২ যুগ পর দুই মেরুর দুই নেতা এক সাথে

  • আপডেট: ০৩:৩৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯
  • ৫৯

অনলাইন ডেস্ক:

২ যুগ পর দুই মেরুর দুই নেতা এক সাথে হওয়ায় কচুয়ার রাজনীতিতে নানান গুঞ্জন চলছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই মেরুর দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি একে অপরের চির প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটের মাঠেও একই রকম প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দল। কচুয়াও এর বাইরে নয়। কচুয়ায় এ দুই দলের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলন। প্রায় এক যুগ ধরে মুখোমুখি দেখা যায়নি তাঁদেরকে। একটি মৃত্যু এবং জানাজা এ চরম বৈরীভাবাপন্ন দুই রাজনৈতিক নেতার মাঝে যেনো মহামিলন ঘটিয়ে দিলো। চলতি পথে হঠাৎ দেখা হলো তাঁদের মাঝে। সকলকে চমকে দিয়ে এগিয়ে এলেন দুজন। কুশল বিনিময় শেষে দুজনই আবেগে ডুবে থাকলেন কিছুক্ষণ। দুই মেরুর দুই রাজনীতিকের এই হঠাৎ সাক্ষাতের বিষয়টি মানুষের ভেতরও সৃষ্টি করেছে কৌতূহল। কেননা এঁরা দু’জন শুধু স্থানীয় রাজনীতিতেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

মঙ্গলবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলনের শ্বশুর ইউনুছ খানের লাশ ঢাকা থেকে কচুয়ার পালগিরী গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির এঙ্প্রিড সিএনজি স্টেশন থেকে জ্বালানি নেয়ার জন্যে লাশবাহী গাড়িসহ এহসানুল হক মিলনের গাড়ি বিরতি নেয়। ঠিক এ সময়ই আচমকা সেখানে উপস্থিত হন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি। তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকা থেকে কচুয়ায় যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় পথিমধ্যেই আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে যায় দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ড. আনম এহসানুল হক মিলনের। মুহূর্তের মধ্যেই যেনো উভয়ে বিগত দিনের বৈরিতা ভুলে গিয়ে এক হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে পরস্পর আলিঙ্গন করেন এবং চা চক্রে মিলিত হন। দুই নেতার মধ্যকার এই মহামিলন কচুয়ার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে একটি বিরল মুহূর্ত হিসেবে জাগরুক হয়ে থাকবে বলে কচুয়াবাসী মনে করেন।

গতকাল বাদ জোহর কচুয়ার পালগিরী খলিলুর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এহসানুল হক মিলনের শ্বশুর মরহুম ইউনুছ খানের জানাজা নামাজে দুই নেতাই অংশগ্রহণ করেন। জানাজায় দুই নেতার অংশগ্রহণের কারণে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী জানাজায় অংশ নেন। এ জানাজা অনুষ্ঠানে যেনো মহামিলন ঘটে কচুয়ার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা পরস্পরের মাঝে আলিঙ্গন করাসহ কুশল বিনিময়ে মিলিত হন।

ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মরহুম ইউনুছ খানের জানাজায় যোগদান শেষে মিলনকে সাথে নিয়ে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানাতে যান। ইউনুছ খানের জানাজা নামাজে উভয় দলের দুই নেতাসহ নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ কর্মীদের আচার-আচরণ, ভাববিনিময় ও সমবেদনা ব্যক্ত করার দৃশ্য গভীর আগ্রহে প্রত্যক্ষ করেন উৎসুক জনতা। তখন জনতার মাঝে গুঞ্জন ওঠে কচুয়ার দুই চরম বৈরীভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঝে বরফ গলতে শুরু করেছে! এটি অবশ্যই রাজনীতির জন্যে শুভ লক্ষণ বলে মনে করেন সবাই। এই জানাজায় যোগদানের মধ্য দিয়ে ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া দুুই দলের মধ্যকার দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মামলা-মোকদ্দমা এসবের অবসান ঘটে কচুয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে দু’দলের রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত হবে এমন আশার সৃষ্টি হয়েছে সর্বসাধারণের মাঝে।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

ফরিদগঞ্জে গণপিটুনিতে যুবকের মৃত্যু

২ যুগ পর দুই মেরুর দুই নেতা এক সাথে

আপডেট: ০৩:৩৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ জুলাই ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

২ যুগ পর দুই মেরুর দুই নেতা এক সাথে হওয়ায় কচুয়ার রাজনীতিতে নানান গুঞ্জন চলছে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই মেরুর দুটি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ-বিএনপি একে অপরের চির প্রতিদ্বন্দ্বী। ভোটের মাঠেও একই রকম প্রতিদ্বন্দ্বী এ দুই দল। কচুয়াও এর বাইরে নয়। কচুয়ায় এ দুই দলের দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী হচ্ছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলন। প্রায় এক যুগ ধরে মুখোমুখি দেখা যায়নি তাঁদেরকে। একটি মৃত্যু এবং জানাজা এ চরম বৈরীভাবাপন্ন দুই রাজনৈতিক নেতার মাঝে যেনো মহামিলন ঘটিয়ে দিলো। চলতি পথে হঠাৎ দেখা হলো তাঁদের মাঝে। সকলকে চমকে দিয়ে এগিয়ে এলেন দুজন। কুশল বিনিময় শেষে দুজনই আবেগে ডুবে থাকলেন কিছুক্ষণ। দুই মেরুর দুই রাজনীতিকের এই হঠাৎ সাক্ষাতের বিষয়টি মানুষের ভেতরও সৃষ্টি করেছে কৌতূহল। কেননা এঁরা দু’জন শুধু স্থানীয় রাজনীতিতেই নয়, জাতীয় রাজনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।

মঙ্গলবার সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আনম এহসানুল হক মিলনের শ্বশুর ইউনুছ খানের লাশ ঢাকা থেকে কচুয়ার পালগিরী গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দির এঙ্প্রিড সিএনজি স্টেশন থেকে জ্বালানি নেয়ার জন্যে লাশবাহী গাড়িসহ এহসানুল হক মিলনের গাড়ি বিরতি নেয়। ঠিক এ সময়ই আচমকা সেখানে উপস্থিত হন ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর এমপি। তিনি বিভিন্ন কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকা থেকে কচুয়ায় যাচ্ছিলেন। এ অবস্থায় পথিমধ্যেই আকস্মিকভাবে দেখা হয়ে যায় দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও ড. আনম এহসানুল হক মিলনের। মুহূর্তের মধ্যেই যেনো উভয়ে বিগত দিনের বৈরিতা ভুলে গিয়ে এক হৃদ্যতাপূর্ণ পরিবেশে পরস্পর আলিঙ্গন করেন এবং চা চক্রে মিলিত হন। দুই নেতার মধ্যকার এই মহামিলন কচুয়ার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে একটি বিরল মুহূর্ত হিসেবে জাগরুক হয়ে থাকবে বলে কচুয়াবাসী মনে করেন।

গতকাল বাদ জোহর কচুয়ার পালগিরী খলিলুর রহমানের মাজার প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত এহসানুল হক মিলনের শ্বশুর মরহুম ইউনুছ খানের জানাজা নামাজে দুই নেতাই অংশগ্রহণ করেন। জানাজায় দুই নেতার অংশগ্রহণের কারণে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের উপজেলা পর্যায়ের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী জানাজায় অংশ নেন। এ জানাজা অনুষ্ঠানে যেনো মহামিলন ঘটে কচুয়ার আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের মাঝে। এ সময় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা পরস্পরের মাঝে আলিঙ্গন করাসহ কুশল বিনিময়ে মিলিত হন।

ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর মরহুম ইউনুছ খানের জানাজায় যোগদান শেষে মিলনকে সাথে নিয়ে তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা ও সমবেদনা জানাতে যান। ইউনুছ খানের জানাজা নামাজে উভয় দলের দুই নেতাসহ নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ কর্মীদের আচার-আচরণ, ভাববিনিময় ও সমবেদনা ব্যক্ত করার দৃশ্য গভীর আগ্রহে প্রত্যক্ষ করেন উৎসুক জনতা। তখন জনতার মাঝে গুঞ্জন ওঠে কচুয়ার দুই চরম বৈরীভাবাপন্ন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঝে বরফ গলতে শুরু করেছে! এটি অবশ্যই রাজনীতির জন্যে শুভ লক্ষণ বলে মনে করেন সবাই। এই জানাজায় যোগদানের মধ্য দিয়ে ইতিপূর্বে ঘটে যাওয়া দুুই দলের মধ্যকার দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মামলা-মোকদ্দমা এসবের অবসান ঘটে কচুয়ায় শান্তিপূর্ণভাবে দু’দলের রাজনৈতিক কর্মকা- পরিচালিত হবে এমন আশার সৃষ্টি হয়েছে সর্বসাধারণের মাঝে।