বিএফডিসিতে অভিনয়শিল্পীরা ব্যস্ত শুটিং ছাড়াই

  • আপডেট: ০৪:১১:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯
  • ২৯

বিনোদন ডেস্ক:

অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে ‘ব্যস্ত’ শব্দটি জুড়ে থাকা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কোনো না কোনো কাজে বিশেষ করে লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নিয়মতান্ত্রিক।

এসব কাজে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) বেশ সরগরম থাকত। বছর পাঁচেক আগেও বড় বড় শিল্পীদের শুটিংসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পদভারে মুখরিত ছিল এফডিসি। তবে গত কয়েক বছর ধরে ছবি নির্মাণ সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে শিল্পীদের সেই ব্যস্ততায় ভাটা পড়েছে।

এখন বেশিরভাগ শিল্পীই বেকার। হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পীর কাজ থাকলেও সেটি সীমিতসংখ্যক। এর ফলে এফডিসির অবস্থাও হয়ে গেছে অনেকটা ভুতুড়ে বাড়ির মতো। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এফডিসি আবারও একটি ব্যস্ততম জায়গায় পরিণত হয়েছে। লাইট, ক্যামেরা আছে বটে; তবে তা বিনোদন সাংবাদিক তথা টেলিভিশন ও ইউটিউবারদের দখলে।

এর কারণ ২৫ অক্টোবর শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিল্পীদের আনাগোনা বেড়েছে এফডিসিতে। নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ক্যামেরায় ধারণ করছেন সাংবাদিকরা। জ্বলছে ফ্ল্যাশ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনও প্রতিদিন কম পক্ষে এক ঘণ্টা এফডিসিতে সময় দিচ্ছেন। আসছেন সিনিয়র শিল্পীরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই লন্ডন যাওয়া বাতিল করেছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রোজিনা। সবই আছে। সরগরমও এফডিসি।

শুধু মূল জিনিসটা নেই; শুটিং। ইন্ডাস্ট্রি বাঁচিয়ে রাখার জন্য যেটি বাড়ানো দরকার, সেই ছবির শুটিং নেই এফডিসিতে। অথচ দিনরাত ব্যস্ত এফডিসি।

বর্তমানে বেশিরভাগ শিল্পীই ব্যস্ত আছেন নির্বাচনের প্রচারণা নিয়ে। নির্বাচন কমিশনারের সূত্রে জানা গেছে, ভোট চাইতে প্রার্থীরা শিল্পী সমিতির সদস্যদের বাড়ি যাওয়া কিংবা ভোটারদের কোনোরকম উপহার দেয়া নিষেধ।

অনেকেই ভাবছেন, সেজন্যই এফডিসিতে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে আসা অথবা নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটাররা দেখা করতে আসার ফলে অনেকটা জীবিত ও রমরমা মনে হচ্ছে ঢাকাই ছবির এ প্রাণকেন্দ্র। তবে ছবি নেই; কিন্তু নির্বাচনকেন্দ্রিক এ ব্যস্ততা কতটা শুভকর ইন্ডাস্ট্রির জন্য তা অনেকের প্রশ্ন।

এ বিষয়ে চিত্রনায়ক ও প্রযোজক সোহেল রানা বলেন, ‘এটি শুধু নির্বাচনই নয়, দু’বছর পর শিল্পীদের সঙ্গে শিল্পীদের, নতুনদের সঙ্গে সিনিয়রদের দেখা ও কথা হওয়ার উৎসব মনে করা যায়। নির্বাচিত হবেন তো সংখ্যায় কয়েকজন, তবে কেউ পরাজিত হবেন না। শুনতে ভালো লাগছে অনেকেই এখন এফডিসিতে আসছেন আড্ডা দিচ্ছেন।’

চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর পাঠান ফারুক বলেন, ‘নির্বাচনে যতজনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক সব শিল্পীই এফডিসিতে আসছেন। আড্ডা দিচ্ছেন। এটি ভালোলাগার। তবে তর্কাতর্কির ঘটনাও শুনেছি। এটি কাম্য নয়। এটি আসলে নির্বাচন নয়, একটি আড্ডার মতো। সবাই সবার সঙ্গে আড্ডা দিল, ছবি তুলল এটাই। শরীর ভালো থাকলে ২৫ তারিখ আমিও ভোট দিতে যাব।’

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী চিত্রনায়িকা মৌসুমী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন বিকালে এফডিসিতে যাওয়ার চেষ্টা করি, যাচ্ছিও। আমার সম্মানিত ভোটারদের সঙ্গে এবং সাংবাদিক ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করি, মতবিনিময় করি। এটি ভালো লাগছে। আমার হাতে একটি ছবি আছে ‘অর্জন ৭১’।

এর কিছু অংশের শুটিং শেষ হয়েছে। নির্বাচনের জন্য আপাতত শুটিং বন্ধ। নির্বাচনের পরপর শুটিং শুরু করব। সত্যিকার অর্থে এখন ভালো লাগছে সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। প্রত্যাশা করি নির্বাচনও ভালো হবে।’

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেয়া হবে না-রিজভী

বিএফডিসিতে অভিনয়শিল্পীরা ব্যস্ত শুটিং ছাড়াই

আপডেট: ০৪:১১:১৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ অক্টোবর ২০১৯

বিনোদন ডেস্ক:

অভিনয়শিল্পীদের সঙ্গে ‘ব্যস্ত’ শব্দটি জুড়ে থাকা একটি স্বাভাবিক ঘটনা। কোনো না কোনো কাজে বিশেষ করে লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশনের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার বিষয়টি নিয়মতান্ত্রিক।

এসব কাজে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফডিসি) বেশ সরগরম থাকত। বছর পাঁচেক আগেও বড় বড় শিল্পীদের শুটিংসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে পদভারে মুখরিত ছিল এফডিসি। তবে গত কয়েক বছর ধরে ছবি নির্মাণ সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণে শিল্পীদের সেই ব্যস্ততায় ভাটা পড়েছে।

এখন বেশিরভাগ শিল্পীই বেকার। হাতেগোনা কয়েকজন শিল্পীর কাজ থাকলেও সেটি সীমিতসংখ্যক। এর ফলে এফডিসির অবস্থাও হয়ে গেছে অনেকটা ভুতুড়ে বাড়ির মতো। কিন্তু সাম্প্রতিককালে এফডিসি আবারও একটি ব্যস্ততম জায়গায় পরিণত হয়েছে। লাইট, ক্যামেরা আছে বটে; তবে তা বিনোদন সাংবাদিক তথা টেলিভিশন ও ইউটিউবারদের দখলে।

এর কারণ ২৫ অক্টোবর শিল্পী সমিতির নির্বাচন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শিল্পীদের আনাগোনা বেড়েছে এফডিসিতে। নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের মধ্যে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ক্যামেরায় ধারণ করছেন সাংবাদিকরা। জ্বলছে ফ্ল্যাশ।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনও প্রতিদিন কম পক্ষে এক ঘণ্টা এফডিসিতে সময় দিচ্ছেন। আসছেন সিনিয়র শিল্পীরা। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই লন্ডন যাওয়া বাতিল করেছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা রোজিনা। সবই আছে। সরগরমও এফডিসি।

শুধু মূল জিনিসটা নেই; শুটিং। ইন্ডাস্ট্রি বাঁচিয়ে রাখার জন্য যেটি বাড়ানো দরকার, সেই ছবির শুটিং নেই এফডিসিতে। অথচ দিনরাত ব্যস্ত এফডিসি।

বর্তমানে বেশিরভাগ শিল্পীই ব্যস্ত আছেন নির্বাচনের প্রচারণা নিয়ে। নির্বাচন কমিশনারের সূত্রে জানা গেছে, ভোট চাইতে প্রার্থীরা শিল্পী সমিতির সদস্যদের বাড়ি যাওয়া কিংবা ভোটারদের কোনোরকম উপহার দেয়া নিষেধ।

অনেকেই ভাবছেন, সেজন্যই এফডিসিতে ভোটারদের সঙ্গে দেখা করতে আসা অথবা নির্বাচনে বিভিন্ন পদে প্রার্থীদের সঙ্গে ভোটাররা দেখা করতে আসার ফলে অনেকটা জীবিত ও রমরমা মনে হচ্ছে ঢাকাই ছবির এ প্রাণকেন্দ্র। তবে ছবি নেই; কিন্তু নির্বাচনকেন্দ্রিক এ ব্যস্ততা কতটা শুভকর ইন্ডাস্ট্রির জন্য তা অনেকের প্রশ্ন।

এ বিষয়ে চিত্রনায়ক ও প্রযোজক সোহেল রানা বলেন, ‘এটি শুধু নির্বাচনই নয়, দু’বছর পর শিল্পীদের সঙ্গে শিল্পীদের, নতুনদের সঙ্গে সিনিয়রদের দেখা ও কথা হওয়ার উৎসব মনে করা যায়। নির্বাচিত হবেন তো সংখ্যায় কয়েকজন, তবে কেউ পরাজিত হবেন না। শুনতে ভালো লাগছে অনেকেই এখন এফডিসিতে আসছেন আড্ডা দিচ্ছেন।’

চিত্রনায়ক ও সংসদ সদস্য আকবর পাঠান ফারুক বলেন, ‘নির্বাচনে যতজনই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করুক সব শিল্পীই এফডিসিতে আসছেন। আড্ডা দিচ্ছেন। এটি ভালোলাগার। তবে তর্কাতর্কির ঘটনাও শুনেছি। এটি কাম্য নয়। এটি আসলে নির্বাচন নয়, একটি আড্ডার মতো। সবাই সবার সঙ্গে আড্ডা দিল, ছবি তুলল এটাই। শরীর ভালো থাকলে ২৫ তারিখ আমিও ভোট দিতে যাব।’

শিল্পী সমিতির নির্বাচনে স্বতন্ত্র সভাপতি প্রার্থী চিত্রনায়িকা মৌসুমী বলেন, ‘আমি প্রতিদিন বিকালে এফডিসিতে যাওয়ার চেষ্টা করি, যাচ্ছিও। আমার সম্মানিত ভোটারদের সঙ্গে এবং সাংবাদিক ভাইবোনদের সঙ্গে দেখা করি, মতবিনিময় করি। এটি ভালো লাগছে। আমার হাতে একটি ছবি আছে ‘অর্জন ৭১’।

এর কিছু অংশের শুটিং শেষ হয়েছে। নির্বাচনের জন্য আপাতত শুটিং বন্ধ। নির্বাচনের পরপর শুটিং শুরু করব। সত্যিকার অর্থে এখন ভালো লাগছে সবার সঙ্গে দেখা হচ্ছে, কথা হচ্ছে। প্রত্যাশা করি নির্বাচনও ভালো হবে।’