চাঁদপুরে এক যুগ ধরে নদী থেকে ইজারাবিহীন বালু উত্তোলন, শত কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

  • আপডেট: ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০
  • ৩৪

নিজস্ব প্রতিনিধি:

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে প্রায় এক যুগ ধরে ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে কয়েকশ কোটি টাকা। হাইকোর্টের রীটের কারণে স্থানীয় প্রশাসন বালুমহালগুলো ইজারা দিতে পারছে না। তাহলে এই বালু উত্তোলনের টাকা যাচ্ছে কোথায়? এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন, আলোচনা ও সমালোচনা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বালুমহাল ইজারা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ করিয়ে একটি চক্র বছরের পর বছর সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করছে। ওই চক্র চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ৬০ কিলোমিটার নদী এলাকার নানা স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে।

এতে করে শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি নদী কিনারার বিস্তৃর্ণ এলাকা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। যেখানে বৈধভাবে বালুমহাল ইজারার মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেতো। সেই প্রক্রিয়ায় নেই বালুমহাল ইজারা ও নেই রাজস্ব আদায়ও। অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারী ১৯৩ নং স্মারকে চাঁদপুর বালু মহালের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিলো। পত্রিকায় সেই বিজ্ঞপ্তিও ছাপা হয়। কিন্তু জনৈক রফিক খান হাইকোর্ট বিভাগে এই ইজারা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ঐ বছরই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৭৯১/২০০৮ নং রীট মামলা দায়ের করেন বলে জানা গেছে। ওই মামলায় ইজারা কার্যক্রমের উপর আদালত স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। একই পন্থায় চাঁদপুরের আরো ৬টি বালুমহালের ইজারার বিরুদ্ধেও একই কায়দায় রীট করে বৈধ বালু মহাল ইজারা প্রথাকে স্থগিত করানো হয়।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের থেকে বালুমহাল ইজারা বন্ধ রয়েছে প্রায় ১ যুগ। অথছ মেঘনার বিভিন্ন স্থান থেকে অপরিকল্পিতভাবে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এই বালু উত্তোলনের টাকা সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। তারা হাইকোর্টের রীটের কারণেই দেশের খনিজ সম্পদ মেঘনা নদীর আস্তর বালু (যা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়) উত্তোলন ও চড়া দামে বিক্রি করছে। আর ব্যক্তি পর্যায়ে কতিপয় লোক তা থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে’।

হাইকোর্টের আদেশে এই বালু কাটা হয় বলে বালু দস্যুরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পর্যন্ত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জিজ্ঞেসা, ‘আর কত দিন হাইকোর্টের এই রীট দেখিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে ব্যক্তি বিশেষ টাকা হাতিয়ে নিবে? আর কত দিনই বা ইজারাবিহীন অবৈধ বালু কাটা চলতে থাকবে? সরজমিনে দেখা যায়,গত ২/৩ বছর যাবৎ চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লগ্গীমারা নামক মেঘনা নদীর স্থানে আনুমানিক ৫০/৬০ টি ড্রেজার রাতদিন ২৪ ঘন্টা বালু উত্তোলন করে দেধারছে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় বালু উত্তোলনে বালুবাহী বাল্ক হেডের সিরিয়াল।প্রতিটি বাল্কহেড আয়তন হিসেবে ১০ থেকে ২০/২৫ হাজার বা তারো বেশি টাকার বালু বিক্রি করে টাকা আদায় করছে।এভাবে প্রতিনিয়তই কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

অনুসন্ধানী এক তথ্যে আরো জানা যায়, এখানকার এই বালু উত্তোলনকারী দস্যুরা এর আগে হাইমচরে এবং হরিণা এলাকাতেও বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছিলো। তারা নদীতে বিচরণ করে চাঁদপুর নৌ সীমানায় যেখানে আস্তর বালু পাচ্ছে। সেখান থেকেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরকার দলের প্রভাব খাটিয়ে বালু কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন সময় এদের বিরুদ্ধে অভিযান করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছে। যার মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ২০১৭ সালে মোট ১০ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, ২০১৮ সালে মোট  ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা অর্থদন্ড সহ ৬ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

এছাড়াও গেলো বছর ২০১৯ সনে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং ১৭ জন আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কোষ্টগার্ড ও নৌপুলিশ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে এই  অভিযানগুলো পরিচালনা করেছে বলেও জানা যায়। এছাড়াও চলতি বছর সম্প্রতী কোষ্টগার্ড কর্তৃক দেশীয় অস্ত্রসহ ১৪ জনকে ড্রেজার থেকে আটক করে।রহস্যজনক কারনে পরে অবশ্য তাদেরকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছিলো। অপরদিকে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ ইজারা বালুমহালগুলোতে বছরের পর বছর বালু কেটে যাচ্ছে। তবুও চাঁদপুরের বালুমহাল ইজারা প্রথার বিরুদ্ধে করা রীটের সমাধান হচ্ছে না! হাইকোর্টের আদেশের দোহাই দিয়ে প্রায় ১ যুগ বালুকাটার বিষয়টি জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে! একটি সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদরের জনৈক এক ব্যক্তি ২০০৭ সালে ২০ লক্ষ ও ৩০ লক্ষ(মোট ৫০ লক্ষ) ঘনফুট বালু নির্দিষ্ট করে দেয়া মৌজার ডুবচরের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য মাত্র কয়েক মাসের অস্থায়ী অনুমোদন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে লাভ করেন।

পর্যবেক্ষকের মতে, ওই ৫০ লক্ষ ঘনফুট বালু মাত্র ১ মাসের মধ্যেই উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।কিন্তু নদী উত্তাল ও স্রোতের কারণ দেখিয়ে অনুমোদিত পরিমাণ বালু উত্তোলন করতে পারেনি মর্মে হাইকোর্টে ঐ জনৈক ব্যক্তি একটি রীট করেন।এই মিথ্যা তথ্যের উপর ভর করেই হাইকোর্টের আদেশের নাম ভাঙ্গিয়ে বছরের পর বছর বিভিন্ন কৌশলে ঐ প্রতিষ্ঠান মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রির সমুদয় অর্থ তার কাছে হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে প্রায় এক যুগ পার হলেও এই প্রক্রিয়ায় বালুকাটা যেন আর থামছে না! বিষয়টি জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে খতিয়ে দেখে সরকারকে যারা রাজস্ব বঞ্চিত করে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক রাষ্ট্রের ক্ষতিপূরণ আদায়ে মহামান্য প্রধান বিচারপতির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষক ও সচেতন মহল।

জেলা প্রশাসকের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা যায়, তাদের দপ্তর থেকে ২০০৮ সালের আগে চাঁদপুরের ৮টি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হতো। আর সেই বালুমহাল থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্বও আদায় হতো। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে হরিণা বালুমহাল, চর ইলিয়ট বালুমহাল, চরসুগন্ধী বালুমহাল, কালীগঞ্জ দিয়ারা বালুমহাল, কাউয়ারচর বালুমহাল, এখলাছপুর বালুমহাল, নাওভাংগা ও জয়পুর এবং রামগোপালপুর বালুমহালগুলো স্থগিত করা হয়েছে।

এ ব্যপারে ২’রা মার্চ রবিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জানান, হাইকোর্টের আদেশে ‘ওরা’ বালু কাটছে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। এদিকে একটি সূত্রে জানা যায়, ওই চক্র চাঁদপুরের আলোচিত মিনিকক্সবাজার খ্যাত রাজরাজেশ্বর চরটি কাটার জন্যও অনুমোদনের প্রক্রিয়া করে চলেছেন।

Tag :
সর্বাধিক পঠিত

অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর

চাঁদপুরে এক যুগ ধরে নদী থেকে ইজারাবিহীন বালু উত্তোলন, শত কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত সরকার

আপডেট: ০২:৫২:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ মার্চ ২০২০

নিজস্ব প্রতিনিধি:

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে প্রায় এক যুগ ধরে ইজারা প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে কয়েকশ কোটি টাকা। হাইকোর্টের রীটের কারণে স্থানীয় প্রশাসন বালুমহালগুলো ইজারা দিতে পারছে না। তাহলে এই বালু উত্তোলনের টাকা যাচ্ছে কোথায়? এ নিয়ে জনমনে রয়েছে নানা প্রশ্ন, আলোচনা ও সমালোচনা।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বালুমহাল ইজারা হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ করিয়ে একটি চক্র বছরের পর বছর সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করছে। ওই চক্র চাঁদপুরের মেঘনা নদীর ৬০ কিলোমিটার নদী এলাকার নানা স্থানে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে।

এতে করে শহর রক্ষা বাঁধ রয়েছে হুমকির মুখে। পাশাপাশি নদী কিনারার বিস্তৃর্ণ এলাকা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা। যেখানে বৈধভাবে বালুমহাল ইজারার মাধ্যমে সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা রাজস্ব পেতো। সেই প্রক্রিয়ায় নেই বালুমহাল ইজারা ও নেই রাজস্ব আদায়ও। অনুসন্ধানী তথ্যে জানা যায়, সর্বশেষ ২০০৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারী ১৯৩ নং স্মারকে চাঁদপুর বালু মহালের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিলো। পত্রিকায় সেই বিজ্ঞপ্তিও ছাপা হয়। কিন্তু জনৈক রফিক খান হাইকোর্ট বিভাগে এই ইজারা বিজ্ঞপ্তির বিরুদ্ধে ঐ বছরই মিথ্যা তথ্য দিয়ে ১৭৯১/২০০৮ নং রীট মামলা দায়ের করেন বলে জানা গেছে। ওই মামলায় ইজারা কার্যক্রমের উপর আদালত স্থগিতাদেশ দেয়া হয়। একই পন্থায় চাঁদপুরের আরো ৬টি বালুমহালের ইজারার বিরুদ্ধেও একই কায়দায় রীট করে বৈধ বালু মহাল ইজারা প্রথাকে স্থগিত করানো হয়।

খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের থেকে বালুমহাল ইজারা বন্ধ রয়েছে প্রায় ১ যুগ। অথছ মেঘনার বিভিন্ন স্থান থেকে অপরিকল্পিতভাবে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এই বালু উত্তোলনের টাকা সরকার রাজস্ব পাচ্ছে না। তারা হাইকোর্টের রীটের কারণেই দেশের খনিজ সম্পদ মেঘনা নদীর আস্তর বালু (যা নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়) উত্তোলন ও চড়া দামে বিক্রি করছে। আর ব্যক্তি পর্যায়ে কতিপয় লোক তা থেকে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়ে ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ বনে গেছে’।

হাইকোর্টের আদেশে এই বালু কাটা হয় বলে বালু দস্যুরা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালত কে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য পর্যন্ত অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। সাধারণ মানুষের জিজ্ঞেসা, ‘আর কত দিন হাইকোর্টের এই রীট দেখিয়ে সরকারকে রাজস্ব বঞ্চিত করে ব্যক্তি বিশেষ টাকা হাতিয়ে নিবে? আর কত দিনই বা ইজারাবিহীন অবৈধ বালু কাটা চলতে থাকবে? সরজমিনে দেখা যায়,গত ২/৩ বছর যাবৎ চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের লগ্গীমারা নামক মেঘনা নদীর স্থানে আনুমানিক ৫০/৬০ টি ড্রেজার রাতদিন ২৪ ঘন্টা বালু উত্তোলন করে দেধারছে বিক্রি করা হচ্ছে। আর ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ওই এলাকায় বালু উত্তোলনে বালুবাহী বাল্ক হেডের সিরিয়াল।প্রতিটি বাল্কহেড আয়তন হিসেবে ১০ থেকে ২০/২৫ হাজার বা তারো বেশি টাকার বালু বিক্রি করে টাকা আদায় করছে।এভাবে প্রতিনিয়তই কোটি টাকার বালু উত্তোলন করে বিক্রি করা হয় বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়।

অনুসন্ধানী এক তথ্যে আরো জানা যায়, এখানকার এই বালু উত্তোলনকারী দস্যুরা এর আগে হাইমচরে এবং হরিণা এলাকাতেও বছরের পর বছর বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেছিলো। তারা নদীতে বিচরণ করে চাঁদপুর নৌ সীমানায় যেখানে আস্তর বালু পাচ্ছে। সেখান থেকেই নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে সরকার দলের প্রভাব খাটিয়ে বালু কেটে বিক্রি করে যাচ্ছে। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় প্রশাসন বিভিন্ন সময় এদের বিরুদ্ধে অভিযান করে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেছে। যার মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ২০১৭ সালে মোট ১০ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, ২০১৮ সালে মোট  ৪ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা অর্থদন্ড সহ ৬ আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

এছাড়াও গেলো বছর ২০১৯ সনে ১৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড এবং ১৭ জন আসামীকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।স্থানীয় প্রশাসন কর্তৃক কোষ্টগার্ড ও নৌপুলিশ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে এই  অভিযানগুলো পরিচালনা করেছে বলেও জানা যায়। এছাড়াও চলতি বছর সম্প্রতী কোষ্টগার্ড কর্তৃক দেশীয় অস্ত্রসহ ১৪ জনকে ড্রেজার থেকে আটক করে।রহস্যজনক কারনে পরে অবশ্য তাদেরকে ছেড়েও দেওয়া হয়েছিলো। অপরদিকে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ ইজারা বালুমহালগুলোতে বছরের পর বছর বালু কেটে যাচ্ছে। তবুও চাঁদপুরের বালুমহাল ইজারা প্রথার বিরুদ্ধে করা রীটের সমাধান হচ্ছে না! হাইকোর্টের আদেশের দোহাই দিয়ে প্রায় ১ যুগ বালুকাটার বিষয়টি জনমনে বিভিন্ন প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে! একটি সূত্রে জানা যায়, চাঁদপুর সদরের জনৈক এক ব্যক্তি ২০০৭ সালে ২০ লক্ষ ও ৩০ লক্ষ(মোট ৫০ লক্ষ) ঘনফুট বালু নির্দিষ্ট করে দেয়া মৌজার ডুবচরের নাব্যতা ফিরিয়ে আনার জন্য মাত্র কয়েক মাসের অস্থায়ী অনুমোদন বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে লাভ করেন।

পর্যবেক্ষকের মতে, ওই ৫০ লক্ষ ঘনফুট বালু মাত্র ১ মাসের মধ্যেই উত্তোলন করে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।কিন্তু নদী উত্তাল ও স্রোতের কারণ দেখিয়ে অনুমোদিত পরিমাণ বালু উত্তোলন করতে পারেনি মর্মে হাইকোর্টে ঐ জনৈক ব্যক্তি একটি রীট করেন।এই মিথ্যা তথ্যের উপর ভর করেই হাইকোর্টের আদেশের নাম ভাঙ্গিয়ে বছরের পর বছর বিভিন্ন কৌশলে ঐ প্রতিষ্ঠান মেঘনা থেকে বালু উত্তোলন করে বিক্রির সমুদয় অর্থ তার কাছে হাতিয়ে নিচ্ছে। এদিকে প্রায় এক যুগ পার হলেও এই প্রক্রিয়ায় বালুকাটা যেন আর থামছে না! বিষয়টি জাতীয় অর্থনীতির স্বার্থে খতিয়ে দেখে সরকারকে যারা রাজস্ব বঞ্চিত করে প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক রাষ্ট্রের ক্ষতিপূরণ আদায়ে মহামান্য প্রধান বিচারপতির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন স্থানীয় পর্যবেক্ষক ও সচেতন মহল।

জেলা প্রশাসকের রাজস্ব বিভাগ থেকে জানা যায়, তাদের দপ্তর থেকে ২০০৮ সালের আগে চাঁদপুরের ৮টি বালুমহাল ইজারা দেওয়া হতো। আর সেই বালুমহাল থেকে প্রচুর পরিমাণ রাজস্বও আদায় হতো। পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে হরিণা বালুমহাল, চর ইলিয়ট বালুমহাল, চরসুগন্ধী বালুমহাল, কালীগঞ্জ দিয়ারা বালুমহাল, কাউয়ারচর বালুমহাল, এখলাছপুর বালুমহাল, নাওভাংগা ও জয়পুর এবং রামগোপালপুর বালুমহালগুলো স্থগিত করা হয়েছে।

এ ব্যপারে ২’রা মার্চ রবিবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) জানান, হাইকোর্টের আদেশে ‘ওরা’ বালু কাটছে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। এদিকে একটি সূত্রে জানা যায়, ওই চক্র চাঁদপুরের আলোচিত মিনিকক্সবাজার খ্যাত রাজরাজেশ্বর চরটি কাটার জন্যও অনুমোদনের প্রক্রিয়া করে চলেছেন।