দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য সংস্কার বা নির্বাচন করা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়।
বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসি থেকে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় এমন মন্তব্য করেন।
ছাত্র-জনতার ব্যাপক আন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে গত মাসে ভারতে পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে জয় বলেন, শেখ হাসিনা দেশে ফেরার বিষয়টা শেখ হাসিনার ওপর নির্ভর করেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে, গত মাসে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ দাবি করেছিলেন যে, শেখ হাসিনা দেশে ফিরে বিচারের মুখোমুখি হবেন এবং পরবর্তী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ অংশ নিতে চায়।
বাংলাদেশের গণআন্দোলনে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শেখ হাসিনার বিচার দাবি করেছে শিক্ষার্থীরা। এমন প্রেক্ষিতেই তিনি ওই কথা বলেন।
তবে শেখ হাসিনা দেশে ফিরবেন কী-না, মঙ্গলবার জানতে চাওয়া হলে জয় বলেন, ‘এটা তার (শেখ হাসিনা) সিদ্ধান্ত। এ মুহূর্তে আমি আমার দলের লোকজনকে নিরাপদে রাখতে চাই। ইউনূস সরকার তাদের ওপর যে নিষ্ঠুরতা চালাচ্ছে, সেটাকে আমি বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই’।
বাংলাদেশে আগামী দেড় বছরের মধ্যে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে সেনাপ্রধান যে মন্তব্য করেছেন, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগকে বাদ দিয়ে কার্যকর কোন সংস্কার বা নির্বাচন করা অসম্ভব।
নির্বাচন আয়োজনের সময় আরো আগেই প্রত্যাশিত ছিল বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
সোমবার রয়টার্সে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান বলেছেন, বাংলাদেশে ‘দেড় বছরের মধ্যেই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় উত্তরণ হওয়া উচিত’ বলে তিনি মনে করেন। তবে ‘পরিস্থিতি যাই হোক না কেনো’ তিনি ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাবেন।
তার ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মঙ্গলবার রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, শেষপর্যন্ত আমরা একটা সময়সীমা পেয়েছি, এতে আমি খুশী। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, একটি অসাংবিধানিক, অনির্বাচিত সরকার দেশে নানা সংস্কারের কথা বলছে, যা পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলবে।
শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ বাহিনী অকার্যকর হয়ে পড়লে সেনাবাহিনী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করে।
তবে সজীব ওয়াজেদ জয় বাংলাদেশে সেনা অভ্যুত্থানের অতীত কিছু উদাহরণও তুলে ধরেন।
তিনি বলেছেন, দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং বৃহত্তম রাজনৈতিক দলকে বাদ দিয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য সংস্কার বা নির্বাচন করা অসম্ভব।
তার ভাষায়, ‘এটা অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর নির্ভর করছে যে, তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে আলোচনা করবে নাকি তাদের মতো করে নির্বাচন আয়োজন করবে’।