মোহাম্মদ উল্যাহ বুলবুল:
হাজীগঞ্জে আদালত কর্তৃক নিয়োগকৃত রিসিভারের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিরোধকৃত সম্পতিতে স্থায়ী দালানঘর নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার কালচোঁ উত্তর ইউনিয়নের সিঁহিরচো গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে বিবাদী মোহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়েজ আহম্মদ প্রধানীয়া, রাকিবুল ইসলাম সোহাগ, সুমন প্রধানীয়া ও মৃত আব্দুল কাদেরের ছেলে মোখলেছুর রহমান চলাচলের পথ দখল করে এই স্থাপনা (দালানঘর) নির্মাণ করছেন।
এর আগেও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বিরোধকৃত ওই সম্পত্তিতে দেড় শতাধিক বছরের চলাচলের পথ বন্ধ করে স্থাপনা নির্মাণ কাজ শুরু করেন অভিযোগের বিবাদীরা। এ ঘটনায় কয়েকটি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আবেদনের ভিত্তিতে গত ১২ এপ্রিল ওই সম্পত্তিতে আদালত হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে রিসিভার হিসাবে নিয়োগ দেন বলে জানান, বাদী লোকমান হোসেন প্রধানীয়া।
ওই সময়ে আদালতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদনে দেখা গেছে, ওই ইউনিয়নের ৬৭নং সিঁহিরচোঁ মৌজার বিএস ৩৩৯, ২০৬নং খতিয়ান, হাল ৭০১ দাগে .০১ একর। যার উত্তরে আবু তাহের, দেিণ আব্দুল হাই, পূর্বে প্রতিপ (বিবাদী), পশ্চিমে নিজ (বাদী) এবং একই দাগে .০০৭০ একর। যার উত্তরে আব্দুল মালেক গং, দেিণ আব্দুল হাই, পশ্চিমে রাস্তা এবং পূর্বে রাস্তা। যা দখল করে বিবাদীরা স্থাপনা নির্মাণ করছেন বলে অভিযোগ করা হয়।
বাদী পক্ষ জানান, ওই গ্রামের প্রধানীয়া বাড়ির উল্লেখিত বিবাদীরা দীর্ঘ দেড় শতাধিক বছরের বেশি সময় ধরে ব্যবহৃত বাড়ির উঠান ও চলাচলের পথ দখল করে জোরপূর্বক স্থাপনা নির্মাণের অপচেষ্টা করে আসছে। সবশেষ গত ১০ মার্চ ওই স্থানে স্থাপনা নির্মাণের লে তারা নির্মাণ সামগ্রী এনে কিছু সন্ত্রাসী ও লোকজন নিয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে। এতে বাধা দেন, একই বাড়ির মৃত আব্দুল জব্বার প্রধানীয়ার ছেলে মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া।
এসময় তারা (বিবাদীরা) বাধা উপো করে জোরপূর্বক পাকাঘর (দালানঘর) নির্মাণ কাজ শুরু করেন এবং বাদী পকে হুমকি-ধমকি দেন। এতে কোন উপায়ান্তর না দেখে এবং উক্ত উঠান ও চলাচলের পথ বেদখল থেকে রা পেতে গত ১৯ মার্চ মো. লোকমান হোসাইন প্রধানীয়া চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ফৌজদারী কার্যবিধি আইনের ১৪৫ ধারা মোতাবেক উল্লেখিত ভূমিতে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন।
আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে উল্লেখিত উঠান ও চলাচলের পথে অস্থায়ী স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ও নালিশি ভূমির দখল বিষয়ে মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং ২য় পকে (বিবাদী) কারণ দর্শাতে নির্দেশনা দেন। যার পরবর্তী তারিখ আগামি ২৯ মে নির্ধারণ করা হয়। অথচ ওই সময়েও আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছেন বিবাদীরা।
এরপর গত ১২ এপ্রিল আদালত কর্তৃক হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়। এরপর কিছু দিন কাজ বন্ধ থাকার পর রিসিভারের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিবাদীরা নির্মাণ কাজ চলমান রাখেন। বিষয়টি রিসিভারকে জানান বাদীপক্ষ। তারপর কিছুদিন কাজ বন্ধ রেখে আবারো নির্মাণ কাজ চলমান রাখেন বিবাদীরা।
এদিকে বুধবার (১৪ জুন) বিকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, আদালত কর্তৃক রিসিভার নিয়োগকৃত সম্পত্তিতে পাকা দালানঘর নির্মাণ কাজ চলছে। অভিযোগের একজন বিবাদী বড় ভাই প্রবাস ফেরত সামছুল আলম নির্মাণ কাজের তদারকি করতে দেখা গেছে। এ সময় তিনি ও তার সাথে থাকা লোকজন সংবাদকর্মীর নির্মাণ কাজের স্থলে ছবি তোলা ও ভিডিও ধারণে বাধা প্রদানসহ তাঁর সাথে অশোভন আচরণ করেন বলে জানান ওই সংবাদকর্মী।
এ বিষয়ে মোখলেছুর রহমানের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে, তিনি কোন বক্তব্য না দিয়ে ওই বাড়িতে (ঘটনাস্থল) যাওয়ার কথা বলে ফোন রেখে দেন। পরবর্তীতে সংবাদকর্মীরা তার মুঠোফোনে একাধীকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ এবং পরবর্তীতে ফোন ব্যাক না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এ দিকে রিসিভারের চোখ ফাঁকি দিয়ে কাজ করার বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ মুঠোফোন জানান, আমি ঘটনাস্থলে লোক পাঠিয়েছি বিষয়টি কঠোরভাবে দেখছি।