগ প্রতিরোধ ফলটি অতুলনীয়। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোসহ গায়ের চুলকানি ও ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে জুড়ি নেই করমচার। শরীর থেকে ক্ষতিকর টক্সিন বের করতে সহায়তা করে করমচা। এছাড়া যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেটের অসুখ নিরাময়, শরীরের ক্লান্তি দূর, বাতরোগ ও ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে করমচা।

এছাড়াও করমচায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-এ যা চোখের জন্য উপকারী। করমচা গাছের পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ী উপকারি ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা করমচার রস কৃমিনাশক হিসেবেও খুব ভালো। করমচা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল পর্যন্ত পুষ্টিগুণে ভরা। এজন্য বাড়িতে ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে করমচা লাগানো যেতে পারে।

বর্ষার ফল করমচা। বৃষ্টি ভেজা করমচা ফল, পাতা ও গাছ দেখতে সত্যিই খুব সুন্দর। আয় বৃষ্টি ঝেপে, ধান দেব মেপে। লেবুর পাতায় করমচা, ঝড়-বৃষ্টি ঝরে যা। ছোট বেলায় এই ছড়া আমরা অনেকেই পড়েছি। কিন্তু এখনো অনেকেই হয়ত সেই করমচা ফলটাই দেখিনি। যদিও বর্তমান সময়ে ঔষধি এই ফলটি দেশের অনেক এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছেন। এখন দেশের বাজারগুলোতেও বর্ষার এই ফলটি বিক্রি করতে দেখা যায়। সাধারণত বর্ষা মৌসুমেই এ ফল বেশি হয়।

করমচা ফলের গাছ বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গাতেই কমবেশি দেখা যায়। আমাদের বাড়ির আঙ্গিনায় তেমন কোন পরিচর্যা ছাড়াই এই করমচা চাষ করা যায়। ফলনও বেশ ভাল হয়।ঔষধি এই ফলের গাছ রোপন করেছেন নবীনগর উপজেলার নারায়নপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন। প্রথমে অনেকটা শখের বসে লাগালেও এখন বুঝতে পারছেন ফলটা অনেক দরকারী। এই ফল প্রায় সারা বছরই তরকারি হিসাবে ব্যবহার করা যায়। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে যখন অনেক ফল আসে তখন পাকা করমচার রস দিয়ে জেলি তৈরি করা হয়। যা খেতে অনেক স্বুসাদু। মনোয়ার হোসেন জানান, সব থেকে ভালো লাগে যখন ফল আসে, তখন গ্রামের সব বয়সি মানুষ এই ফল নিতে আসে। বিশেষ করে ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা এই ফল পেয়ে খুব খুশি হয়।

তিনি আরো জানান, ফলটি বৃষ্টির পরশ পেলেই যেন লালচে হতে শুরু করে। এটি দেখতে অনেকটা কুলের মত। খেতে টক, জিহ্বায় রস আনার মত। তবে এটি পাকলে দেখতে অনেকটা জামের মতো। তখন খেতে কিছুটা মিষ্টি স্বাদ লাগে। পুরো গাছ ভরে থাকে থোকায় থোকায় ফলে এটি। একটি থোকায় ৩ থেকে ৮টির মত ফল হয়। গাছে যখন ফুল আসে দেখতে অনেকটা বকুল ফুলের মত। এই ফুল থেকে ফল হয়। ফলের রং প্রথম দিকে হয় সবুজ অথবা সাদাটে হয়। তারপর ক্রমেই লালচে হতে শুরু করে। সম্পূর্ণ পেকে গেলে এটি গাড় লাল থেকে কাল বর্ণ ধারণ করে। এ সময় ফলটি মুখে দিলে লাল রসে ভরে যায়। খেতেও খুব ভাল লাগে। টক-মিষ্টি স্বাদ। তবে ফলটি পাকার আগে যখন এর বর্ণ সবুজ থাকে তখন এতে কাঁঠালের মত সাদা আঠা জাতীয় পদার্থ থাকে। এসময় খেতে টক লাগে।

বর্তমানে দেশের প্রায় সর্বত্র কৃষি বা বৃক্ষ মেলা হয়। এসব মেলায় বা বিভিন্ন হাটে বাজারে মাত্র ১০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকার মধ্যে একটি চারা কিনতে পাওয়া যায়। একটু যতœসহকারে রোপন করলেই দু’এক বছরের মধ্যেই গাছে ফল আসে। এমনকি এক বছরের মধ্যেও গাছে ফল আসতে পারে। তথ্যভান্ডার উইকিমিডিয়ার থেকে জানা যায়, করমচায় ভিটামিন সি ও আয়রনে পরিপূর্ণ। করমচা দিয়ে আচার ও জেলি তৈরি করা যায়। ভারতীয় উপমহাদেশে বহুকাল আগে থেকে করমচ ওষুধ হিসাবে হয়ে আসছে। করমচা ফলের বৈজ্ঞানিক নাম ক্যারিসা ক্যারান্ডাস। উদ্ভীদ জগতের এপোসিনেসিয়া পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। পার্শবর্তীদেশ ভারতে এই করমোচার অতি পরিচিত নাম কারাউন্ডা। করমচা’র ইংরেজি নাম ইবহমধষ পঁৎৎধহঃ বা ঈযৎরংঃ’ং ঃযড়ৎহ. খেতে টক স্বাদের এই ফলটি কাঁচা অবস্থায় সবুজ, আর পাকলে জমাট বাধা রক্তের মতো লাল হয়ে যায়। কাটাযুক্ত গুল্মজাতীয় গাছের এ ফলটির রয়েছে বেশ পুষ্টিগুণ। করমচা গাছে ফেব্রুয়ারি মাসে ফুল আসে, ফল ধরে এপ্রিল-মে মাসে। আর ফল পাকে বর্ষায়।
রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোসহ গায়ের চুলকানি ও ত্বকের নানা রোগ প্রতিরোধে জুড়ি নেই করমচার। শরীরের দূষণ বের দূর করতে সহায়তা করে করমচা যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। পেটের অসুখ নিরাময়, শরীরের ক্লান্তি দূর, বাতরোগ ও ব্যথা নিরাময়ে কাজ করে করমচা। গাছে ঝুলে রয়েছে করমচা। এছাড়াও করমচাতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন ‘এ’ যা চোখের জন্য উপকারী। করমচা গাছের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি পান করলে কালাজ্বর দ্রুত নিরাময় হয়। করমচা গাছের মূলে রয়েছে হৃদরোগ নিরাময়ী উপকারী ক্যারিসোন, বিটাস্টেরল, ট্রাইটারপিন, ক্যারিনডোনা ও লিগনাম। কাঁচা করমচার রস কৃমিনাশক হিসেবেও খুব ভালো। করমচার বিষয়ে উদ্ভিদবিদ্যাবিদ মনিরুল ইসলাম বলেন, করমচা একটি গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর পাতা থেকে শুরু করে ফল পর্যন্ত সবই পুষ্টিগুণে ভরা। এজন্য বাড়িতে প্রতিবেশীয় ভেষজ উদ্ভিদ হিসেবে করমচা লাগানো যেতে পারে।

করমচা কেন খাবেন? কারণ করমচার রয়েছে অনেক উপকারিতা- ১. করমচায় চর্বি এবং ক্ষতিকর কোলেস্টেরল থাকে না। ২. ভিটামিন সি-তে ভরপুর করমচা মুখে রুচি ফিরিয়ে দেয়। ৩. করমচা রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রেখে হৃৎপি-ের সুরক্ষা দেয়। ৪. শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ কমাতেও সাহায্য করে। ৫. যকৃত ও কিডনির রোগ প্রতিরোধে আছে বিশেষ ভূমিকা। ৬. মৌসুমি সর্দি-জ্বর, কাশিতে করমচা খান বেশি করে। ৭. করমচা কখনো কৃমিনাশক হিসেবে ওষুধের বিকল্প হিসেবে কাজ করে। ৮. এ ছাড়া পেটের নানা অসুখের দাওয়াই করমচা। ৯. শরীরের ক্লান্তি দূর করে করমচা শরীরকে চাঙা রাখে। ১০. বাতরোগ কিংবা ব্যথাজনিত জ্বর নিরাময়ে করমচা খুব উপকারী। ১১. করমচাতে থাকা ভিটামিন এ চোখের জন্য খুবই উপকারী। ১২. এটি ত্বক ভালো রাখে ও রোগ প্রতিরোধে কার্যকর। ১৩. এতে থাকা ভিটামিন সি দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষা দেয়।