মোহাম্মদ হাবীব উল্যাহ:
জীবিকার তাগিদে ও পারিবারিক স্বচ্ছলতার আশায় ৭ বছর পূর্বে সৌদিআরবে পাড়ি দেন চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মোরশেদ আলম (৩৫)। সবকিছু ঠিকঠাক মতোই চলছিল। পরিবারের সদস্যদের সাথে তিনি প্রতিনিয়ত কথা বলতেন, মাস শেষে দেশে টাকাও (রেমিট্যান্স) পাঠাতেন। কিন্তু গত একমাস যাবৎ তাঁর সাথে কথা নেই।
কিভাবে পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলেন, আর দেশে টাকা পাঠাবেন মো. মোরশেদ আলম। তিনি যে লাশ হয়ে সৌদিআরবের একটি হাসপাতালের হিমাঘারে পড়ে আছেন। গত ১৫ এপ্রিল (শনিবার) সৌদিআরবের নাজরান এলাকায় মোটরসাইকেল ও প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।
নিহতের এক মাস পার হতে যাচ্ছে। তারপরেও লাশ দেশে আসেনি। কবে লাশ দেশে আসবে, জানেন না মা’সহ পরিবারের লোকজন। লাশ ফিরে পেতে বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। তাই আহাজারি করছেন স্বজনরা। তিনি উপজেলার বড়কুল পূর্ব ইউনিয়নের দিগছাইল গ্রামের বেপারী বাড়ীর মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে।
নিহতের ভাই আব্দুস সামাদ বলেন, গত ২৩ এপ্রিল সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান আমার ভাই মোরশেদ আলম। এরপর লাশ ফিরে পেতে ভাতিজা এমরানসহ কয়েকবার ঢাকা যাই। অনেক হয়রানির পর সর্বশেষ এয়ারপোর্টে গিয়ে কিছু কাগজপত্র ঠিক করে সৌদি দূতাবাসে জমা দেই। পরবর্তী কি হবে বা করণীয় কি, তা আমাদের বলেনি।
তিনি বলেন, সেখানকার ফোরম্যান কুমিল্লার সুমন সৌদিআরবের সকল কাগজপত্র ঠিক করে রাখলেও বাংলাদেশ থেকে কিয়ারেন্স না পাওয়া লাশ হস্তান্তর হচ্ছে না বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই, আমার ভাইয়ের লাশ দ্রুত দেশে আনার বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মজিব বলেন, নিহতের পরিবার আমার কাছে যেভাবে সহযোগিতা চেয়েছেন, ওই সময়ে আমি চেষ্টা করেছি, তাদেরকে সহযোগিতা করার জন্য। কিন্তু পরবর্তীতে কি হয়েছে, তা তারা আমাকে জানায়নি। বিষয়টি আমি এমপি (সংসদ সদস্য) স্যারের সাথে যোগাযোগ করে সহযোগিতা করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, নিহত মোরশেদ আলমের মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে প্রয়োজনী কোন কাগজপত্র বা সহযোগিতার প্রয়োজন হলে, আমি তা করবো।