চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) ছাত্রলীগের দুপক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় নগরের পাঁচলাইশ থানায় ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। শনিবার (৩০ অক্টোবর) দিনগত রাতে চমেকের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী মো. তৌফিকুর রহমান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- সাদ মোহাম্মদ গালিব (২১), আহসানুল কবির রুমন (২১), জাহিদুল ইসলাম জিসান (২১), মাহাদি বিন হাশিম (২৪), আসিফ বিন তাকি (২৫), ইমতিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী (২১), মাহতাব উদ্দিন রাফি (২১), জাহিদুল আলম জিসান (২১), সৌরভ ব্যাপারী (২১), মো. আনিস (২১), রক্তিম দে (২১), এইচ এম আসহাব উদ্দিন (২১), তানভীর ইসলাম (২১), নাজমুস সাদাত আসিফ (২১), এনামুল হাসান সীমান্ত (২১) ও রিজওয়ান আহমেদ (২১)। আসামিরা সাবেক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়- গত শুক্রবার দিনগত রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মাহাদি জে আকিবের (২১) সঙ্গে কয়েকজনের কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনার জের ধরে আসামিরা সংঘবদ্ধ হয়ে শনিবার সকালে আকিবের ওপর হামলা চালায়। গুরুতর আহত আকিবকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে চমেকে এককভাবে আধিপত্য বিস্তার করে আসছিল আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী ছাত্রলীগের গ্রুপ। নাছির চমেক হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতিও ছিলেন দীর্ঘদিন। গত বছরের ২০ আগস্ট এ পদে আসেন ব্যারিস্টার নওফেল। সে থেকে ধাপে ধাপে চমেক ক্যাম্পাসে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করে নওফেল গ্রুপ।
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে একপর্যায়ে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়। ছোটখাটো সংঘর্ষের পর গত ২৭ এপ্রিল সিএমসি ক্যান্টিনে এক ছাত্রলীগ নেতাকে কটূক্তির ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে বড় সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত পাঁচজন আহত হয়। এ ঘটনার পর পাঁচলাইশ থানায় উভয় পক্ষ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করেন। একই সঙ্গে চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘট ডাকেন। পরে প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সমঝোতা হলে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সর্বশেষ গত শুক্রবার দিনগত রাত ও শনিবার উভয় পক্ষের মধ্যে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে শনিবার জরুরি বৈঠকে বসে প্রশাসন। বৈঠক শেষে মেডিকেল কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের শনিবার সন্ধ্যার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
চমেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আকতার জাগো নিউজকে বলেন, শুক্রবার ও শনিবার সংঘর্ষের ঘটনার পর পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।