মহিউদ্দিন আল আজাদ॥
ফরিদগঞ্জে পূর্ব বিরোধের জেরে ভগ্নিপতির ছুরিকাঘাতে শ্যালকের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার সুবিদপুর পূর্ব ইউনিয়নের দিগধাইর গ্রামের সর্দার বাড়ির দোকানের সামনে এ ছুরিকাঘাতের ঘটনা ঘটে। শ্যালকের নাম কামরুল হাসান রতন (৪০)। তিনি ওই গ্রামের মৃত আবুল বাসারের ছেলে।
হত্যাকারী দুলাভাই শাহদাত সর্দার (৫১) একই গ্রামের মৃত আলী আহম্মদের ছেলে। এই ঘটনার সাথে মৃত আলী আহম্মদের ছেলে শাহজাহান সর্দার (৬৫) ও আব্বাস সর্দার (৫৮) এবং শাহজাহান সর্দারের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৩০) ও শরীফ হোসেন (২৮) জড়িত বলে দাবী করেন নিহতের পরিবার।
এই ঘটনায় মো. জসিম উদ্দিন (৫৫) নামের অপর একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি গাজীপুর জেলার মধ্য খাইলপুর গ্রামের মৃত শরাফত হোসেনের ছেলে। তিনি নিহত কামরুল হাসান রতনের খালু।
এ বিষয়ে হত্যাকারী শাহাদাত সর্দারের স্ত্রী আনজুম আরা স্বপ্না বলেন, টাকা ও সম্পদের জন্য আমার স্বামী দীর্ঘদিন ধরে আমাকে শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমার ও আমার সন্তানদের সুখের কথা চিন্তা করে আমার ভাইয়েরা তাকে সবসময় টাকা দিয়ে সহযোগিতা করছে। সবশেষ টাকার পাশাপাশি সম্পদের জন্য আমার ভাইদের চাপসৃষ্টি করতে থাকে। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, সম্পদ না পেয়ে আমার স্বামী ও তার ভাই-ভাতিজারা আমার ভাইদের হুমকি-ধমকি দেয়। আজ (মঙ্গলবার) বিকালে আমার ভাইকে (কামরুল হাসান রতন) একা পেয়ে আমার স্বামীসহ তারা সবাই ছুরিকাঘাত করে মেরেই ফেলে। তিনি পুলিশের কাছে এই হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবী করনে।
হত্যাকারী ছেলে সাজ্জাদ হোসেন শুভ জানান, টাকা ও সম্পদের জন্য বাবা আমার মাকে যথেষ্ট শারিরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছেন। পাশাপাশি আমার মামাদেরও মানসিক নির্যাতন করতেন। তারপর মামারা আমার বাবা ও আমাদেরকে খুব সহযোগিতা করতেন। এ নিয়ে দুই পরিবারের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি হয়। যা সমাধানের লে গত তিন দিন আগে আমরা ঢাকা থেকে বাড়িতে আসি।
তিনি বলেন, কিন্তু সমাধানের আগেই আজ (মঙ্গলবার) বিকালে বাবা ও আমার চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা মিলে মামাকে (কামরুল হাসান রতন) ছুরিকাঘাত করে মেরে ফেলে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মাওলা বলেন, আমরা কামরুল হাসান রতনকে হাসপাতালে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। অপর আহত জসিম উদ্দিনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেপার করা হয়েছে।
হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ জানান, খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিহতের মরদেহ পুলিশি হেফাজতে এবং ফরিদগঞ্জ থানায় বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
ফরিদগঞ্জ থানার ওসি মো. শহীদুল্যাহ জানান, ঘাতক শাহাদতকে আটক করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হবে।