চাঁদপুর মডেল থানায় ছাত্রদের হামলার ঘটনায় শতাধিক ব্যক্তিকে আসামী করে মামলা মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা যায়নি। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে থানায় মামলাটি দায়ের করেন হামলা ও মারধরের শিকার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল সামাদ।
চাঁদপুর শহরের আওয়ামী লীগ নেত্রী মাসুমা বেগমের মেয়েকে ইভটিজিংয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘবদ্ধ ছাত্রদের থানায় হামলা এবং পুলিশ কর্মকর্তাকে মারধরে ঘটনায় ১০ জনকে নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা ৮০-১০০জনকে আসামী করে মামলা করা হয়েছে।
মামলার আসামীরা হলেন-শহরের কোড়ালিয়া রোডের হারুন ছৈয়ালের মেয়ে ফাতেমা আক্তার (২২), তার মা মাসুমা বেগম (৪২), একই এলাকার তাহসিন হোসেন (১৮), আল-আমিন (২৮), ট্রাক রোডের মো. রাকিব ভূঁইয়া (২৩), আরফিন আলিফ (২০), মো. সাফায়াত (২২), সৈয়দ সাকিবুল ইসলাম (২৩), রিফাত (১৯) ও মো. আরাফাত (১৯)।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়, গত ৮ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ নেত্রী মাসুমা বেগমের মেয়েকে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় থানায় অভিযোগ দিলে তদন্তের জন্য উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামাদ ও সঙ্গীয় ফোর্স কোড়ালিয়া রোডে যান। সেখানে গিয়ে আসামী ফাতেমা পক্ষের উশৃঙ্খল ছাত্রদের নিয়ে বিবাদী পক্ষের লোকদের সাথে সংঘর্ষ হয়। পুলিশ ঘটনা শান্ত করে থানায় চলে আসে। পরবর্তীতে ৯ সেপ্টেম্বর ফাতেমা উশৃঙ্খল ছাত্রদের নিয়ে থানায় আসে। তাদের বুঝিয়ে ওসি বুঝিয়ে বিদায় করে।
এরপর পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর আড়াইটার দিকে ছাত্রদেরকে ফাতেমা ও তার মা পুলিশের বিষয়ে ভুল তথ্য দিয়ে উস্কানি দেয়। তখন ওই ছাত্ররা তাদের পক্ষ হয়ে থানায় প্রবেশ করে কর্মকর্তাসহ সকলের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে। এক পর্যায়ে তারা এসআই সামাদের ম্যাচের খাবার ঘরে গিয়ে ছাত্ররা তাকে টেনে হিচড়ে বের করে মারধর করে। এই ঘটনায় থানার ওসিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
এমন পরিস্থিতি দেখে ওই সময় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসেন রনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকেও চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি হাসপাতালের স্পেশাল কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন থেকে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে রেফার করা হয়।
এ দিকে ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আবদুল সামাদের পা ধরে ক্ষমা চায়। তবে পুলিশ থানার সব কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এতে চাঁদপুর সদর উপজেলায় অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়।
চাঁদপুরের ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত রায় বলেন, ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।