• ঢাকা
  • শনিবার, ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ২২ জুন, ২০১৯
সর্বশেষ আপডেট : ২২ জুন, ২০১৯

শী জিপিং জানালেন তার জীবনের সাফল্যের মূল রহস্য

অনলাইন ডেস্ক
[sharethis-inline-buttons]

অনলাইন ডেস্ক:

চীনের প্রেসিডেন্ট শী জিপিং জানালেন তার সাফল্যের কথা। তিনি বলেন, ছোটবেলায় তিনি খুব স্বার্থপর ছিলেন। সবকিছুতেই নিজের সুবিধে আর লাভটা বুঝে নেবার চেষ্টা করতেন। তার এই দোষের জন্য আস্তে আস্তে তার বন্ধুর সংখ্যা কমতে শুরু করল। শেষে অবস্থা এমন হলো যে তার আর কোনো বন্ধুই অবশিষ্ট রইল না।

কিন্তু, সেই অপরিনত বয়সে তিনি এর জন্য নিজেকে দায়ী না করে তিনি মনে করলেন, তার বন্ধুরা আসলে হিংসুটে। ওরা তার ভাল দেখতে পারে না। কিন্তু শী জিপিং’র বাবা সবই লক্ষ করতেন, মুখে কিছু না বললেও।

শী জিপিং বলেন, একদিন রাতে বাড়ি ফিরে দেখি, বাবা আমার জন্য খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছেন। টেবিলে রাখা আছে রান্না করা ন্যুডলের দুটি ডিশ। একটা ডিশে সেদ্ধ ন্যুডলের, আর ওপরটাতে রাখা একটি খোসা ছাড়ানো সেদ্ধ ডিম। অন্য ডিশটিতে শুধু ন্যুডলসের যে কোনো একটি ডিশ বেছে নিতে বললেন বাবা।

স্বাভাবিক ভাবেই আমি ডিম সমেত ডিশটাই উঠিয়ে নিলাম। সেই সব দিনে চীনে ডিম ছিল এক দুস্প্রাপ্য জিনিস। উৎসবের দিন ছাড়া কারো বাড়িতে ডিম খাবার কথা তখন ভাবা যেত না। খাওয়া শুরু করবার পর দেখা গেল বাবার ডিশে ন্যুডলসের তলায় আসলে লুকিয়ে রাখা আছে দুটো ডিম।

আমার এত দুঃখ লাগছিল তখন। কেন যে তাড়াহুড়ো করে বাছতে গেলাম। বাবা আমাকে দেখছিলেন। খাবার পর মৃদু হেসে বললেন, “মনে রেখো, তোমার চোখ যা দেখে, সেটা সব সময় সত্যি নাও হতে পারে। শুধু চোখে দেখে যদি মানুষ বা কোনো পরিস্থিতিকে বিচার করে সিদ্ধান্ত নাও, ঠকে যাবার সম্ভবনা থাকবে।”

পরদিন আমার বাবা আবার খাবার টেবিলে ন্যুডলস ভর্তি দুটো ডিশ রেখে আমাকে খেতে ডাকলেন। আগের দিনের মত এবারেও একটাতে ডিম আছে, আর একটাতে নেই। আমাকে যে কোনো একটি ডিশ বেছে নিতে বলা হোলো। আমি আগের অভিজ্ঞতা থেকে জেনেছি, চোখ যা দেখে তা সত্যি নাও হতে পারে। আমি ডিম ছাড়া ডিশটিই বেছে নিলাম। কিন্তু খেতে গিয়ে দেখলাম, ভেতরে কোনো ডিমই নেই। বাবা আমার দিকে তাকিয়ে আবার হাসলেন।

“অভিজ্ঞতা সব সময় সঠিক পথ দেখায় না। জীবন বড় বিচিত্র। জীবনে চলার পথে বহুবার আমাদের মরীচিকার সামনে পরতে হয়। এর থেকে উত্তরন অসম্ভব। জীবন যেটা তোমাকে দিয়েছে, সেটা মেনে নিলে কষ্ট কম পাবে। তোমার অভিজ্ঞতা এবং বুদ্ধিমত্তা তুমি অবশ্যই কাজে লাগাবে, কিন্তু শেষ কথা জীবনই বলবে।”

তৃতীয় দিনে আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আগের দিনের মতই এবারেও একটাতে ডিম আছে, আর একটাতে নেই। তবে একটা ব্যাপার এবার একটু অন্য রকম হলো। এবার আমি বাবাকে বললাম, আগে তুমি নাও। তার পর আমি। কারন তুমি বাড়ির সবার বড়, এই সংসার তোমার রোজগারে চলে। তোমার অধিকার সবার আগে।

শুনে বাবার মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুটে উঠল, মুখে কিছু বললেন না যদিও। খাওয়া শুরু করবার পর আমি দেখলাম ন্যুডলসে র নীচে আমার ডিশে দুটো ডিম। খাবার পর বাবা আমাকে কাছে ডাকলেন। সস্নেহে আমার হাত ধরে বললেন, “মনে রেখো, কৃতজ্ঞতা এবং ঋণ স্বীকার করা মানুষের শ্রেষ্ঠ ধর্ম। তুমি জীবনে যদি অন্যের জন্য ভাব, অন্যকে দাও, জীবনও তোমার কথা ভাববে, তোমাকে আরো বহুগুণে ফিরিয়ে দেবে।

বাবার এই তিনটে উপদেশ আমি আজীবন মনে রেখেছি, এবং মেনে চলেছি। কি আশ্চর্য , সত্যি জীবন আমাকে বহু গুণ ফিরিয়ে দিয়েছে। আমি আজ যেখানে আছি, সেটা জীবনের দান ছাড়া আর কি?”

Sharing is caring!

[sharethis-inline-buttons]

আরও পড়ুন

  • আন্তর্জাতিক এর আরও খবর
error: Content is protected !!