দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরও বহাল তবিয়তে কচুয়ার পিআইও

মোঃ রাকিবুল ইসলাম

তৃণমূলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা । চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকল্প বাস্তবায়নে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকদিন যাবৎ জাতীয় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও কোন খুঁটির জোরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।যার ফলে টিআর, কাবিখা ও কাবিটার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । এমনকি কচুয়ায় বানভাসি মানুষের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা হচ্ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগসাজেশ করে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং কাজ ছাড়াই প্রকল্পের বিল প্রদান করেন। এমনকি নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে বরাদ্দের অর্থ ভাগাভাগি করে নেন। এছাড়াও সকল প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ১২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।তিনি বিভিন্ন সময় ভূয়া নাম দিয়ে পছন্দের লোকদের সাথে চুক্তি করে প্রতিটি বরাদ্দে ৫/১০ টি প্রকল্প হাতিয়ে নেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত গ্রামাঞ্চলের মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগ তছরুপ করা হয় তার মাধ্যমে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে এগিয়ে আছে এ কর্মকর্তা। উপজেলা ভিত্তিক

তৃণমূলের উন্নয়ন ও দরিদ্রদের সহায়ক হিসেবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার নানা শিরোনামে উপজেলায় উন্নয়নের জন্য ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ হয়।এছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আওতায় বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে সাধারণ ও বিশেষ নামে অর্থ বরাদ্দ আসে। উপজেলার অনুকূলে বরাদ্দ অর্থ সমন্বয় কমিটির সভার মাধ্যমে বণ্টন হয় বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে। যা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকে ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি থাকলেও দেখভালের দায়িত্বে থাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কিন্তু তিনি প্রকল্পের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা নিজে দেখেন না। এমনকি সহকারী প্রকৌশলী ও ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট কে বাদ দিয়ে সকল প্রকল্পসমূহ দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন অফিস সহকারী আশরাফুলকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কচুয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান , মেম্বার ও উপকারভোগীরা জানান,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলামের ঘুষ নেওয়া থেকে উপজেলার কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান , মেম্বার ও নেতাকর্মীরা ছাড় পায় না। তিনি কাজ না হলেও সমন্বয়ের মাধ্যমে বিল প্রদান করে থাকে।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান মুরাদ জানান, বিষয়টি আমি সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি। দুর্যোগের কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে। খুব সহসায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ হেদায়েত উল্লাহ জানান, বন্যার কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে। খুব শীঘ্রই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান এর মুঠোফোনে বার বার কর দিলেও কল রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য প্রদান করা যায় নি ।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান মুঠোফোনে জানান, সংবাদ মাধ্যমে চাঁদপুরের কচুয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনিয়মের বিষয়ে জেনেছি, দু’চার দিনের মধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ভারতে মসজিদের স্থানে মন্দির দাবি করে জরিপের চেস্টায় উত্তেজনা, পুলিশের গুলিতে ৩ মুসল্লি নিহত (ভিডিওসহ)

দুর্নীতি ও অনিয়মের সংবাদ প্রকাশের পরও বহাল তবিয়তে কচুয়ার পিআইও

আপডেট: ০৩:২৬:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৪

তৃণমূলে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা । চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) কর্মকর্তা মোঃ রাকিবুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকল্প বাস্তবায়নে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। কয়েকদিন যাবৎ জাতীয় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পরও কোন খুঁটির জোরে বহাল তবিয়তে রয়েছেন তা নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।যার ফলে টিআর, কাবিখা ও কাবিটার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে । এমনকি কচুয়ায় বানভাসি মানুষের ত্রাণ সহায়তা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা হচ্ছে না। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগসাজেশ করে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং কাজ ছাড়াই প্রকল্পের বিল প্রদান করেন। এমনকি নাম মাত্র কাজ দেখিয়ে বরাদ্দের অর্থ ভাগাভাগি করে নেন। এছাড়াও সকল প্রকল্পের বরাদ্দ থেকে ১২ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।তিনি বিভিন্ন সময় ভূয়া নাম দিয়ে পছন্দের লোকদের সাথে চুক্তি করে প্রতিটি বরাদ্দে ৫/১০ টি প্রকল্প হাতিয়ে নেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নভুক্ত গ্রামাঞ্চলের মেরামত ও সংস্কারের জন্য সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার বরাদ্দকৃত অর্থের সিংহভাগ তছরুপ করা হয় তার মাধ্যমে। প্রকল্প বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জনপ্রতিনিধিদের চেয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে এগিয়ে আছে এ কর্মকর্তা। উপজেলা ভিত্তিক

তৃণমূলের উন্নয়ন ও দরিদ্রদের সহায়ক হিসেবে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার নানা শিরোনামে উপজেলায় উন্নয়নের জন্য ত্রাণ, দুর্যোগ ও পুনর্বাসন,স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় অর্থ বরাদ্দ হয়।এছাড়াও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আওতায় বিভিন্ন উপজেলা পর্যায়ে সাধারণ ও বিশেষ নামে অর্থ বরাদ্দ আসে। উপজেলার অনুকূলে বরাদ্দ অর্থ সমন্বয় কমিটির সভার মাধ্যমে বণ্টন হয় বিভিন্ন ইউনিয়নে বিভিন্ন প্রকল্পের নামে। যা বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকে ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা।তারা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি থাকলেও দেখভালের দায়িত্বে থাকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা। কিন্তু তিনি প্রকল্পের কাজ সঠিক ভাবে সম্পন্ন হয়েছে কিনা তা নিজে দেখেন না। এমনকি সহকারী প্রকৌশলী ও ওয়ার্ক এসিস্ট্যান্ট কে বাদ দিয়ে সকল প্রকল্পসমূহ দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন অফিস সহকারী আশরাফুলকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কচুয়া উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান , মেম্বার ও উপকারভোগীরা জানান,প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. রাকিবুল ইসলামের ঘুষ নেওয়া থেকে উপজেলার কোনো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান , মেম্বার ও নেতাকর্মীরা ছাড় পায় না। তিনি কাজ না হলেও সমন্বয়ের মাধ্যমে বিল প্রদান করে থাকে।

কচুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এহসান মুরাদ জানান, বিষয়টি আমি সংবাদ মাধ্যমে জানতে পেরেছি। দুর্যোগের কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে। খুব সহসায় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

চাঁদপুর জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোঃ হেদায়েত উল্লাহ জানান, বন্যার কারণে একটু বিলম্ব হচ্ছে। খুব শীঘ্রই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামরুল হাসান এর মুঠোফোনে বার বার কর দিলেও কল রিসিভ না করায় উনার বক্তব্য প্রদান করা যায় নি ।

দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ কামরুল হাসান মুঠোফোনে জানান, সংবাদ মাধ্যমে চাঁদপুরের কচুয়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অনিয়মের বিষয়ে জেনেছি, দু’চার দিনের মধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।