বিশেষ প্রতিবেদক:
চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে শীত মৌসুমে প্রতিদিন ভোর ৬টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত দুই ঘন্টা অস্থায়ী হাট বসে। এই সময়ের মধ্যে চরাঞ্চল থেকে আসা শাক সব্জি, মাছ, হাঁস ও মুরগী বিক্রি হয়ে যায়। বিশেষ করে সব্জি ক্রয় করার জন্য বেপারীদের ভীড় থাকে। টাটকা এসব সব্জির চাহিদা মেঘনার পূর্ব পাড়ে বাজারগুলোতে। মুহুর্তের মধ্যে কয়েক লাখ টাকার লেন-দেন হয় এই হাঁটে। চরাঞ্চলের মানুষের জীবন সংগ্রামের এটি একটি অংশ।
বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকালে উপজেলার তেলির মোড় লঞ্চঘাটে গিয়ে দেখাগেছে এই হাটের বিকিনিকি। ভোর থেকেই মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় নীল কমল ইউনিয়নের মাঝের চর, ইশানবালাসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি চর থেকে ট্রলার করে লোকজন শাকসব্জি, মাছ, হাঁস ও মুরগী নিয়ে আসছে। এর মধ্যে চরাঞ্চলের লাউ, কুমুড়, টমেটো, বেগুন, আলু, মরিচ, ধনিয়া পাতা, কাঁচা ও পাকা কলা ইত্যাদি বেশী আমদানি হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদ বিল্লাহ ও গিয়াস উদ্দিন সবুজ জানান, চরাঞ্চলের মানুষের জীবন জীবীকা নির্বাহ করে কৃষি কাজ ও মৎস্য আহরণ করে। শীত মৌসুমে মনোরম পরিবেশে তেলির মোড় লঞ্চঘাটের এই হাট জমজমাট থাকে। উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে মানুষ ছুটে আসে টাটকা সব্জি ও মাছ ক্রয় করার জন্য। তবে ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়ে সকাল পৌঁনে ৮টা থেকে ৮টার মধ্যে বাজার শেষ হয়ে যায়। কারণ পাইকারী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সব্জি ক্রয় করে খুচরা ব্যবসায়ীরা গ্রামের বাজারে এসব সব্জি বিক্রি করেন।
উপজেলার উত্তর আলগী থেকে আসা ক্রেতা মানসুর জানান, চরাঞ্চল থেকে আসা মাছগুলো বরফ ছাড়া। পোয়া মাছ প্রতি কেজি ১২০-১৫০টাকা, বাটা মাছ প্রতি কেজি ১৫০-২০০টাকা, মিশ্রিত ছোট মাছ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, গুড়া চিংড়ি ১০০-১২০ টাকা কেজি। বেশীর ভাগ ছোট মাছই নিয়ে আসে জেলেরা। মৌসুম না থাকায় ইলিশের আমদানি তেমন নেই। জাটকা সাইজের মাঝে মাঝে পাওয়া যায়।
পাইকারী সব্জি বিক্রেতা সেলিম মুন্সী জানান, চরাঞ্চল থেকে আসা শাক সব্জি খুবই টাটকা। দামও কম। পাইকারী প্রতি কেজি টমেটো ৩০-৪০ টাকা, বেগুন ১০-১৫ টাকা, লাউ প্রতি পিস ২৫-৩০টাকা, কুমুড় প্রতি পিস ৩০-৫০টাকা, লাল শাক প্রতিকেজি ১৫-২০টাকা, মুলা প্রতিকেজি ৮-১০টাকা, কাঁচা কলা প্রতি হালি ১০-১২টাকা, নতুন আলু প্রতি কেজি ২০-২৫টাকা, ধনিয়া পাতা কেজি ২০-২৫টাকা।
উপজেলার মহজমপুর গ্রামের হাঁস-মুরগী ক্রেতা জাহাঙ্গীর জানান, চরাঞ্চল থেকে আসা হাঁস-মুরগী ক্রয় করে আমরা শহরে নিয়ে বিক্রি করি। আবার অনেক সময় হোটেল ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করা হয়। একজোড়া দেশী হাঁস ক্রয় করা হয় সাড়ে ৫শ’ থেকে ৬শ’ টাকা। এক জোড়া ছোট সাইজের মুরগী ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা।