অনলাইন ডেস্কঃ
ব্যাংক প্রতারক চক্রের প্রধান মামুন তালুকদারকে ২০ মার্চ ভোরে কক্সবাজারের একটি হোটেল থেকে এডিসি মো. নাজমুল ইসলামের তত্ত্বাবধানে এসি ধ্রুব জ্যোতির্ময় গোপের নেতৃত্বে সাইবার নিরাপত্তা ও অপরাধ বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া টিম গ্রেফতার করেছে।
পরে তার দেয়া তথ্যমতে ওই দিন অভিযান চালিয়ে তার দুই সহযোগী রাজু ফারাজী ও পর দিন মো. মিঠু মৃধাকে গ্রেফতার করা হয়।
রাজু ফারাজীকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে এবং মিঠু মৃধাকে ফরিদপুরের ভাঙা থেকে গ্রেফতার করে। এ সময়ে তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত একটি এক্সিও গাড়ি, ৭টি বিশেষ অ্যাপসযুক্ত মোবাইল ফোন, বহু ভুয়া রেজিস্ট্রেশনকৃত মোবাইল সিমকার্ড, একাধিক ব্যাংক, বিকাশ, নগদ ও স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট জব্দ করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করেছেন। বেশ কয়েক মাস ধরে ওই প্রতারক চক্র অভিনব ও সুনিপুণ কায়দায় বিভিন্ন ডায়লার অ্যাপস দিয়ে কয়েকটি ব্যাংকের হেড অফিসের কার্ড ডিভিশনের মোবাইল নম্বর স্পুফ করে শাখা-ম্যানেজারদের কল দিয়ে আগের মাসের নতুন কার্ড ব্যবহারকারীদের নাম, কার্ড নম্বর এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করেছে।
তার পর প্রতারকরা ব্যাংকের কাস্টমার কেয়ার এজেন্ট সেজে গ্রাহকদের কল করে বলত যে তারা ব্যাংক থেকে তার নতুন কার্ডটি একটিভ করা বা অন্য কিছু ফিক্স করার জন্য কল করেছে।
এর পর চক্রটি কৌশলে স্পুফড মোবাইল কলের মাধ্যমেই গ্রাহকদের কার্ডের মেয়াদ, ৩-৪ ডিজিটের সিভিভি কোড এবং প্রয়োজন সাপেক্ষে মোবাইলের ওটিপি সংগ্রহ করে গ্রাহকদের কার্ড থেকে টাকা/ডলার প্রতারকদের লন্ডনভিত্তিক ই-কমার্স অ্যাপস স্ক্রিল অ্যাকাউন্ট, বিকাশ বা নগদে ট্রান্সফার করে এবং পরে এটিএম বুথ বা বিকাশ বা নগদ এজেন্ট থেকে ক্যাশ আউট করত।
এভাবে দেশের একাধিক শীর্ষ স্থানীয় ব্যাংকের শতাধিক গ্রাহকের অর্ধকোটি টাকা চুরি গেলে কয়েকটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ডিএমপির সাইবার সিকিউরিটি অ্যান্ড ক্রাইম বিভাগের ডিসি আ ফ ম আল কিবরিয়ার কাছে অভিযোগ করলে তিনি সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশ ব্যাংককে ঘটনাটি অবহিত করেন।
পরে তার নির্দেশনায় ওই টিম ঢাকা, ফরিদপুরের ভাঙ্গা এবং কক্সবাজারে প্রায় লক্ষাধিক মোবাইল নম্বর ও ডায়লার অ্যাপসের আইপি বিশ্লেষণসহ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে ওই প্রতারক চক্রকে শনাক্ত করে।
এ ঘটনায় ডিএমপির ধানমণ্ডি থানায় নিয়মিত মামলা করা হয়। গ্রেফতারকৃত তিন আসামির ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ৷