করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট দেখা দেবে

  • আপডেট: ০৫:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ এপ্রিল ২০২০
  • ৩৬

অনলাইন ডেস্ক:

বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থাসহ তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, চলমান করোনাভাইরাস সংকট সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হলে বিশ্বব্যাপী সম্ভাব্য ‘খাদ্য ঘাটতি’ দেখা দিতে পারে।

খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে অনেক সরকার ভাইরাসের বিস্তার রোধে তাদের জনগণকে লকডাউনে ফেলেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও খাদ্য সরবরাহের চেইনে মারাত্বক ধীরগতি দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান কোয়েড ডংইউ, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন প্রধান টেড্রাস অ্যাধনাম ঘেরবাইয়াসিস এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের পরিচালক রবার্তো আজেভেদো স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ আশঙ্কার কথা বলেন। এএফপির খবর।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাদ্য প্রাপ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তা রফতানি নিষেধাজ্ঞা ডেকে আনতে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ লকডাউনের মাঝে বাণিজ্য যাতে যথাসম্ভব অবাধে প্রবাহিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই বিশেষ প্রচেষ্টা করতে হবে। বিশেষত খাদ্যের ঘাটতির কবল থেকে বাঁচার জন্যই তা করতে হবে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করার সময় দেশগুলোকে বাণিজ্য সম্পর্কিত পদক্ষেপ সতর্কভাবে নিতে হবে। যাতে খাদ্য সরবরাহ কোনোভাবে ব্যাহত না হয়। বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে কৃষি শ্রম না পাওয়া এবং বাজারে খাদ্যের সংকট তৈরি করতে পারে। কৃষি ও খাদ্য শিল্পের শ্রমিকদের চলাচলে বাধাগ্রস্ত করা বিরূপ ফল বয়ে আনতে পারে। কিছু দেশে সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় খাদ্য বোঝাই কনটেইনার গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে পচনশীল খাবারের পরিবহনে অপচয় বাড়বে। সব মিলিয়ে খাদ্যবর্জ্য বেড়ে যাবে, দেখা দেবে খাদ্য সংকট।

বিবৃতি বলছে, দ্রুত সমাধান না পাওয়া গেলে মেক্সিকো থেকে মৌসুমি খামারিদের অভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ফসল উৎপাদন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। পশ্চিম ইউরোপে উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপের শ্রমিকদের অনুপস্থিতিও একইরকম ফল বয়ে আনতে পারে। এফএও’র সিনিয়র অর্থনীতিবিদ আবদুলরেজা আববাসিয়ান বলেছেন, বিশ্ব এই সংকটের কেবল শুরুর পর্যায়ে আছে। ভারতে যদি আরও দুই সপ্তাহ ধরে লকডাউন থাকে, তাহলে দেশটিতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফসল কাটা শুরু হচ্ছে। তাই পণ্যগুলোর অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। এফএও, ডব্লিউএইচও এবং ডব্লিউটিও নেতারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিতরণে নিযুক্ত কর্মীদের রক্ষা করার পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন।

খবর বলছে, সুপার মার্কেটের ক্যাশিয়াররা ইতালি এবং ফ্রান্সে ভাইরাসে যারা মারা গেছেন। সেখানে কিছু সহকর্মী শ্রমিক তাদের সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা ও সরঞ্জামের অভাবে ওয়াকআউট করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চপর্যায়ের পাইকারি খাবার বাজারগুলোও কর্মবিরতির মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে দুর্বল করে রেখেছেন। তবে ওই তিন সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি এড়াতে বিশ্বকে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

চাঁদপুরে খাঁটি গরুর দুধ বিক্রর নামে প্রতারণা

করোনা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট দেখা দেবে

আপডেট: ০৫:২৯:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ এপ্রিল ২০২০

অনলাইন ডেস্ক:

বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থাসহ তিন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, চলমান করোনাভাইরাস সংকট সঠিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হলে বিশ্বব্যাপী সম্ভাব্য ‘খাদ্য ঘাটতি’ দেখা দিতে পারে।

খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে অনেক সরকার ভাইরাসের বিস্তার রোধে তাদের জনগণকে লকডাউনে ফেলেছে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও খাদ্য সরবরাহের চেইনে মারাত্বক ধীরগতি দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার প্রধান কোয়েড ডংইউ, ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন প্রধান টেড্রাস অ্যাধনাম ঘেরবাইয়াসিস এবং ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশনের পরিচালক রবার্তো আজেভেদো স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে তারা এ আশঙ্কার কথা বলেন। এএফপির খবর।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, খাদ্য প্রাপ্যতা সম্পর্কে অনিশ্চয়তা তৈরি হলে তা রফতানি নিষেধাজ্ঞা ডেকে আনতে পারে। এর ফলে বিশ্ববাজারে খাদ্য ঘাটতি সৃষ্টি করতে পারে।

এতে আরও বলা হয়েছে, কোভিড-১৯ লকডাউনের মাঝে বাণিজ্য যাতে যথাসম্ভব অবাধে প্রবাহিত হয় তা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই বিশেষ প্রচেষ্টা করতে হবে। বিশেষত খাদ্যের ঘাটতির কবল থেকে বাঁচার জন্যই তা করতে হবে। নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও সুস্বাস্থ্য সুরক্ষায় কাজ করার সময় দেশগুলোকে বাণিজ্য সম্পর্কিত পদক্ষেপ সতর্কভাবে নিতে হবে। যাতে খাদ্য সরবরাহ কোনোভাবে ব্যাহত না হয়। বলা হয়, দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য সরবরাহে নিয়ন্ত্রণ, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কারণে কৃষি শ্রম না পাওয়া এবং বাজারে খাদ্যের সংকট তৈরি করতে পারে। কৃষি ও খাদ্য শিল্পের শ্রমিকদের চলাচলে বাধাগ্রস্ত করা বিরূপ ফল বয়ে আনতে পারে। কিছু দেশে সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় খাদ্য বোঝাই কনটেইনার গন্তব্যে পৌঁছাতে বিলম্ব হচ্ছে। এতে পচনশীল খাবারের পরিবহনে অপচয় বাড়বে। সব মিলিয়ে খাদ্যবর্জ্য বেড়ে যাবে, দেখা দেবে খাদ্য সংকট।

বিবৃতি বলছে, দ্রুত সমাধান না পাওয়া গেলে মেক্সিকো থেকে মৌসুমি খামারিদের অভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ফসল উৎপাদন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। পশ্চিম ইউরোপে উত্তর আফ্রিকা এবং পূর্ব ইউরোপের শ্রমিকদের অনুপস্থিতিও একইরকম ফল বয়ে আনতে পারে। এফএও’র সিনিয়র অর্থনীতিবিদ আবদুলরেজা আববাসিয়ান বলেছেন, বিশ্ব এই সংকটের কেবল শুরুর পর্যায়ে আছে। ভারতে যদি আরও দুই সপ্তাহ ধরে লকডাউন থাকে, তাহলে দেশটিতে খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ফসল কাটা শুরু হচ্ছে। তাই পণ্যগুলোর অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। এফএও, ডব্লিউএইচও এবং ডব্লিউটিও নেতারা খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং বিতরণে নিযুক্ত কর্মীদের রক্ষা করার পাশাপাশি খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলা বজায় রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন।

খবর বলছে, সুপার মার্কেটের ক্যাশিয়াররা ইতালি এবং ফ্রান্সে ভাইরাসে যারা মারা গেছেন। সেখানে কিছু সহকর্মী শ্রমিক তাদের সুরক্ষার জন্য ব্যবস্থা ও সরঞ্জামের অভাবে ওয়াকআউট করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চপর্যায়ের পাইকারি খাবার বাজারগুলোও কর্মবিরতির মুখে পড়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত কয়েক বছরে আন্তর্জাতিক চুক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং বাণিজ্যযুদ্ধ শুরু করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে দুর্বল করে রেখেছেন। তবে ওই তিন সংস্থা বলছে, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ব্যবস্থা গ্রহণ সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য খাদ্য ঘাটতি এড়াতে বিশ্বকে একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।