চাঁদপুরে নকল পণ্যের গোডাউন সীলগালা, আটক ১, ২ লক্ষা টাকা জরিমান

  • আপডেট: ০৫:০৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯
  • ৬৭

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
দপুরে জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে শহরের ওয়ারল্যাছ বাজার এলাকা থেকে নকল ডিটারজেন পাউডার, ট্যাং, চাটনী (আচার)ও সরিসার তৈল তৈরির কারখানা আবিস্কার করেছে। পরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেখানে ৪টি পণ্য উৎপাদনকারী কারখানায় থাকা বিপুল পরিমান পণ্য জব্দ করা হয়। এ সময় কারখানার পরিচালক তানভীর আহমেদকে আটক করে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পরিচালক তানভিরকে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপুল পরিমান পন্যসহ নকল কারখাটি সিলগালা করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্ততি চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরের পৌর ১৩নং ওয়ার্ডের ওয়ারল্যাছ বাজারের মৃধা বাড়ী এলাকায় তুরাগ নামের কারখানায় জেলা পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। শনিবার শেষ বিকেলে জেলা পুলিশের পক্ষে এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(চাঁদপুর সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান,ওয়ারলেস বাজার মৃধা বাড়ী এলাকায় প্রায় ৪/৫ বছর ধরে চলছিলো অবৈধ তুরাগ নামের ১টি কারখানা। যেখানে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে আমুল তেঁতুল চাটনী, ২ গুন সাদা তুরাগ উইন পাওয়ার হোয়াইট(ডিটারজেন),তুরাগ ট্যাং ও তুরাগ খাঁটি সরিষার তেলের মতো ৪টি পণ্য তৈরি করা হচ্ছিলো।এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জেলা পুলিশ এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি এবং ঘটনার সত্যতা পাই। পরে আমরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে কে খবর দিলে তারা এসে পরবর্তী আইননুনাযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এই তুরাগ কারখানাটি প্রচুর মোটা অংকের টাকা খেয়ে জায়গার মালিক এখানে অবৈধভাবে কারখানাটি খুলতে দেয়। এখান থেকে জায়গার ভাড়া ছাড়াও মোটা অংকের মাসোহারা নিতেন জায়গার মালিক পক্ষ।শুধু তাই নয় স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটও এই জায়গার মালিকের সাথে এক হয়ে এই কারখানা থেকে মোটা অংকের মাসোহারা পেয়ে থাকতো।এ বিষয়ে জায়গার কর্তৃপক্ষ নাসির নামে একজন জানায়,এই জায়গাটি আমার ভগ্নিপতির।তিনি এসব বিষয়ে জানেন না।তবে কে জানে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।কারখানার মালিক পক্ষের তানভীর জানায়,আমার ভাই এখানে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ব্যবসা করতো।আমি এর বেশি কিছু জানি না।আমি এখানে মাঝে মধ্যে আসি।তবে এটি যে অবৈধ সেটা আমার জানা ছিলো না।এদিকে সরজমিনে দেখা যায়, শুধু অবৈধ কারখানা স্থাপনের সুযোগই নয়।জায়গার মালিক কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এই কারখানায় কাজ করানো হতো তরুন যুবক-যুবতীদেরও। এদিকে এমন ঘটনায় ঘটনা স্থলে ম্যাজিস্ট্রেট হাজির হয় এবং তুরাগ নামের ওই কারখানাটি পরে সিলগালা করে দেওয়া হয়।এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম জানান,আমরা তুরাগ নামের ওই কারখানাটির সকল পণ্য উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।সেই সাথে নানা অনিয়ম থাকায় কারখানাটি সিলগালা করেছি।শাস্তি সম্পর্কে তিনি জানান,আমরা এই কারখানা পরিচালনাকারী তানভীরকে নগদ ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছি। আর যারা কারখানায় কাজ করতো ওদেরকে কঠোর সতর্কতা প্রদান করে ছেড়ে দিয়েছি। তবে সচেতনমহল মনে করে শুধু কারখানা কর্তৃপক্ষকেই নয়। বরং না জেনে শুনে এসব কারখানা স্থাপন করতে দেওয়া। সেই সাথে ওই জায়গা ভাড়া দেওয়া কর্তৃপক্ষের প্রতিও কঠোর ব্যবস্থা ও শাস্তি প্রদান করা উচিত। যাতে করে কেউ যাতে আর না জেনে শুনে এভাবে যাকে তাকে কারখানা স্থাপন করতে সুযোগ না দেয়।এদিকে এই অভিযান পরিচালনাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন,চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল হোসাইন,চাঁঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নাসিম উদ্দিন,পুরান বাজার ফাড়ির ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও স্থানীয় এলাকাবাসী।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

যে কারণে পুরুষে ৪টি বিয়ের পক্ষে হীরা সুমরো

চাঁদপুরে নকল পণ্যের গোডাউন সীলগালা, আটক ১, ২ লক্ষা টাকা জরিমান

আপডেট: ০৫:০৭:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ মে ২০১৯

নিজস্ব প্রতিনিধি॥
দপুরে জেলা পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে শহরের ওয়ারল্যাছ বাজার এলাকা থেকে নকল ডিটারজেন পাউডার, ট্যাং, চাটনী (আচার)ও সরিসার তৈল তৈরির কারখানা আবিস্কার করেছে। পরে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সেখানে ৪টি পণ্য উৎপাদনকারী কারখানায় থাকা বিপুল পরিমান পণ্য জব্দ করা হয়। এ সময় কারখানার পরিচালক তানভীর আহমেদকে আটক করে। পরে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম তাৎক্ষনিক ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে পরিচালক তানভিরকে ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিপুল পরিমান পন্যসহ নকল কারখাটি সিলগালা করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্ততি চলছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।
খবর নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরের পৌর ১৩নং ওয়ার্ডের ওয়ারল্যাছ বাজারের মৃধা বাড়ী এলাকায় তুরাগ নামের কারখানায় জেলা পুলিশ কর্তৃক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করেছে। শনিবার শেষ বিকেলে জেলা পুলিশের পক্ষে এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(চাঁদপুর সদর সার্কেল) জাহেদ পারভেজ চৌধুরী। তিনি জানান,ওয়ারলেস বাজার মৃধা বাড়ী এলাকায় প্রায় ৪/৫ বছর ধরে চলছিলো অবৈধ তুরাগ নামের ১টি কারখানা। যেখানে অবৈধ উপায় অবলম্বন করে আমুল তেঁতুল চাটনী, ২ গুন সাদা তুরাগ উইন পাওয়ার হোয়াইট(ডিটারজেন),তুরাগ ট্যাং ও তুরাগ খাঁটি সরিষার তেলের মতো ৪টি পণ্য তৈরি করা হচ্ছিলো।এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা জেলা পুলিশ এখানে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করি এবং ঘটনার সত্যতা পাই। পরে আমরা জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রে কে খবর দিলে তারা এসে পরবর্তী আইননুনাযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে।এ দিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, এই তুরাগ কারখানাটি প্রচুর মোটা অংকের টাকা খেয়ে জায়গার মালিক এখানে অবৈধভাবে কারখানাটি খুলতে দেয়। এখান থেকে জায়গার ভাড়া ছাড়াও মোটা অংকের মাসোহারা নিতেন জায়গার মালিক পক্ষ।শুধু তাই নয় স্থানীয় একটি সিন্ডিকেটও এই জায়গার মালিকের সাথে এক হয়ে এই কারখানা থেকে মোটা অংকের মাসোহারা পেয়ে থাকতো।এ বিষয়ে জায়গার কর্তৃপক্ষ নাসির নামে একজন জানায়,এই জায়গাটি আমার ভগ্নিপতির।তিনি এসব বিষয়ে জানেন না।তবে কে জানে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন তিনি এড়িয়ে যান।কারখানার মালিক পক্ষের তানভীর জানায়,আমার ভাই এখানে মোটা অংকের টাকা দিয়ে ব্যবসা করতো।আমি এর বেশি কিছু জানি না।আমি এখানে মাঝে মধ্যে আসি।তবে এটি যে অবৈধ সেটা আমার জানা ছিলো না।এদিকে সরজমিনে দেখা যায়, শুধু অবৈধ কারখানা স্থাপনের সুযোগই নয়।জায়গার মালিক কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে এই কারখানায় কাজ করানো হতো তরুন যুবক-যুবতীদেরও। এদিকে এমন ঘটনায় ঘটনা স্থলে ম্যাজিস্ট্রেট হাজির হয় এবং তুরাগ নামের ওই কারখানাটি পরে সিলগালা করে দেওয়া হয়।এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোরশেদুল ইসলাম জানান,আমরা তুরাগ নামের ওই কারখানাটির সকল পণ্য উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছি।সেই সাথে নানা অনিয়ম থাকায় কারখানাটি সিলগালা করেছি।শাস্তি সম্পর্কে তিনি জানান,আমরা এই কারখানা পরিচালনাকারী তানভীরকে নগদ ২ লক্ষ টাকা অর্থদন্ড এবং ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছি। আর যারা কারখানায় কাজ করতো ওদেরকে কঠোর সতর্কতা প্রদান করে ছেড়ে দিয়েছি। তবে সচেতনমহল মনে করে শুধু কারখানা কর্তৃপক্ষকেই নয়। বরং না জেনে শুনে এসব কারখানা স্থাপন করতে দেওয়া। সেই সাথে ওই জায়গা ভাড়া দেওয়া কর্তৃপক্ষের প্রতিও কঠোর ব্যবস্থা ও শাস্তি প্রদান করা উচিত। যাতে করে কেউ যাতে আর না জেনে শুনে এভাবে যাকে তাকে কারখানা স্থাপন করতে সুযোগ না দেয়।এদিকে এই অভিযান পরিচালনাকালে আরো উপস্থিত ছিলেন,চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জল হোসাইন,চাঁঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ নাসিম উদ্দিন,পুরান বাজার ফাড়ির ইন্সপেক্টর জাহাঙ্গীর হোসেনসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও স্থানীয় এলাকাবাসী।