মুসলিম বিদ্বেষী আইন: ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে সহিংসতা

  • আপডেট: ০৯:৪৬:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২০

A woman shouts as she takes part in a musical concert along with others to protest against the Indian government's Citizenship Amendment Bill (CAB) in Guhawati on December 15, 2019. - Some 5,000 people took part in a fresh demonstration in Guwahati on December 15, with hundreds of police watching on as they sang, chanted and carried banners with the words "long live Assam". (Photo by Sajjad HUSSAIN / AFP)

অনলাইন ডেস্ক:

আসামের গৌহাটিতে গত সপ্তাহের বিক্ষোভের জন্য মুসলমানদের একটি দল ও কংগ্রেসের কয়েকজন মুসলিম নেতাকে দায়ী করছে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যে তাদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে একটি গোষ্ঠীর ওপর দায় চাপিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চাচ্ছে বিজেপি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলার খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।

পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া নামে মুসলমানদের ওই সংগঠনটির দাবি, তাদের কোনো সদস্য সহিংসতায় জড়িত ছিল না। বিজেপি বলছে, সহিংসতার ভিডিও দেখে বিজেপি আট হাজার বিক্ষোভকারীকে শনাক্ত করতে পেরেছে।

সম্প্রতি রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এবং কংগ্রেসের কয়েকজন নেতাই ওই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

এ ঘোষণার পরেই ধারপাকড় শুরু হয়েছে। পপুলার ফ্রন্ড অফ ইন্ডিয়ার রাজ্যসভাপতিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংগঠনটির আসাম রাজ্য সহসভাপতি আবু সামা আহমেদ সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছেন, সরকার স্পষ্ট করে প্রমাণ দেখাতে পারবে না যে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া বা পি এফ আই সেদিনের সহিংসতায় জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, সেদিন সংবাদ সম্মেলনে হিমন্ত বিশ্বশর্মা যে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছেন, তা অস্পষ্ট। আমাদের পৃথক কোনো কার্যক্রমই ছিল না সেদিন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, তিনি সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখান যে আমাদের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত। আমরা জানি তিনি তা পারবেন না।

বৃহস্পতিবারও গৌহাটির চাঁদমারীতে ছিল অসমিয়া শিল্পী সমাজের এক প্রতিবাদসভা।

সেখানে উপস্থিত থাকা চলচ্চিত্র সংগঠন ফিল্ম ফ্রেটার্নিটির আসামের সাধারণ সম্পাদিকা গরিমা শইকিয়া বলেন, হিন্দু-মুসলিম, অসমিয়া বাঙালি বা অসমিয়া আর উপজাতিদের মধ্যে সংঘাত বাঁধানোর চেষ্টা চলছে। এটা জানি না যে এই সংঘাত সরকার বাঁধাচ্ছে না কোনো তৃতীয় শক্তির হাত আছে এর পেছনে। কিন্তু এটা বলতে পারি, যারাই এটি করুক না কেন, তারা আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যটা ঘুরিয়ে দিতে চাইছে!

তবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত দাশ বলেছেন, প্রমাণ আছে বলেই আমরা বলতে পেরেছি যে সেদিনের সহিংসতায় কারা জড়িত ছিল।

তিনি জানান, যদি অন্য দল এসে প্রমাণ দিতে পারে যে আমরা যাদের কথা বলছি, তারা নয়, অন্য কেউ জড়িত ছিল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়- তাতে তো আমাদের মুখেই ছাই পড়বে! আমরা প্রমাণ দিয়েছি বলেই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করছি -এটি বলে দেয়া তো ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত খুব নগণ্যসংখ্যক গ্রেফতার হয়েছে – আরও গ্রেফতার হবে।

নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা- কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির প্রধান অখিল গগৈকে মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করেছে সন্ত্রাসবাদ দমন সংস্থা এনআইএ-র হাতে তুলে দিয়েছে আসাম পুলিশ।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

হাজীগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মাইনুদ্দিন মিয়াজী আটক

মুসলিম বিদ্বেষী আইন: ভারতে ছড়িয়ে পড়ছে সহিংসতা

আপডেট: ০৯:৪৬:১৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

আসামের গৌহাটিতে গত সপ্তাহের বিক্ষোভের জন্য মুসলমানদের একটি দল ও কংগ্রেসের কয়েকজন মুসলিম নেতাকে দায়ী করছে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী বিজেপি সরকার। ইতিমধ্যে তাদের কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এভাবে একটি গোষ্ঠীর ওপর দায় চাপিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধাতে চাচ্ছে বিজেপি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। বিবিসি বাংলার খবরে এসব তথ্য জানা গেছে।

পপুলার ফ্রন্ট অব ইন্ডিয়া নামে মুসলমানদের ওই সংগঠনটির দাবি, তাদের কোনো সদস্য সহিংসতায় জড়িত ছিল না। বিজেপি বলছে, সহিংসতার ভিডিও দেখে বিজেপি আট হাজার বিক্ষোভকারীকে শনাক্ত করতে পেরেছে।

সম্প্রতি রাজ্যের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া এবং কংগ্রেসের কয়েকজন নেতাই ওই সহিংসতার সঙ্গে জড়িত বলে তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।

এ ঘোষণার পরেই ধারপাকড় শুরু হয়েছে। পপুলার ফ্রন্ড অফ ইন্ডিয়ার রাজ্যসভাপতিসহ বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

সংগঠনটির আসাম রাজ্য সহসভাপতি আবু সামা আহমেদ সরকারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলছেন, সরকার স্পষ্ট করে প্রমাণ দেখাতে পারবে না যে পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া বা পি এফ আই সেদিনের সহিংসতায় জড়িত ছিল।

তিনি বলেন, সেদিন সংবাদ সম্মেলনে হিমন্ত বিশ্বশর্মা যে ভিডিও ফুটেজ দেখিয়েছেন, তা অস্পষ্ট। আমাদের পৃথক কোনো কার্যক্রমই ছিল না সেদিন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, তিনি সুস্পষ্ট প্রমাণ দেখান যে আমাদের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত। আমরা জানি তিনি তা পারবেন না।

বৃহস্পতিবারও গৌহাটির চাঁদমারীতে ছিল অসমিয়া শিল্পী সমাজের এক প্রতিবাদসভা।

সেখানে উপস্থিত থাকা চলচ্চিত্র সংগঠন ফিল্ম ফ্রেটার্নিটির আসামের সাধারণ সম্পাদিকা গরিমা শইকিয়া বলেন, হিন্দু-মুসলিম, অসমিয়া বাঙালি বা অসমিয়া আর উপজাতিদের মধ্যে সংঘাত বাঁধানোর চেষ্টা চলছে। এটা জানি না যে এই সংঘাত সরকার বাঁধাচ্ছে না কোনো তৃতীয় শক্তির হাত আছে এর পেছনে। কিন্তু এটা বলতে পারি, যারাই এটি করুক না কেন, তারা আন্দোলনের মূল উদ্দেশ্যটা ঘুরিয়ে দিতে চাইছে!

তবে রাজ্য বিজেপির সভাপতি রঞ্জিত দাশ বলেছেন, প্রমাণ আছে বলেই আমরা বলতে পেরেছি যে সেদিনের সহিংসতায় কারা জড়িত ছিল।

তিনি জানান, যদি অন্য দল এসে প্রমাণ দিতে পারে যে আমরা যাদের কথা বলছি, তারা নয়, অন্য কেউ জড়িত ছিল ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায়- তাতে তো আমাদের মুখেই ছাই পড়বে! আমরা প্রমাণ দিয়েছি বলেই সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করছি -এটি বলে দেয়া তো ঠিক নয়।

তিনি আরও বলেন, এখনও পর্যন্ত খুব নগণ্যসংখ্যক গ্রেফতার হয়েছে – আরও গ্রেফতার হবে।

নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের আরেক নেতা- কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতির প্রধান অখিল গগৈকে মাওবাদীদের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করেছে সন্ত্রাসবাদ দমন সংস্থা এনআইএ-র হাতে তুলে দিয়েছে আসাম পুলিশ।