শাহরাস্তিতে কোটিপতির স্বেচ্ছায় নির্বাসন

“মাঁচার ঘরই আমার স্বর্গ” আমি এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি

  • আপডেট: ০৯:৩১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩
  • ০ Views

আবু মুছা আল শিহাবঃ

শাহরাস্তি পৌর শহরে যিনি ৩ শত ৬০ শতক জায়গার মালিক তিনি অবশ্যই ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার মালিক। স্বেচ্ছায় ২৫ বছর যাবত সংসার, স্ত্রী, সন্তান সবাইকে ফেলে নির্বাসনে মাঁচায় বসত করছেন সামছুল হক ওরফে সামু মাষ্টার।

জানা যায়, তিনি ১৯২৮ সালে উপজেলার পূর্ব নিজমেহার মিয়াজী বাড়ির মৃত শরীফুল্লাহ্ মিয়াজীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি বৃটিশ আমলে এনট্রান্স পাশ করেন। কর্ম জীবনে তিনি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক ছিলেন। তিনি কর্মজীবনের প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় তারপর চাঁদপুরে শিক্ষকতা করেন। চাঁদপুর থেকে টামটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিজমেহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ নোয়াগাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহন করেন। অবসরের বছর আটেক পর তিনি নির্বাসনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এসময় স্ত্রী রাজিয়া বেগম, পুত্র আবদুল কাদের, কন্যা মাহমুদা ও রাবিয়া বেগম বাধা দেয়। তিনি সকলের বাধা উপেক্ষা করে চলে যান আমৃত্যু নির্বাসনে।

স্বামীকে ফেরাতে ব্যর্থ স্ত্রী রাজিয়া বেগম ২০১৫ সালের ১৬ মে শনিবার ইন্তেকাল করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আরও নিজের প্রতি বেখেয়ালি হয়ে পড়েন। নামাজ, রোজা আর ইবাদতের মধ্যদিয়ে চলে যায় সারাদিন। এভাবে মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর কেটে যায় তাঁর।

এবিষয়ে সামু মাষ্টার বলেন, এই দুনিয়ার কোন মায়া আমার নেই। মহান আল্লার পবিত্র কোরআন আর দু’জাহানের বাদশা মুহাম্মদের সুন্নাহ্ এখন আমার জীবন সাথী। আপনারা নামাজ পড়ুন আর রাসুলের সুন্নাহ্ মেনে চলুন। জান্নাতে যেতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই মাঁচাই আমার দুনিয়াবী জান্নাত। আমি এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

সামু মাষ্টারের একমাত্র ছেলে আবদুল কাদের বলেন, আমি বিএসসি পাশ করে এলাকায় শিক্ষকতা করছি। আজ পঁচিশ বছর যাবত আমার পিতা নির্বাসনে আছেন। তেমন কারও সাথে কথা বলেন না। খাওয়ার সময় খাবার ওনার মাঁচাতে পৌঁছে দিলে তিনি খেয়ে নেন। তবে তিনি স্বল্প ও স্বাভাবিক খাবার খান।

তিনি আরও বলেন, আমার পিতা তিন কানি জায়গার মালিক। এই দুনিয়ার প্রতি ওনার কোন মোহ্ নেই। তিনি সারাদিন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকেন। বহুবার চেষ্টা করেও বাবাকে বাসায় ফেরাতে পারিনি। তিনি সেখানেই নাকি খুব ভালো আছেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ইতিহাস গড়ে পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদে আইএসআই প্রধান

শাহরাস্তিতে কোটিপতির স্বেচ্ছায় নির্বাসন

“মাঁচার ঘরই আমার স্বর্গ” আমি এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি

আপডেট: ০৯:৩১:৫৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩০ অগাস্ট ২০২৩

আবু মুছা আল শিহাবঃ

শাহরাস্তি পৌর শহরে যিনি ৩ শত ৬০ শতক জায়গার মালিক তিনি অবশ্যই ১৫ থেকে ২০ কোটি টাকার মালিক। স্বেচ্ছায় ২৫ বছর যাবত সংসার, স্ত্রী, সন্তান সবাইকে ফেলে নির্বাসনে মাঁচায় বসত করছেন সামছুল হক ওরফে সামু মাষ্টার।

জানা যায়, তিনি ১৯২৮ সালে উপজেলার পূর্ব নিজমেহার মিয়াজী বাড়ির মৃত শরীফুল্লাহ্ মিয়াজীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে তিনি বৃটিশ আমলে এনট্রান্স পাশ করেন। কর্ম জীবনে তিনি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক ছিলেন। তিনি কর্মজীবনের প্রথমে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় তারপর চাঁদপুরে শিক্ষকতা করেন। চাঁদপুর থেকে টামটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিজমেহার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সর্বশেষ নোয়াগাঁ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৯১ সালে অবসর গ্রহন করেন। অবসরের বছর আটেক পর তিনি নির্বাসনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। এসময় স্ত্রী রাজিয়া বেগম, পুত্র আবদুল কাদের, কন্যা মাহমুদা ও রাবিয়া বেগম বাধা দেয়। তিনি সকলের বাধা উপেক্ষা করে চলে যান আমৃত্যু নির্বাসনে।

স্বামীকে ফেরাতে ব্যর্থ স্ত্রী রাজিয়া বেগম ২০১৫ সালের ১৬ মে শনিবার ইন্তেকাল করেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি আরও নিজের প্রতি বেখেয়ালি হয়ে পড়েন। নামাজ, রোজা আর ইবাদতের মধ্যদিয়ে চলে যায় সারাদিন। এভাবে মাসের পর মাস আর বছরের পর বছর কেটে যায় তাঁর।

এবিষয়ে সামু মাষ্টার বলেন, এই দুনিয়ার কোন মায়া আমার নেই। মহান আল্লার পবিত্র কোরআন আর দু’জাহানের বাদশা মুহাম্মদের সুন্নাহ্ এখন আমার জীবন সাথী। আপনারা নামাজ পড়ুন আর রাসুলের সুন্নাহ্ মেনে চলুন। জান্নাতে যেতে পারবেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, এই মাঁচাই আমার দুনিয়াবী জান্নাত। আমি এখানে থাকতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি।

সামু মাষ্টারের একমাত্র ছেলে আবদুল কাদের বলেন, আমি বিএসসি পাশ করে এলাকায় শিক্ষকতা করছি। আজ পঁচিশ বছর যাবত আমার পিতা নির্বাসনে আছেন। তেমন কারও সাথে কথা বলেন না। খাওয়ার সময় খাবার ওনার মাঁচাতে পৌঁছে দিলে তিনি খেয়ে নেন। তবে তিনি স্বল্প ও স্বাভাবিক খাবার খান।

তিনি আরও বলেন, আমার পিতা তিন কানি জায়গার মালিক। এই দুনিয়ার প্রতি ওনার কোন মোহ্ নেই। তিনি সারাদিন ইবাদত বন্দেগীতে ব্যস্ত থাকেন। বহুবার চেষ্টা করেও বাবাকে বাসায় ফেরাতে পারিনি। তিনি সেখানেই নাকি খুব ভালো আছেন।