• ঢাকা
  • সোমবার, ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০ ডিসেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ আপডেট : ১০ ডিসেম্বর, ২০২১

দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হবে : প্রধানমন্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার খেলোয়াড়দের যথাযথ প্রশিক্ষণের সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করবে। কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে বাংলাদেশের বিশ্বমানের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সক্ষমতা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রত্যেকটি বিভাগে একটি করে ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলব। বিকেএসপি প্রত্যেকটি বিভাগে আমরা করবো।’

বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনুর্ধ্ব-১৭) ও ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭)-২০২১ চূড়ান্ত প্রতিযোগিতা উপভোগ করে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের মূল আয়োজনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যে আরও দুটির অনুমোদন দেওয়া হয়ে গেছে, বাকীগুলোও আমরা করে দেব। যাতে করে সেখানে খেলাধুলার বিষয়ে আমাদের ছেলে-মেয়েরা ভালো প্রশিক্ষণ নিতে পারে সে ব্যবস্থাটা আমরা করে দিচ্ছি।’

তরুণ প্রজন্মের সঠিক বিকাশের জন্য খেলাধুলা এবং শরীরচর্চা খুব প্রয়োজন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা আজকে উন্নয়নশীল দেশে সারাবিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল, কোনক্ষেত্রেই আমরা আর পিছিয়ে থাকতে চাই না, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। আর সেই বিজয়ী জাতি হিসেবেই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে আমরা চলব।

আজকের তরুণ ক্রীড়াবিদদের তিনি আগামীর ভবিষ্যত উল্লেখ করে বলেন, তিনি বলেন, আমি জানি যতবেশি আমাদের ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলা এবং সংস্কৃতিচর্চায় সম্পৃক্ত রাখতে পারবো ততই তারা বিপথে যাবে না, মাদক ও জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হবে না। সুস্থভাবে পড়াশোনা এবং খেলাধুলা চালিয়ে গিয়ে মানুষের মত মানুষ হবে- সেটাই আমি চাই।

প্রধানমন্ত্রী ‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালিকা (অনুর্ধ্ব-১৭) এর ফাইনাল খেলার দ্বিতীয়ার্ধের কিছু অংশ গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উপভোগ করেন। এতে রংপুর বিভাগ ১-০ গোলে ময়মনসিংহ বিভাগকে পরাজিত করে শিরোপা জয় করে।

অন্যদিকে দিনের অপর খেলায় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট, বালক (অনুর্ধ্ব-১৭) এর ফাইনালে সিলেট বিভাগ রাজশাহী বিভাগকে টাইব্রেকারে পরাজিত করে চ্যাম্পিয়ন হয়। নির্ধারিত সময়ে খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত ছিল।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে সিলেট বিভাগের অনিক দেব বর্মন টুর্নামেন্টের সেরা খোলোয়াড় এবং একই বিভাগের আসাদ উদ্দিন ম্যান অব দি ফাইনাল নির্বাচিত হন। যৌথভাবে সিলেট বিভাগের অনিক দেব বর্মন এবং রাজশাহী বিভাগের হাবিবুর রহমান টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার লাভ করেন।

বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জাতীয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্টে রংপুর বিভাগের নাসরিন সেরা খেলোয়াড় এবং একই বিভাগের শাম্মী আখতার ফাইনালের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হন। রংপুর বিভাগের নাসরিন এবং খুলনা বিভাগের সন্ধ্যা যুগ্মভাবে সর্বোচ্চ গোলাদাতার পুরস্কার লাভ করেন।

যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বিজয়ী এবং বিজিত দলের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে ট্রফি এবং খেলোয়াড়দের ব্যক্তিগত মেডেল দেন। তিনি খেলোযাড়দের মধ্যে করোনাকালীন বিশেষ অনুদানের চেকও দেন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি (বাফুফে) কাজী সালাহউদ্দিন এবং ঢাকায় নিযুক্ত ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবারাজা ডি অলিভিয়েরা পুরস্কার প্রদান মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে জাতির পিতা সহ তার পরিবারের সদস্যদের বিশেষ ত্রীড়ানুরাগের তথ্য তুলে ধরে বলেন, স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠনকালেও জাতির পিতা খেলাধলার প্রতি বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছেন। ১৯৭২ সালে বাংলদেশ ফুটবল ফেডারেশন প্রতিষ্ঠা করা হয় এবং ক্রীড়া নিয়ন্ত্রণ সংস্থাও গঠন করেন তিনি। বাংলাদেশ ফুটবলের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সদস্যপদ লাভ করে ১৯৭৪ সালে এবং একই বছর জাতির পিতা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদও গঠন করেন। অর্থাৎ একদম শিশুকাল থেকে সবাইকে খেলাধুলায় সম্পৃক্ত করাই তার লক্ষ্য ছিল।

’৭৫ এর বিয়োগান্তক অধ্যায়ের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এরপর ২১ বছর দেশে খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে আর তেমন কোনো অগ্রগতি সাধিত হতে পারেনি। তবে, ’৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার আবার ক্ষমতায় এসেই খেলাধুলার প্রতি গুরুত্ব দেয়।

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সবসময়ই খেলাধুলার প্রতি যত্নবান উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবার ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারকে ‘তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশে সমৃদ্ধি’ স্লোগানের মাধ্যমে তরুণদের উৎসর্গ করেছেন, কেননা এই তরুণ সমাজকেই তারা উপযুক্ত ভাবে গড়ে তুলতে চান। সেক্ষেত্রে খেলাধুলা, সংস্কৃতি চর্চা, বিজ্ঞান শিক্ষা, তথ্য প্রযুক্তি অর্থাৎ কম্পিউটার শিক্ষা, বিভিন্ন ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে সর্বক্ষেত্রেই ছেলে-মেয়েরা যাতে গড়ে উঠতে পারে সেদিকেই তার সরকার দৃষ্টি দিয়েছে, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার একটা সুযোগ থাকে তার ব্যবস্থা রাখতে তিনি ইতোমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেন।

ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা খেলা পরবর্তী জীবনে শারীরিক বা আর্থিক সংকটে পড়লে তাদের সহযোগিতায় সরকার প্রদত্ত তহবিল আরও বাড়ানোর ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুস্থ ক্রীড়াবিদদের সহযোগিতার জন্য ‘বঙ্গবন্ধু ক্রীড়াসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন’ নামে একটা ফাউন্ডেশন করা হয়েছে এবং সম্প্রতি সেখানে সিড মানি হিসেবে ১০ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সেখানে আরও ২০ কোটি টাকা আমি দেব, এই মোট ৩০ কোটি টাকা সিড মানি হিসেবে থাকবে এবং অসচ্ছল ক্রীড়াবিদদের যেকোন প্রয়োজনে কাজে লাগবে।

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

error: Content is protected !!