অনলাইন ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে দুই শিশু সন্তানকে ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে একসাথে বিষপান করে আত্বহত্যা করলেন স্বামী-স্ত্রী!। নিহতরা হলেন,উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের ভাটি দৌলতপুর গ্রামের প্রয়াত দীগেন্দ্র তালুকদারের ছেলে অমৃকা তালুকদার(৫২) ও তারই স্ত্রী তৃপ্তী রাণী তালুকদার (৩৮)।
উপজেলার ভাটি দৌলতপুর গ্রামের নিজ বাড়িতেই শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার পর শিশু সন্তানদের ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে এ দম্পতি বিষপান করেন। নিহত এ দম্পতির সাত বছর বয়সী এক শিশুকন্যা ও চার বছর বয়সী এক শিশুপুত্র রয়েছে।
শুক্রবার রাত ২টায় নিহতের পরিবারের বরাত দিয়ে জামালগঞ্জ থানার ওসি মো. সাইফুল ইসলাম ওই দম্পতি বিষপানে আত্বহত্যা করে মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তবে কী কারনে ওই দম্পতি আত্বহত্যা করলেন এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন , প্রাথমিক ভাবে আত্বহত্যার কারন সম্পর্কে নিহতের পরিবারের লোকজন কিছুই জানাননি, তদন্ত সাপেক্ষেই কেবল সুনিশ্চিত হওয়া যাবে কেন বা কী কারনে তারা আত্বহত্যা করলেন?।
ওসি আরো জানান, উপজেলার ভাটি দৌলতপুর গ্রামে শিশু সন্তানদের ঘুমন্ত অবস্থায় রেখে শুক্রবার সকালে রান্না করা পায়েসের সাথে বিষ মিশিয়ে প্রথমে স্ত্রী তৃপ্তি রাণী তালুকদার ও পরবর্তীতে স্বামী অমৃকা তালুকদার দু’জনই সেবন করেন। বিষ মেশানো পায়েস সেবনের পর বিষক্রিয়া শুরু করে স্বামী-স্ত্রী দু’জনের চিৎকার শুনে শিশুরা জেগে উঠে কান্নাকাটি করতে থাকে। এক পর্যায়ে পরিবারের আলাদা ঘওে বসবাস রত অমৃকার সহোদর ভাই, তার পরিবারের লোকজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে এসে এ অবস্থা দেখে দ্রুত তাদেরকে জামালগঝঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে দুপুরের দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর শংকামুক্ত না হওয়ায় ফের দু’জনকেই দুপুরের পর পরই জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতর থেকে স্বামী স্ত্রী দুজনকে সুনামগঞ্জ নেয়ার জন্য বের করা হলে তাৎক্ষনিকভাবে অমৃকা তালুকদার মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অপরদিকে তৃপ্তি রাণীকে জেলা সদর হাসপাতালে নেয়ার পথে তিনিও মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।
রাত ৮টার দিকে জামালগঞ্জ থানা পুলিশের হেফাজতে অমৃকা তালুকদারের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাপসপাতালে প্রেরণ করা হয়। একই রাতে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ হেফাজতে তৃপ্তি রাণীর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালেই প্রেরণ করা হয়।
এ আত্বহত্যার ঘটনায় জামালগঞ্জের ভাটি দৌলতপুর গ্রাম সহ আশেপাশের গ্রামগুলোতে রাতভর শোক বিরাজ করলেও একসাথে বিষপানে স্বামী-স্ত্রী দুজনের আত্বহত্যার কারন সম্পর্কে থানা পুলিশ কিংবা এলাকার লোকজন সুনিশ্চিত কোন তথ্য জানাতে পারেননি।