সাম্প্রদায়িক হামলার নেপথ্যে কারা জড়িত সেই ঘটনায় ‘থলের বিড়াল বেরিয়ে আসছে’ বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে ‘করোনাকালীন শিল্প ও বাণিজ্য উন্নয়নে জননেত্রী শেখ হাসিনা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
সম্প্রতি সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরে হামলার বিষয়টি তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের উন্নয়নে এই সাম্প্রদায়িক শক্তি বাধা তৈরি করছে। গত ১২ বছরে কোনো ঘটনা ঘটলো না কিন্তু এবার নির্বাচনে সামনে রেখে এই ধরনের ঘটনা ঘটলো।
‘ওই ঘটনায় থলের বিড়াল বেরিয়ে পড়ছে। সাম্প্রদায়িক শক্তি যারা একাত্তরে বাংলাদেশ চায়নি, তারা আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্দোলনে ব্যর্থ, নির্বাচনে ব্যর্থ হয়ে, তারা দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার ষড়যন্ত্র করছে। তারা আবারও আগুন সন্ত্রাস, ককটেল আর পেট্রোল বোমা নিয়ে ভাবছে। ছক বানাচ্ছে, নীলনকশা করতে যাচ্ছে; এভাবে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চাচ্ছে। এই সাম্প্রদায়িক শক্তির নির্ভরযোগ্য ঠিকানা হচ্ছে বিএনপি। তাদের পৃষ্ঠপোষক করছে এই দলটি’ বলে জানান তিনি।
সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।
ভ্যাকসিন সংগ্রহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পলিসি এবং দক্ষতা সারা দুনিয়ায় প্রশংসিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তিনি শুধু বাংলাদেশে প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী নন বিশ্বের প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী। একজন রাজনীতিবিদ পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে ভাবে আর শেখ হাসিনা পরবর্তী জেনারেশন নিয়ে ভাবেন।
এ সময় দেশের অবকাঠামো খাতে আওয়ামী লীগের সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদেক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে কি ছিলো বাংলাদেশ? আজ বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দিয়েছেন শেখ হাসিনা তার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপ দিয়ে। আজকে পাহাড়েও রাস্তাঘাটের চেহারা পাল্টে গেছে। আগামী বছর মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে দেশের প্রবৃদ্ধি আরও বাড়বে বলেও প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
দেশের ছোট ছোট বিষয় থেকে শুরু করে বড় বিষয়গুলো শেখ হাসিনা ধৈর্য ধরে সিদ্ধান্ত দেন জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এতো পরিশ্রম উনি কিভাবে করেন তার আমি মাঝে মাঝে ভেবে পাই না। বাংলাদেশের মানুষের জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। সেজন্য নিউইয়র্ক টাইমস বলে, দারিদ্র বিমোচন করতে হলে বাংলাদেশের দিকে তাকাও।
এ সময় পাকিস্তানের চেয়ে সব সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে কাদের বলেন, বাংলাদেশের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন প্লাস। আর পাকিস্তানের রিজার্ভ ২২ বিলিয়ন। আজকে আমাদের গড় আয় ৭৩ পাকিস্তানের ৬৭। বাংলাদেশের এক টাকা সমান পাকিস্তানের ১ রুপি ৮৪ পয়সা সমান। কার ম্যাজিক্যাল লিডারশিপে এটা হলো? তিনি শেখ হাসিনা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, রাজনীতি ব্যবসায়ীরা করতে পারেন। তবে রাজনীতি নিয়ে ব্যবসা ঘৃনা করি। রাজনীতিকে যখন ব্যবসার হাতিয়ার হয় সেটা তখন রাজনীতিও থাকে না ব্যবসাও থাকে না। এ দেশে ব্যবসা না করেও রাজনীতিবিদ হয়ে ব্যবসায়ী হয়ে যান।
আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য উপকমিটির আয়োজনে সভায় সভাপতিত্ব করেন উপ কমিটির চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম আহমেদ।
উপ কমিটির সদস্য সচিব ও আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমানের সঞ্চলনায় আরও বক্তব্য রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সী, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, এফবিসিসিআইয়েল সাবেক সভাপতি ও ডি ৮ সিসিআইয়ের সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম প্রমুখ।