পবিত্র হজের সৌভাগ্য যাদের

  • আপডেট: ০১:০৪:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯
  • ৭৯

notunerkotha.com

প্রেমময় ইবাদত হজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো পবিত্র কাবা। মুসলিম মিল্লাতের পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর পবিত্র হাতে আল্লাহ পবিত্র বাইতুল্লাহর পুনঃনির্মাণ করান। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ দিলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী (ইতিকাফকারী) এবং রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর।’ (সূরা বাকারা : ১২৬)। হজরত ইবরাহিম (আ.) বাইতুল্লাহকে পুনঃনির্মাণের পর তার নির্মাণকে কবুল করার জন্য যখন মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে দোয়া করলেন, আল্লাহতায়ালা ইবরাহিমকে (আ.) তার দোয়া কবুল করে নির্দেশ দিলেন, ‘আর হে ইবরাহিম! তুমি মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও। তারা দূরদূরান্তের আনাচে-কানাচে থেকে তোমার কাছে আসবে হেঁটে। আসবে সব ধরনের ক্ষীণকায় উষ্ট্রগুলোর পিঠে সওয়ার হয়ে। (সূরা হজ : ২৭)। এ আয়াতের তাফসিরে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবা শরিফ নির্মাণের পর আল্লাহতায়ালাকে বললেন, হে আল্লাহ আমি আপনার নির্দেশে বাইতুল্লাহকে নির্মাণ করেছি। অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাকে হজের ঘোষণা দিতে নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, আমার আওয়াজ কী করে (অতদূর) পৌঁছাবে? আল্লাহতায়ালা বললেন, তুমি ঘোষণা করে দাও। তোমার ঘোষণা ও আওয়াজ বিশ্ব মানবতার কানে কানে আমিই পৌঁছে দেব। হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন হে রব! ঘোষণায় কী বলব? আল্লাহতায়ালা বললেন, বলো- ‘হে মানবম-লী! তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে এবং জান্নাতে পৌঁছাতে আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন’। ইবরাহিম (আ.) ঘোষণা দিলে আসমান ও জমিনের সবাই সে ঘোষণা শুনতে পায়। (তাফসিরে কুরতুবি : ১২/৩৭)।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, হজরত ইবরাহিম (আ.) আবু কুবাইস পাহাড়ে উঠে নিজের দুই কানে আঙ্গুল দিয়ে সুউচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, হে মানব সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। তোমরা তোমাদের প্রভুর আহ্বানে সাড়া দাও। তখন পুরুষের ঔরসে ও নারীর গর্ভে যারা ছিল সবাই ‘লাব্বাইকা’ বলে সাড়া দিল। (তাফসিরে রুহুল মাআনি : ১৩/৪৮)। বর্ণনান্তরে হজরত ইবরাহিম (আ.) সাফা পাহাড় অথবা মাকামে ইবরাহিমে দাঁড়িয়ে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। হজরত সাইদ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেন, হজের জন্য বিশ্বমানবতাকে আহ্বান করার পর পাহাড় ঝুঁকে পড়ে। সমস্ত দুনিয়ায় এ ঘোষণার আওয়াজ গুঞ্জরিত হয়। পিতার ঔরসে, মায়ের গর্ভে যারা ছিল তাদের কানেও আল্লাহতায়ালা সেই শব্দ পৌঁছে দেন। পাথর, বৃক্ষরাজি এবং প্রত্যেক ওই ব্যক্তি যার হজ নসিব হবে সবাই সমস্বরে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলে ওঠে। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৫/৪১৪)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাব্বাইকের সেই পবিত্র মিছিলে শরিক হওয়ার তৌফিক দিন!

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

পবিত্র হজের সৌভাগ্য যাদের

আপডেট: ০১:০৪:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯

notunerkotha.com

প্রেমময় ইবাদত হজের মূল কেন্দ্রবিন্দু হলো পবিত্র কাবা। মুসলিম মিল্লাতের পিতা হজরত ইবরাহিম (আ.) এর পবিত্র হাতে আল্লাহ পবিত্র বাইতুল্লাহর পুনঃনির্মাণ করান। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আমি ইবরাহিম ও ইসমাইলকে আদেশ দিলাম, তোমরা আমার গৃহকে তওয়াফকারী, অবস্থানকারী (ইতিকাফকারী) এবং রুকু-সেজদাকারীদের জন্য পবিত্র কর।’ (সূরা বাকারা : ১২৬)। হজরত ইবরাহিম (আ.) বাইতুল্লাহকে পুনঃনির্মাণের পর তার নির্মাণকে কবুল করার জন্য যখন মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে দোয়া করলেন, আল্লাহতায়ালা ইবরাহিমকে (আ.) তার দোয়া কবুল করে নির্দেশ দিলেন, ‘আর হে ইবরাহিম! তুমি মানুষের মাঝে হজের ঘোষণা দাও। তারা দূরদূরান্তের আনাচে-কানাচে থেকে তোমার কাছে আসবে হেঁটে। আসবে সব ধরনের ক্ষীণকায় উষ্ট্রগুলোর পিঠে সওয়ার হয়ে। (সূরা হজ : ২৭)। এ আয়াতের তাফসিরে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ইবরাহিম (আ.) পবিত্র কাবা শরিফ নির্মাণের পর আল্লাহতায়ালাকে বললেন, হে আল্লাহ আমি আপনার নির্দেশে বাইতুল্লাহকে নির্মাণ করেছি। অতঃপর আল্লাহতায়ালা তাকে হজের ঘোষণা দিতে নির্দেশ দিলেন। তিনি বললেন, আমার আওয়াজ কী করে (অতদূর) পৌঁছাবে? আল্লাহতায়ালা বললেন, তুমি ঘোষণা করে দাও। তোমার ঘোষণা ও আওয়াজ বিশ্ব মানবতার কানে কানে আমিই পৌঁছে দেব। হজরত ইবরাহিম (আ.) বললেন হে রব! ঘোষণায় কী বলব? আল্লাহতায়ালা বললেন, বলো- ‘হে মানবম-লী! তোমাদেরকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিতে এবং জান্নাতে পৌঁছাতে আল্লাহতায়ালা তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন’। ইবরাহিম (আ.) ঘোষণা দিলে আসমান ও জমিনের সবাই সে ঘোষণা শুনতে পায়। (তাফসিরে কুরতুবি : ১২/৩৭)।

অন্য বর্ণনায় এসেছে, হজরত ইবরাহিম (আ.) আবু কুবাইস পাহাড়ে উঠে নিজের দুই কানে আঙ্গুল দিয়ে সুউচ্চ কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, হে মানব সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের ওপর হজ ফরজ করেছেন। তোমরা তোমাদের প্রভুর আহ্বানে সাড়া দাও। তখন পুরুষের ঔরসে ও নারীর গর্ভে যারা ছিল সবাই ‘লাব্বাইকা’ বলে সাড়া দিল। (তাফসিরে রুহুল মাআনি : ১৩/৪৮)। বর্ণনান্তরে হজরত ইবরাহিম (আ.) সাফা পাহাড় অথবা মাকামে ইবরাহিমে দাঁড়িয়ে এ ঘোষণা দিয়েছিলেন। হজরত সাইদ ইবনে জুবাইর (রা.) বলেন, হজের জন্য বিশ্বমানবতাকে আহ্বান করার পর পাহাড় ঝুঁকে পড়ে। সমস্ত দুনিয়ায় এ ঘোষণার আওয়াজ গুঞ্জরিত হয়। পিতার ঔরসে, মায়ের গর্ভে যারা ছিল তাদের কানেও আল্লাহতায়ালা সেই শব্দ পৌঁছে দেন। পাথর, বৃক্ষরাজি এবং প্রত্যেক ওই ব্যক্তি যার হজ নসিব হবে সবাই সমস্বরে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ বলে ওঠে। (তাফসিরে ইবনে কাসির : ৫/৪১৪)। আল্লাহ আমাদের সবাইকে লাব্বাইকের সেই পবিত্র মিছিলে শরিক হওয়ার তৌফিক দিন!