চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ, যেকোন মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা

  • আপডেট: ০৯:০৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০২২
  • ৩৭

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে গত কয়েক বছর বালু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে গত কয়েক বছর বালু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী। তারা এতটাই শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর রেলওয়ের পক্ষ থেকে মামলা হওয়ার পরও পাইপগুলো অপসারণ করছেন না। বরং প্রকাশ্যে শহর এবং গ্রাম এলাকার জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করছে। শ্রেণী পরিবর্তন ছাড়া জমি ও জলাশয় ভরাট না করার বিধান থাকলেও ভূমি অফিস থেকে নেয়া হচ্ছে না কোন আইনী ব্যবস্থা। যার ফলে এখন বালু ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে চাঁদপুর সদর।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ ঘুরে দেখাগেছে, চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক রেপথ সুড়ঙ্গ, সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা এবং শাহতলী হামানকর্দি এলাকায় ব্রিজের নীচে ৩টি ড্রেজার পাইপ বসানো রয়েছে। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন সুড়ঙ্গ পাইপটি গত ৪ বছরের অধিক সময় বসানো। একবারও উচ্ছেদ হয়নি। সদরের মৈশাদী ও শাহতলীতে একই অবস্থা।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চাঁদপুর সদরের তিন ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রেলওয় (জিআরপি) থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযান কিংবা বাস্তবে কোন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেয়নি রেলওয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর আগে চাঁদপুর সদরের মধুরোড স্টেশনের পশ্চিম পাশে ব্রিজের নীচের ড্রেজার পাইপ লাইনটি উচ্ছেদ করে পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যায় লাকসাম থেকে আসা রেলওয়ের এই পথের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাবৃন্দ।

সদর উপজেলার শাহতলী, মৈশাদী ও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, এলাকার লোকজনই ড্রেজার ও বালু ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। যে কারণে কেউ কোন ধরণের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। মৈশাদী ইউনিয়নের ড্রেজার পাইপ দিয়ে গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ২০টি জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট হয়েছে। মহল্লার সড়কে প্রবেশ করলেই ড্রেজার পাইপ দেখা যায়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তণ না করে জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করলে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এখন যদি কেউ ভরাট করে থাকে আমাদের কাছে তথ্য কিংবা অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওসি মুরাদ উল্যাহ বাহার জানান, আমি এই থানায় এক বছর কাজ করছি। ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমি থাকা অবস্থায় মামলা হয়নি। আগে হতে পারে, আমার জানা নেই। তবে আমি আসার পরে শাহতলীর পরে একটি উচ্ছেদ করেছি। এখন যারা ড্রেজার বসিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রেলের সংশ্লিষ্টরা মামলা করলে আমি ব্যবস্থা নিব।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা কুমিল্লার এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, রেলপথের চাঁদপুর অংশে ৪টি ড্রেজার পাইপ ছিল। আমি যখন লাকসাম ছিলাম তখন মধুরোড স্টেশন এলাকার একটি ড্রেজার পাইপ অভিযান করে উচ্ছেদ করি এবং পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যাই। এখন আরো ৩টি আছে। এগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন এদের বিরুদ্ধ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

দেশে HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ, যেকোন মূহুর্তে ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা

আপডেট: ০৯:০৯:১১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ জুলাই ২০২২

বিশেষ প্রতিনিধি ॥

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ সুড়ঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে গত কয়েক বছর বালু ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে একাধিক অসাধু ব্যবসায়ী। তারা এতটাই শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর রেলওয়ের পক্ষ থেকে মামলা হওয়ার পরও পাইপগুলো অপসারণ করছেন না। বরং প্রকাশ্যে শহর এবং গ্রাম এলাকার জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করছে। শ্রেণী পরিবর্তন ছাড়া জমি ও জলাশয় ভরাট না করার বিধান থাকলেও ভূমি অফিস থেকে নেয়া হচ্ছে না কোন আইনী ব্যবস্থা। যার ফলে এখন বালু ব্যবসায়ীদের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে চাঁদপুর সদর।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথ ঘুরে দেখাগেছে, চাঁদপুর শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক রেপথ সুড়ঙ্গ, সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের মির্জাপুর এলাকা এবং শাহতলী হামানকর্দি এলাকায় ব্রিজের নীচে ৩টি ড্রেজার পাইপ বসানো রয়েছে। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়ক গুচ্ছ গ্রাম সংলগ্ন সুড়ঙ্গ পাইপটি গত ৪ বছরের অধিক সময় বসানো। একবারও উচ্ছেদ হয়নি। সদরের মৈশাদী ও শাহতলীতে একই অবস্থা।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, চাঁদপুর সদরের তিন ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রেলওয় (জিআরপি) থানায় মামলা হয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে অভিযান কিংবা বাস্তবে কোন ব্যবস্থা এখন পর্যন্ত নেয়নি রেলওয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এর আগে চাঁদপুর সদরের মধুরোড স্টেশনের পশ্চিম পাশে ব্রিজের নীচের ড্রেজার পাইপ লাইনটি উচ্ছেদ করে পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যায় লাকসাম থেকে আসা রেলওয়ের এই পথের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাবৃন্দ।

সদর উপজেলার শাহতলী, মৈশাদী ও শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে আলাপ করলে তারা জানান, এলাকার লোকজনই ড্রেজার ও বালু ব্যবসার সাথে জড়িত। তবে তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক পরিচয় আছে। যে কারণে কেউ কোন ধরণের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। মৈশাদী ইউনিয়নের ড্রেজার পাইপ দিয়ে গত কয়েক বছরে কমপক্ষে ২০টি জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট হয়েছে। মহল্লার সড়কে প্রবেশ করলেই ড্রেজার পাইপ দেখা যায়।

চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ হেলাল চৌধুরী বলেন, জমির শ্রেণী পরিবর্তণ না করে জলাশয় ও ফসলি জমি ভরাট করলে আমরা আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এখন যদি কেউ ভরাট করে থাকে আমাদের কাছে তথ্য কিংবা অভিযোগ আসলে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানার ওসি মুরাদ উল্যাহ বাহার জানান, আমি এই থানায় এক বছর কাজ করছি। ড্রেজার ও বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আমি থাকা অবস্থায় মামলা হয়নি। আগে হতে পারে, আমার জানা নেই। তবে আমি আসার পরে শাহতলীর পরে একটি উচ্ছেদ করেছি। এখন যারা ড্রেজার বসিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে রেলের সংশ্লিষ্টরা মামলা করলে আমি ব্যবস্থা নিব।

চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের দায়িত্বে থাকা কুমিল্লার এসএসএই (পথ) উপসহকারী প্রকৌশলী লিয়াকত আলী মজুমদার বলেন, রেলপথের চাঁদপুর অংশে ৪টি ড্রেজার পাইপ ছিল। আমি যখন লাকসাম ছিলাম তখন মধুরোড স্টেশন এলাকার একটি ড্রেজার পাইপ অভিযান করে উচ্ছেদ করি এবং পাইপগুলো জব্দ করে নিয়ে যাই। এখন আরো ৩টি আছে। এগুলোর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এখন এদের বিরুদ্ধ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।