চাঁদপুরে ১৭জনের মধ্যে ১০জনই সুস্থ্য, আরো ৫জন সুস্থ হয়ে উঠছেন

  • আপডেট: ০৯:৩৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ মে ২০২০
  • ২৮

ছবি-নতুনেরকথা।

হাজীগঞ্জ, ৩ মে, রবিবার:

চাঁদপুরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয় ১৭ রোগীর মধ্যে ১০জনই সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরেছেন। আরো ৫জন সুস্থ্য হয়েে উঠেছেন এবং ২জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

চাঁদপুরের করোনা পরিস্থিতি অন্যান্য জেলা থেকে তুলনামূলক উন্নতির দিকে রয়েছে। করোনা টেস্ট বাড়লেও নতুন শনাক্তের হার অনেক কম।

সর্বশেষ শনিবার একযোগে ৭০জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরা একে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

চাঁদপুর জেলায় গত ৮ এপ্রিল প্রথম করোনা পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তারপর একে একে ১৭জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২জন উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর জানা যায় তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। মূলত চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্ত্ হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যা সেই ২জন’ই।

আক্রান্ত বাকী ১৫জনের মধ্যে শনিবার দুপুর পর্যন্ত মোট ১০জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি/বাসায় ফিরেছেন।

বিষয়টি নতুনেরকথাকে নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৭জন সুস্থ হয়েছেন। শনিবার আরো ৩জন সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র পেলেন। আরো ৫জন রোগী এখনো চিকিৎসাধীন। কারো অবস্থাই গুরুতর নয় বলে জানান সিভিল সার্জন।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে জেলার ৫জন করোনা রোগীর মধ্যে ২জন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর বাকী ৩জন নিজ বাসা/বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের সবার অবস্থা স্থিতিশীল।

এদিকে শনিবার সকালে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন অফিসে আইইডিসিআর থেকে ৭৫জনের করোনা টেস্টের রিপোর্ট এসেছে। তাদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থাৎ তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত নন। এর আগে শুক্রবার মাত্র ১জনের রিপোর্ট আসে। সেটিও নেগেটিভ ছিল।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে সর্বমোট ৪৬৫জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে ৩৭২জনের। রিপোর্ট অপেক্ষমান আছে ৯৩টি। শনিবার জেলা থেকে আরো ৩৩জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলো রোববার সকালে আইইডিসিআর পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল নতুনেরকথাকে জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ১৭জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ফরিদগঞ্জের ৪জনের মধ্যে এক কিশোরী মারা গেছেন, অন্য ৩জনের ২জন সুস্থ হয়েছেন। আরো ১জন সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি আছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলায় মোট ৭জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১জন মৃত্যুবরণ করেন আর ৫জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। বাকি ১জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনিও সুস্থ হওয়ার পথে।

মতলব উত্তর উপজেলায় ৩জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩জন সুস্থ হয়ে বাসা/বাড়িতে ফিরেছেন। মূলত এই উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। করোনা থেকে মুক্তির ঘটনাও এখান থেকেই শুরু।

হাইমচরে ১জন শনাক্ত হয়েছেন। তার প্রথম রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসলেও দ্বিতীয়টি এসেছে নেগেটিভ। সে এখন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তার আরেকটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২জন। ২জন’ই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও রয়েছেন।

তবে মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।

এদিকে শনিবার রাতে সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী, ঢাকায় করোনা টেস্টের নমুনা দিয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে এসে শুক্রবার আইসোলেশনে ভর্তি হওয়া এক ব্যক্তির রিপোর্ট শনিবার রাতে চাঁদপুর এসে পৌঁছেছে। তার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ। অর্থাৎ তিনি করোনায় আক্রান্ত। চাঁদপুরে নমুনা না দিলেও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার হিসেবও চাঁদপুরের সাথে অন্তর্ভুক্ত হবে। তার বাড়ি ফরিদগঞ্জে। তিনি ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছেন।

সে হিসেবে, চাঁদপুরে এখন সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৮জন। আর চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬জন।

এছাড়া চাঁদপুরের আরো অনেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুরের সিভিল সার্জনের কাছে তার হিসেব নেই। বিদেশেও মারা গেছেন চাঁদপুরের অনেক প্রবাসী।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

‘ম্যানেজ করে’ এক সাথে দুই স্বামীর সংসার করছিলেন জান্নাতুল!

চাঁদপুরে ১৭জনের মধ্যে ১০জনই সুস্থ্য, আরো ৫জন সুস্থ হয়ে উঠছেন

আপডেট: ০৯:৩৯:১৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৩ মে ২০২০

হাজীগঞ্জ, ৩ মে, রবিবার:

চাঁদপুরে করোনা ভাইরাস সনাক্ত হওয় ১৭ রোগীর মধ্যে ১০জনই সুস্থ্য হয়ে বাড়ী ফিরেছেন। আরো ৫জন সুস্থ্য হয়েে উঠেছেন এবং ২জন মৃত্যুবরণ করেছেন।

চাঁদপুরের করোনা পরিস্থিতি অন্যান্য জেলা থেকে তুলনামূলক উন্নতির দিকে রয়েছে। করোনা টেস্ট বাড়লেও নতুন শনাক্তের হার অনেক কম।

সর্বশেষ শনিবার একযোগে ৭০জনের রিপোর্ট করোনা নেগেটিভ পাওয়া গেছে। চিকিৎসকরা একে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন।

চাঁদপুর জেলায় গত ৮ এপ্রিল প্রথম করোনা পজেটিভ রোগী শনাক্ত হয়েছিল। তারপর একে একে ১৭জন করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ২জন উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার পর জানা যায় তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন। মূলত চাঁদপুরে করোনায় আক্রান্ত্ হয়ে মারা যাওয়ার সংখ্যা সেই ২জন’ই।

আক্রান্ত বাকী ১৫জনের মধ্যে শনিবার দুপুর পর্যন্ত মোট ১০জন সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি/বাসায় ফিরেছেন।

বিষয়টি নতুনেরকথাকে নিশ্চিত করেছেন চাঁদপুরের জেলা সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্ল্যাহ। তিনি জানান, আক্রান্তদের মধ্যে ইতিমধ্যে ৭জন সুস্থ হয়েছেন। শনিবার আরো ৩জন সুস্থ হয়ে বাড়ি যাওয়ার ছাড়পত্র পেলেন। আরো ৫জন রোগী এখনো চিকিৎসাধীন। কারো অবস্থাই গুরুতর নয় বলে জানান সিভিল সার্জন।

তিনি আরো জানান, বর্তমানে জেলার ৫জন করোনা রোগীর মধ্যে ২জন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর বাকী ৩জন নিজ বাসা/বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তাদের সবার অবস্থা স্থিতিশীল।

এদিকে শনিবার সকালে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন অফিসে আইইডিসিআর থেকে ৭৫জনের করোনা টেস্টের রিপোর্ট এসেছে। তাদের সবার রিপোর্ট নেগেটিভ। অর্থাৎ তারা কেউ করোনায় আক্রান্ত নন। এর আগে শুক্রবার মাত্র ১জনের রিপোর্ট আসে। সেটিও নেগেটিভ ছিল।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, এ পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে সর্বমোট ৪৬৫জনের নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে। শনিবার দুপুর পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে ৩৭২জনের। রিপোর্ট অপেক্ষমান আছে ৯৩টি। শনিবার জেলা থেকে আরো ৩৩জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, সেগুলো রোববার সকালে আইইডিসিআর পরীক্ষা কেন্দ্রে পাঠানো হবে।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল নতুনেরকথাকে জানান, এ পর্যন্ত জেলায় ১৭জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। ফরিদগঞ্জের ৪জনের মধ্যে এক কিশোরী মারা গেছেন, অন্য ৩জনের ২জন সুস্থ হয়েছেন। আরো ১জন সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে ভর্তি আছেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলায় মোট ৭জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১জন মৃত্যুবরণ করেন আর ৫জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। বাকি ১জন বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তিনিও সুস্থ হওয়ার পথে।

মতলব উত্তর উপজেলায় ৩জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৩জন সুস্থ হয়ে বাসা/বাড়িতে ফিরেছেন। মূলত এই উপজেলায় প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। করোনা থেকে মুক্তির ঘটনাও এখান থেকেই শুরু।

হাইমচরে ১জন শনাক্ত হয়েছেন। তার প্রথম রিপোর্ট করোনা পজেটিভ আসলেও দ্বিতীয়টি এসেছে নেগেটিভ। সে এখন চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তার আরেকটি রিপোর্ট নেগেটিভ আসলে তাকেও ছেড়ে দেওয়া হবে।

হাজীগঞ্জ উপজেলায় রোগী শনাক্ত হয়েছেন ২জন। ২জন’ই বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাও রয়েছেন।

তবে মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলায় এখন পর্যন্ত কোনো করোনা রোগী শনাক্ত হয়নি।

এদিকে শনিবার রাতে সর্বশেষ প্রাপ্ত সংবাদ অনুযায়ী, ঢাকায় করোনা টেস্টের নমুনা দিয়ে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে এসে শুক্রবার আইসোলেশনে ভর্তি হওয়া এক ব্যক্তির রিপোর্ট শনিবার রাতে চাঁদপুর এসে পৌঁছেছে। তার রিপোর্ট করোনা পজেটিভ। অর্থাৎ তিনি করোনায় আক্রান্ত। চাঁদপুরে নমুনা না দিলেও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তার হিসেবও চাঁদপুরের সাথে অন্তর্ভুক্ত হবে। তার বাড়ি ফরিদগঞ্জে। তিনি ঢাকাতেই আক্রান্ত হয়েছেন।

সে হিসেবে, চাঁদপুরে এখন সর্বশেষ আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ১৮জন। আর চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৬জন।

এছাড়া চাঁদপুরের আরো অনেকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। চাঁদপুরের সিভিল সার্জনের কাছে তার হিসেব নেই। বিদেশেও মারা গেছেন চাঁদপুরের অনেক প্রবাসী।