• ঢাকা
  • শনিবার, ১১ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৮শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২৫ মে, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২৫ মে, ২০১৯

‘দারিদ্র্যের যন্ত্রণায় লিচু খেতে চাওয়ায় সেই দুই সন্তানকে হত্যা করেছে বাবা’

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

‘আর্থিক অসচ্ছলতার’ কারণে সন্তানদের ভরণ-পোষণ ঠিকমতো দিতে না পারার যন্ত্রণা থেকে নরসিংদীতে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছেন এক বাবা।

আটকের পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে দুই সন্তানকে হত্যার কথা স্বীকার করে এমন দাবি করেছে নিহতদের বাবা শফিকুল ইসলাম।

শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ (বিপিএম)। তবে ঘাতক বাবা শফিকুলকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে মনে করছে পুলিশ।

নিহতরা হলো, মনোহরদী উপজেলার চালাকচর গ্রামের শফিকুল ইসলামের মেয়ে তাইন আক্তার (১১) ও তাইবা আক্তার (৪)।

আটক শফিকুল ইসলাম একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরির নিরাপত্তা প্রহরী হিসেবে কর্মরত বলে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন আহমেদ (বিপিএম) বলেন, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮ টায় নরসিংদী পৌর শহরের লঞ্চ টার্মিনালের টয়লেটে দুজনের লাশ পড়ে আছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পরে লঞ্চ টার্মিনালের টয়লেট থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।

আরো পড়ুন : লিচু খেতে চাওয়ায় দুই শিশু কন্যাকে হত্যা করলেন বাবা

তিনি জানান, এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। শুক্রবার রাতেই নিহতের বাবা শফিকুল ইসলামকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটক শফিকুল ইসলাম পুলিশের নিকট হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।

পুলিশ সুপার জানান, মনোহরদীর চালাকচরের গ্রামের বাড়ি থেকে দুই সন্তানকে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশ্যে শিবপুর নিয়ে আসে বাবা শফিকুল ইসলাম। চিকিৎসক না থাকায় সে তার সন্তানদের নরসিংদী লঞ্চ টার্মিনালে ঘুরতে নিয়ে আসেন। ওই সময় তার ছোট মেয়ে তার কাছে লিচু খেতে চায়। কিন্তু তার কাছে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না। তার ওপর সামনে ঈদ। সংসারের খরচ ও সন্তানদের ঈদের জামা-কাপড় দিতে হবে। এসব ভেবে শফিকুল হিতাহিত জ্ঞানশূন্য হয়ে যায়। প্রথমে ছোট মেয়েকে লঞ্চ টার্মিনালের বাথরুমে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে বড় মেয়েকে একই কায়দায় হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় নিহতের পরিবার এখনো মামলা দায়ের করেনি। পরিবার মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে বলে পুলিশ সুপার জানান। তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে শফিকুল ইসলামকে মানসিক ভারসাম্যহীন মনে হয়েছে। সে একেক বার একক রকম কথা বলছে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চালাকচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফকরুল মান্নান মুক্তো বলেন, অভিযুক্ত শফিকুল ইসলামের বাবা-মা শিক্ষক ছিল। তাদের সংসারে অভাব অনটন ছিল এমন তথ্য আমাদের জানা নেই। এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবেই আমরা দেখেছি। কিন্তু কী কারণে, কেন নিজের দুই সন্তানকে হত্যা করেছে তা আমরা ভেবে পাচ্ছি না।

ঘাতক বাবার দারিদ্র্যের প্রসঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক কর্মকর্তা বলেন, অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম নরসিংদীতে ভাড়া বাসায় থাকত। ফলে তার আয়ের বড় একটি অংশ ভাড়ায় ব্যয় হয়ে যেতো। বাকি টাকা দিয়ে সংসার চালানো তার জন্য কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ত। পাশাপাশি তার যতটুকু না অভাব তার চেয়ে বেশি সে অভাব অনুভব করত। এসব মানসিক যন্ত্রণা থেকেই সে নিজের সন্তানদের হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • সারা দেশ এর আরও খবর
error: Content is protected !!