আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
লন্ডন থেকে যখন দেশে ফেরেন, বিমানবন্দর থেকে তাকে হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। অন্তত দুই সপ্তাহ তিনি যেন বাড়ি থেকে বের না হন, সেই নির্দেশনাও দেয়া হয়েছিল।
কিন্তু এসবের তোয়াক্কা না করেই ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় বেপরোয়াভাবে ঘুরে বেড়ালেন লন্ডনফেরত এক তরুণ। শুক্রবার তার শরীরে করোনাভাইরাস দেখা দিলে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আনন্দবাজারপত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, লেক রোডে শহরের অন্যতম অভিজাত একটি আবাসনের বাসিন্দা ২২ বছর বয়সী ওই তরুণ। তার বাবার বাথরুম ফিটিংসের ব্যবসা। একাধিক দোকানের মধ্যে দুটি রয়েছে কালীঘাট এলাকার এসপি মুখার্জি রোড এবং ঈশ্বর গাঙ্গুলি স্ট্রিটে। যে আবাসনে তিনি থাকেন, সেই আবাসনেই ফ্ল্যাট রয়েছে দক্ষিণ কলকাতার দাপুটে এক তৃণমূল নেতার তথা মেয়র পারিষদেরও।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত কয়েক দিনে ওই তরুণকে বেশ কয়েক বার দেখা গিয়েছে এসপি মুখার্জি রোডের ওই দোকানে। আবাসনের সব জায়গায় তিনি ঘুরে বেড়িয়েছেন। বিপণিবিতান ও রেস্তোরাঁতে যেতে দেখা গেছে তাকে।
১৩ মার্চ ফেরার পর থেকে বৃহস্পতিবার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হওয়া পর্যন্ত অসংখ্য মানুষের সরাসরি সংস্পর্শে এসেছেন তিনি।
গত দু-তিন ধরেই সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখা দেয় ওই তরুণের শরীরে। কিন্তু তারপরেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে যাননি তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দারা কালীঘাট থানার পুলিশের নজরে বিষয়টি আনলে, পুলিশ স্বাস্থ্য দফতরকে খবর দেয়। এর পর স্বাস্থ্য দফতর যোগাযোগ করে পরিবারের সঙ্গে। তার পরই উপসর্গ দেখে তাকে হাসপাতালে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
এদিকে রোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দেশজুড়ে উদ্বেগের প্রেক্ষাপটে জাতির উদ্দেশে ভাষণে আগামী ২২ মার্চ রোববার সকাল ৭ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত জনতা কারফিউ পালনের ডাক দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
এ সময় কাউকে ঘরের বাইরে না বের হওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ধৈর্য্য ধরুন, সজাগ থাকুন, সচেতন থাকুন।
৬০-৬৫ বছর বয়সীদেরও ঘর থেকে না বের হওয়ার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। দেশবাসীকে তিনি বলেন, আগামী কয়েক সপ্তাহ খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না। আমাকে কয়েক সপ্তাহ সময় দিন।
ভারতে করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার ৭০ বছরের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন পঞ্জাবে। এ ছাড়া দেশজুড়ে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৩ জন। প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে।