অনলাইন ডেস্ক:
রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সর্বদলীয় বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘তারেক রহমান গতরাতে লন্ডনে দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে খালেদা জিয়ার অংশগ্রহণের মাধ্যমে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার যে প্রস্তাব রেখেছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এই প্রস্তাব রোহিঙ্গা নিয়ে দেশ ও জাতি মহাসংকট থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারবে বলে মনে করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘রোহিঙ্গা পরিস্থিতি জাতীয় সংকটে রূপ নিয়েছে। গত দুই বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের জন্মভূমি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি।’
তিনি বলেন, ‘রোহিঙ্গা আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে প্রতিদিন জন্ম নিচ্ছে নতুন শিশু। এদের নাগরিকত্ব পরিচয় কী হবে? কোন দেশের পরিচয়ে এরা বেড়ে উঠবে?’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব আরও বলেন, ‘ভারতের আসামে ১৯ লাখের বেশি মানুষকে নাগরিকত্বহীন করা হয়েছে। শোনা যাচ্ছে- তাদের ঠেলে দেয়া হবে বাংলাদেশে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য আরও একটি বড় বিপদের আশঙ্কা।’
‘ফলে দলীয় স্বার্থ নয়, দলমত নির্বিশেষে প্রতিটি বাংলাদেশিকে এক কাতারে আসা এখন সময়ের দাবি। খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান সর্বাগ্রে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন।’
রিজভী বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেছেন- রোহিঙ্গা সংকট কেবল দ্বিপক্ষীয় ইস্যু বিবেচনা করলে এই সংকট সমাধান হবে না। এটি একপাক্ষিক কিংবা দ্বিপাক্ষিক নয়, এটি আন্তর্জাতিক ইস্যু। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করতে হলে আমাদের জাতীয়ভাবে পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। আর এই পলিসি নির্ধারণের জন্য প্রয়োজন সর্বদলীয় বৈঠক।
ওই বৈঠকে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি ছাড়াও সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধি, বুদ্ধিজীবী, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধি, দেশে-বিদেশে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকদের অংশগ্রহণ থাকতে হবে।
তা হলে এ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত সারাবিশ্ব গুরুত্বসহকারে দেখবে। মিয়ানমারও গুরুত্ব দিতে বাধ্য হবে।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘সরকার ব্যর্থতা ঢাকতে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে দুর্বোধ্য ধাঁধার মধ্যে ফেলে রেখেছে জনগণকে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাড়তি ও থিতানো বিবৃতি ছাড়া রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় কিছুই করতে পারেননি।’
তিনি বলেন, ‘এখনও সময় আছে অবিলম্বে সর্বদলীয় বৈঠক করার। অবিলম্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন। রোহিঙ্গা পরিস্থিতি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ প্রয়োজন।’
রিজভী বলেন, ১৯৯১ সালের পর খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তিনি বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমারকে বাধ্য করতে কূটনৈতিক সফলতায় দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেছিলেন। সফলভাবে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলা করার অভিজ্ঞতা তার রয়েছে।’