অন্যের জন্য গর্ত খুঁড়তে গেলে নিজেই সে গর্তে পড়ে যায়। ভারতের সাবেক মাদকদ্রব্য কর্মকর্তার সমীর ওয়াংখেড়ের ক্ষেত্রে অন্তত তাই ঘটতে যাচ্ছে। শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানকে ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে যাচ্ছেন সমীর। আরিয়ান খানকে নিয়ে ‘অন্যায় তদন্ত’ করার জন্য তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, এমনটাই জানাচ্ছে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি।
আজ শুক্রবার কেন্দ্রীয় মাদক নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে কোর্ডেলিয়া প্রমোদতরী মাদক মামলায় খালাস দেওয়া হয়েছে শাহরুখের ছেলে আরিয়ান খানকে।
আরিয়ানের বিরুদ্ধে উপযুক্ত তথ্যপ্রমাণ নেই, স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এনসিবি। এদিন কেন্দ্রীয় সংস্থার পক্ষ থেকে এই মামলায় যে চার্জশিট দায়ের করা হয়েছে সেখানে নাম নেই আরিয়ানের।
স্বভাবতই প্রশ্নের মুখে এনসিবির গ্রহণযোগ্যতা এবং কর্মপদ্ধতি। গত ২রা অক্টোবর কোর্ডেলিয়া ক্রুজে অভিযান চালিয়েছিল এনসিবির যে দল তাঁদের তদন্তে বিস্তর পার্থক্য অসাঞ্জস্যতা পাওয়া গেছে তা একপ্রকার মেনে নিয়েছে এনসিবি।
সংবাদমাধ্যমকে এনসিবির ডিজি এসএন প্রধান জানিয়েছেন, ‘প্রাথমিকভাবে যে তদন্ত করা হয়েছিল তাতে বেশ কিছু ঘাটতি রয়েছে, বিশেষত তৎকালীন জোনাল ডিরেক্টর সমীর ওয়াংখেড়ে যেভাবে মামলাটি চালনা করেছেন’।
জানা গেছে, আরিয়ান মামলা থেকে আগেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল সমীর ওয়াংখেড়েকে। তৎকালীন এনসিবির জোনাল ডিরেক্টরের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়া, হুমকি দেওয়াসহ একাধিক অভিযোগ উঠেছিল তার বিরুদ্ধে।
সংবাদ সংস্থা এএনআইয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আরিয়ান মামলার ভুলভ্রান্তিপূর্ণ তদন্তের কারণে কেন্দ্র সরকার ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রাক্তন এনসিবি কর্মকর্তা সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ভুয়া কাস্ট সার্টিফিকেটের মামলায় ইতিমধ্যেই সমীর ওয়াংখেড়ের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছে কেন্দ্র সরকার।
২০২০ সালের ৩১ অগস্ট এনসিবির মুম্বাইয়ের জোনাল ডিরেক্টর পদে যোগ দিয়েছিলেন সমীর ওয়াংখেড়ে। ইন্ডিয়ান রেভেনিউ সার্ভিসের ২০০৮ ব্যাচের ওই কর্মকর্তাকে কার্যত ‘ধার’ করেই এনসিবি-তে নিয়ে আসা হয় সুশান্ত সিং রাজপুত মৃত্যু মামলার সম্পর্কিত মাদক মামলার তদন্তের দায়িত্ব দিয়ে।
কার্যকাল শেষ হওয়ার পরেও এনসিবিতে তিন মাস মেয়াদ বৃদ্ধি হয়েছিল তাঁর। সেই সময়ই ঘটে যায় আরিয়ান খান মাদক মামলা। আরিয়ান বিতর্কের মাঝেই ৩১ ডিসেম্বর এনসিবিতে শেষ হয় সমীর ওয়াংখেড়ের কার্যকাল। এখন তিনি ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্সে (ডিআরআই)-এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তা।