ফরিদগঞ্জে গৃহবধু আসমা হত্যার ঘটনায় শ্বশুরও শাশুড়ি আটক

  • আপডেট: ০৯:১০:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪
  • ২১

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ আসমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় শ্বশুর হানিফ রাঢ়ি ও শাশুড়ি মাছুমা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে তাদেরকে আটক করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।

ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নে চির্কা গ্রামের গৃহবধূ আসমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় আসমা আক্তারের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মেয়েকে ধর্ষণের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হয়েছে বলে আদালতে মামলার আবেদন করলে সোমবার (১১ নভেম্বর) আদালত ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ পেয়ে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করে অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজনকে আটক করে।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হানিফ সরকার আদালতের নিদেশে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে আসমার শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চির্কা গ্রামের রাঢ়ি বাড়ির হানিফ রাঢ়ির ছেলে মাসুমের সঙ্গে চরমথুরা গ্রামের হাফেজ খানের মেয়ে আসমার ইসলামী শরিয়াহ মতে গত প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ১৮ মাস বয়সী আয়ান নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে আসমার স্বামী মাসুম মালয়েশিয়াতে থাকলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও দুই দেবর সাইমুন (২২) ও শাহীন (১৭) সহ একসাথে একঘরেই থাকতেন।

গত ৩ নভেম্বর শনিবার আসমা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। আসমার স্বামীর পরিবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার কথা বললেও মরদেহ গোসলের সময় মৃতের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল জানিয়েছেন আসমার স্বজনরা। এমনকি পুলিশও সুরতহাল রিপোর্টের সময় শরীরের অস্বাভাবিক কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে। এদিকে লাশ পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর ওই গৃহবধূর দুই দেবর সাইমুন ও শাহীন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

আসমার বড় ভাবী ফাতেমা বেগম জানান, তার ননদ আসমার লাশের পোস্ট মর্টেমের পর লাশের গোসল করানোর সময় তার শরীরের স্পর্শকাতর কয়েকটি স্থানে কামড়ের চিহ্ন দেখতে পাই। অথচ আমাদেরকে বলা হয়েছিল সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। আমরা কিছু ছবি তুলে রেখেছি। তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন নিশ্চিত করে তাকে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ আম গাছে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়।

এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে ৬ নভেম্বর স্থানীয় এলাকাবাসী ও মৃতের স্বজনরা ফরিদগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চাঁদপুর সদরে আওয়ামীপন্থি ৪ ইউপি সদস্য গ্রেফতার

ফরিদগঞ্জে গৃহবধু আসমা হত্যার ঘটনায় শ্বশুরও শাশুড়ি আটক

আপডেট: ০৯:১০:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে গৃহবধূ আসমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় শ্বশুর হানিফ রাঢ়ি ও শাশুড়ি মাছুমা বেগমকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে তাদেরকে আটক করে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ।

ফরিদগঞ্জের গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নে চির্কা গ্রামের গৃহবধূ আসমা আক্তারের মৃত্যুর ঘটনায় আসমা আক্তারের মা নাজমা বেগম বাদী হয়ে ৪ জনকে অভিযুক্ত করে মেয়েকে ধর্ষণের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে হয়েছে বলে আদালতে মামলার আবেদন করলে সোমবার (১১ নভেম্বর) আদালত ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশকে মামলা গ্রহণের নির্দেশ দেয়। আদালতের নির্দেশ পেয়ে থানা পুলিশ মামলা গ্রহণ করে অভিযুক্তদের মধ্যে দুইজনকে আটক করে।

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হানিফ সরকার আদালতের নিদেশে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করে জানান, অভিযুক্তদের মধ্যে আসমার শ্বশুর ও শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর উত্তর ইউনিয়নের চির্কা গ্রামের রাঢ়ি বাড়ির হানিফ রাঢ়ির ছেলে মাসুমের সঙ্গে চরমথুরা গ্রামের হাফেজ খানের মেয়ে আসমার ইসলামী শরিয়াহ মতে গত প্রায় ৩ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে ১৮ মাস বয়সী আয়ান নামের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। জীবিকার তাগিদে আসমার স্বামী মাসুম মালয়েশিয়াতে থাকলেও তার শ্বশুর-শাশুড়ি ও দুই দেবর সাইমুন (২২) ও শাহীন (১৭) সহ একসাথে একঘরেই থাকতেন।

গত ৩ নভেম্বর শনিবার আসমা আক্তার গলায় ফাঁস দিয়ে মৃত্যু হয়। তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। আসমার স্বামীর পরিবার গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার কথা বললেও মরদেহ গোসলের সময় মৃতের স্পর্শকাতর স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল জানিয়েছেন আসমার স্বজনরা। এমনকি পুলিশও সুরতহাল রিপোর্টের সময় শরীরের অস্বাভাবিক কিছু চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে। এদিকে লাশ পুলিশ নিয়ে যাওয়ার পর ওই গৃহবধূর দুই দেবর সাইমুন ও শাহীন বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়।

আসমার বড় ভাবী ফাতেমা বেগম জানান, তার ননদ আসমার লাশের পোস্ট মর্টেমের পর লাশের গোসল করানোর সময় তার শরীরের স্পর্শকাতর কয়েকটি স্থানে কামড়ের চিহ্ন দেখতে পাই। অথচ আমাদেরকে বলা হয়েছিল সে গলায় ফাঁস দিয়েছে। আমরা কিছু ছবি তুলে রেখেছি। তার শরীরের আঘাতের চিহ্ন নিশ্চিত করে তাকে যৌন ও শারীরিক নির্যাতন করে হত্যার পর লাশ আম গাছে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করা হয়।

এই ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে ৬ নভেম্বর স্থানীয় এলাকাবাসী ও মৃতের স্বজনরা ফরিদগঞ্জে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ।