অনলাইন ডেস্ক
বড়লোকের বিটি লো গানটি “প্রচলিত” বা “সংগৃহীত” লোকগীতি নয়। গানটা অনেকেই গায়, রিমিক্স হয়, ম্যাশআপ হয় কিন্তু কেউ খোঁজে না গানটার রচয়িতা কে? কি সারকথা লুকিয়ে আছে এই গানে? এখন তো অনেকেই জানেও না গানটার মূল সঙ্গীতশিল্পী কে ছিলেন?
সময়টা ১৯৭২ । বীরভূমের তরুণ লোকশিল্পী রতন কাহার শুনছিলেন এক কুমারী মায়ের গল্প। মেয়ের মেঘকালো চুলে খোঁপা বাঁধতে বাঁধতে সেই কুমারী মা রতন কাহারকে বলছেন কীভাবে-বাবুর বাগানে দেখা হয় প্রেমিকের সাথে, অল্প বয়সে প্রেমের ফসল হিসেবে জন্ম নেয় চাঁদমুখো এক রাঙা রাজকন্যা। কিন্তু সেই বড়লোক প্রেমিক আর আসে না, হারিয়ে যায়। রেখে যায় ঘন কেশবতী এক রত্তি “বড়লোকের বিটি”। বড়লোকের ঔরসে জন্ম নেয়া সেই নিষ্পাপ শিশুটির জন্য রতন কাহার গান বাঁধেন – ‘বড়লোকের বিটি লো লম্বা লম্বা চুল/ এমন মাথায় বেঁধে দিবো লাল গেন্দা ফুল”
১৯৭৬ সালে খ্যাতিমান লোকসঙ্গীত শিল্পী স্বপ্না চক্রবর্তী গানটি রেকর্ড করেন। অশোকা রেকর্ড কোম্পানির বদৌলতে এবং স্বপ্না চক্রবর্তীর সিগনেচার কন্ঠে গানটি অমরত্ব পায়। কিন্তু হারিয়ে যায় গানটির স্রষ্টা রতন কাহার, তলিয়ে যান বিস্মৃতির অতলে। জীবন শিল্পী রতন কাহার দারিদ্র্যের সঙ্গে আজো লড়ছেন। তিনি জানেন না জনৈক বাদশাহ এবং পায়েল দেবের রিমিক্সে তার কালজয়ী গান কোটি কোটি ভিউ পেয়েছে। ইউটিউবে আয় হচ্ছে লক্ষ লক্ষ ডলার। কিন্তু অভিমানী রতন হয়তো এইসবে আর বিচলিত হন না। এখনো সুর খোঁজেন, গান বাঁধেন জীবনের তারে।
তথ্যসূত্র- ইন্ডিয়ান টাইমস