মনিরুল ইসলাম মনির: চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় গ্রামীণ নারীদের বাল্যবিবাহ রোধ, নারীর প্রতি সহিংসতা, জঙ্গিবাদ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি ও সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের স্বনির্ভর হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে সরকারের ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প।
জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের এগিয়ে নিতে আলোর পথ দেখাচ্ছেন ‘তথ্য আপা’। তথ্য কেন্দ্রে নারীদের সমস্যা চিহ্নিত করে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা ও পাশাপাশি বিভিন্ন বিষয়ে নারীদের দ করে গড়ে তুলতে কাজ করছে তথ্য আপা।
বুধবার (৯ মার্চ) উঠান বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয় ষাটনল ইউনিয়নের পশ্চিম লালপুর গ্রামের ৬নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে। উঠান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিা অফিসার আবদুল কাইয়ুম খান, তথ্যসেবা কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক, দুইজন তথ্যসেবা সহকারী ও প্রশিণার্থী নারীগণ।
তথ্য কেন্দ্রে ছাড়াও তথ্য আপারা বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ও গ্রামের দরিদ্র নারীদের তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক বিভিন্ন সেবা প্রদান করে আসছেন। এ ছাড়াও তথ্য আপারা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে উঠান বৈঠক করে নারীদের বিভিন্ন বিষয়ে সচেতন করে তুলছেন। ইতিমধ্যে এই তথ্য কেন্দ্রটি অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত নারীদের কাছে ভরসাস্থল হয়ে উঠছে।
উপজেলা ‘তথ্য কেন্দ্র’ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়নে পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করছে তথ্য আপা।
এ তথ্য আপা কেন্দ্রে একজন তথ্য আপা (তথ্য সেবা কর্মকর্তা) ও দুজন তথ্য সেবা সহকারী রয়েছেন। তথ্য আপা দ্বিতীয় প্রকল্পে এ তথ্যকেন্দ্র উঠান বৈঠকের মাধ্যমে সেবা প্রদান করা হয় ৪ হাজার ৫০৬ জনকে। ডোর টু ডোর সেবা প্রদান করা হয় ১৮ হাজার ৫৯৪ জনকে এবং ৫২টি উঠান বৈঠকের মাধ্যমে ২৪শ’ জনতে সেবা প্রদান করা হয়। সর্বমোট সেবা প্রদানের সংখ্যা ২৫ হাজার ৫শ’ জন নারীকে উপজেলা তথ্যকেন্দ্র থেকে সেবা প্রদান করা হয়েছে।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে তৃণমূলের নারীদের নিয়ে চলে উঠান বৈঠক। বৈঠকে অংশ নেন বিভিন্ন দপ্তরের বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, উপজেলার কর্মকর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা। শিা, কৃষি, আইন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, কম্পিউটার প্রশিণ, চাকরির আবেদন, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা, ভিজিডি কার্ডসহ বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করা হয় বৈঠকে অংশ নেওয়া নারীদের।
উপজেলার রাঢ়ীকান্দি গ্রামের আসমা আক্তার বলেন, তথ্য আপা অফিসে গিয়ে দুইবার চাকরির আবেদন করেছি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে চিকিৎসা সেবাও দিচ্ছে, ধন্যবাদ জানাই তথ্য আপাকে।
ছেংগারচর পৌরসভার কেশাইরকান্দি এলাকায় চাঁন বানু বেগম বলেন, কয়দিন আগে বাড়িতে আসছিল। ডায়াবেটিস পরীা করছি টাকা-পয়সা লাগে নাই। আমার মেয়েও ভর্তি পরীার জন্য আবেদন করছে তাদের অফিস গিয়ে।
তথ্য সেবা কর্মকর্তা তাসলিমা আক্তার বলেন, জাতীয় মহিলা সংস্থা কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন তথ্য আপা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে, তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে নারীদের মতায়ন প্রকল্পের তথ্য কেন্দ্রে। তৃণমূলের নারীদের সেবা প্রদান করাই এই প্রকল্পের কাজ। আমরা পিছিয়ে পড়া নারীদের নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজী শরিফুল হাসান বলেন, গ্রামীণ সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া নারীর দৈনন্দিন সমস্যা সমাধানের কাজ করছে। এ প্রকল্পের আওতায় নারীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সহযোগিতা করা হচ্ছে।