হাজীগঞ্জে লিখিত স্ট্যাম্প করে প্রেম, বিয়ে করলেন অন্য নারীকে, স্বপ্ন ভঙ্গ তরুণীর

  • আপডেট: ০৯:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
  • ০ Views

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিখিত অঙ্গীকারনামা করার পর তা ভঙ্গ করে অন্যত্র বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে সৌদি ফেরত যুবক নাহিদ পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামের (পাটওয়ারী বাড়ি) বাসিন্দা নাহিদ পাটওয়ারী এবং একই উপজেলার জাকনী গ্রামের সামিয়া আক্তার (ছদ্মনাম) ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই স্বেচ্ছায় একটি লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন। দলিল অনুযায়ী, তারা একে অপরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন এবং বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন।

উক্ত অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ ছিল, নাহিদ পাটওয়ারী সৌদি আরব গমন করবেন ১৫ জুন ২০২৩ ইং তারিখে। তিনি ছয় মাসের মধ্যে সামিয়াকে একটি আংটি উপহার দেবেন এবং দুই বছরের মধ্যে দেশে ফিরে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন। দলিলে আরও উল্লেখ রয়েছে—কোনো পক্ষ শর্ত ভঙ্গ করলে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, চলতি বছর দেশে ফিরে নাহিদ পাটওয়ারী পূর্ব প্রতিশ্রুতি অমান্য করে সামিয়াকে না জানিয়ে অন্যত্র বিবাহ করেন। এতে সামিয়া ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং সামাজিকভাবে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

সামিয়ার পরিবারের দাবি, প্রতারণার মাধ্যমে একজন তরুণীর জীবনের স্বপ্ন ধ্বংস করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা আইনি পরামর্শ নিয়েছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করা সাক্ষী আল-আমিন বলেন, “বিদেশ থেকে এসে নাহিদ বলে, সে অসুস্থ—তাই এখন বিয়ে করবে না। কিন্তু পরে জানতে পারি সে গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেছে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদের মামা পরিচয়দানকারী ফরিদগঞ্জের উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিপন পাটোয়ারী বলেন, “আমার ভাগিনাকে জোর করে স্ট্যাম্পে সই করানো হয়েছে।” তবে দুই বছরেও এই বিষয়ে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, “আমার ভাগিনা এখন বিবাহিত, এ নিয়ে যেন বেশি বাড়াবাড়ি না হয়।” এমনকি তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার নাম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ‘চুপ থাকতে’ পরোক্ষভাবে আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, সম্পর্কের প্রতি সম্মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এমন প্রতারণামূলক ঘটনার কঠোর বিচার হওয়া প্রয়োজন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআই প্রধান

হাজীগঞ্জে লিখিত স্ট্যাম্প করে প্রেম, বিয়ে করলেন অন্য নারীকে, স্বপ্ন ভঙ্গ তরুণীর

আপডেট: ০৯:২৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে লিখিত অঙ্গীকারনামা করার পর তা ভঙ্গ করে অন্যত্র বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে সৌদি ফেরত যুবক নাহিদ পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হাজীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব রাজারগাঁও গ্রামের (পাটওয়ারী বাড়ি) বাসিন্দা নাহিদ পাটওয়ারী এবং একই উপজেলার জাকনী গ্রামের সামিয়া আক্তার (ছদ্মনাম) ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই স্বেচ্ছায় একটি লিখিত অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেন। দলিল অনুযায়ী, তারা একে অপরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে আবদ্ধ হন এবং বিবাহের সিদ্ধান্ত নেন।

উক্ত অঙ্গীকারনামায় উল্লেখ ছিল, নাহিদ পাটওয়ারী সৌদি আরব গমন করবেন ১৫ জুন ২০২৩ ইং তারিখে। তিনি ছয় মাসের মধ্যে সামিয়াকে একটি আংটি উপহার দেবেন এবং দুই বছরের মধ্যে দেশে ফিরে বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করবেন। দলিলে আরও উল্লেখ রয়েছে—কোনো পক্ষ শর্ত ভঙ্গ করলে, দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী শাস্তি গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।

কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, চলতি বছর দেশে ফিরে নাহিদ পাটওয়ারী পূর্ব প্রতিশ্রুতি অমান্য করে সামিয়াকে না জানিয়ে অন্যত্র বিবাহ করেন। এতে সামিয়া ও তার পরিবার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন এবং সামাজিকভাবে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েন।

সামিয়ার পরিবারের দাবি, প্রতারণার মাধ্যমে একজন তরুণীর জীবনের স্বপ্ন ধ্বংস করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তারা আইনি পরামর্শ নিয়েছেন এবং ন্যায়বিচারের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করা সাক্ষী আল-আমিন বলেন, “বিদেশ থেকে এসে নাহিদ বলে, সে অসুস্থ—তাই এখন বিয়ে করবে না। কিন্তু পরে জানতে পারি সে গোপনে অন্যত্র বিয়ে করেছে।”

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নাহিদের মামা পরিচয়দানকারী ফরিদগঞ্জের উপজেলা যুবলীগের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শিপন পাটোয়ারী বলেন, “আমার ভাগিনাকে জোর করে স্ট্যাম্পে সই করানো হয়েছে।” তবে দুই বছরেও এই বিষয়ে কেন আইনি ব্যবস্থা নেয়া হয়নি, এমন প্রশ্ন করলে তিনি এড়িয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, “আমার ভাগিনা এখন বিবাহিত, এ নিয়ে যেন বেশি বাড়াবাড়ি না হয়।” এমনকি তিনি বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতার নাম ব্যবহার করে সাংবাদিকদের ‘চুপ থাকতে’ পরোক্ষভাবে আহ্বান জানান।

এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মহিউদ্দিন ফারুক বলেন, “অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

স্থানীয় সচেতন মহল বলছে, সম্পর্কের প্রতি সম্মান ও সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এমন প্রতারণামূলক ঘটনার কঠোর বিচার হওয়া প্রয়োজন।