ইএফডি স্থাপনযোগ্য প্রতিষ্ঠানের তালিকা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। জামাল হোসেন বলেন, ইএফডি মেশিন বসানো উচ্চতর কারিগরি বিষয় হওয়ায় যথাযথ ট্রায়াল রান সম্পন্ন না করে এর অপারেশনে যাওয়টা ঝুঁকিপূর্ণ। তাই, আমরা ইএফডির যথাযথ ট্রায়াল রান কার্যক্রম শেষ করে এটি বসানো শুরু করব। তিনি জানান, আগামী মাসের প্রথম দুই সপ্তাহ ট্রায়াল রান চলবে। এরপরই শুরু করব চূড়ান্তভাবে ইএফডি বসানো। চীনভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান এসজেডজেডটি মেশিন সরবরাহ করছে। গতবছর এনবিআর মোট দশ হাজার মেশিন কেনার কার্যদেশ প্রদান করে। এর মধ্যে ১০০ মেশিন বেশ আগেই দেশে পৌঁছে গেছে। বাকি মেশিন আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশে পৌঁছে যাবে। জামাল হোসেন আশা প্রকাশ করেন, ইএফডি ব্যবহার করলে পণ্য ও সেবা বেচাকেনায় ভ্যাট হিসাবের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসার পাশাপাশি ভ্যাট ফাঁকি রোধ করা সম্ভব হবে। ভ্যাট ফাঁকি ঠেকাতে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর থেকে শুরু করে ২৫ ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইএফডি চালু করবে এনবিআর। এর মধ্যে রয়েছে-আবাসিক হোটেল, রেস্তোরা ও ফাস্টফুড, ডেকোরেটরস ও ক্যাটারার্স, মোটরগাড়ির গ্যারেজ-ওয়ার্কশপ এবং ডকইয়ার্ড,বিজ্ঞাপনী সংস্থা,ছাপাখানা ও বাঁধাই সংস্থা,কমিউনিটি সেন্টার, মিষ্টান্ন ভান্ডার, স্বর্ণকার-রৌপ্যকার ও স্বর্ণ পাইকারি,আসবাবপত্র বিক্রয়কেন্দ্র, কুরিয়ার ও এক্সপ্রেস মেইল সার্ভিস, বিউটি পার্লার,হেলথ ক্লাব ও ফিটনেস সেন্টার, কোচিং সেন্টার,সামাজিক ও খেলাধুলা বিষয়ক ক্লাব, তৈরি পোশাক বিপণন, ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল গৃহস্থালি সামগ্রীর বিক্রয়কেন্দ্র, শপিং সেন্টার, ডিপার্টমেন্টাল স্টোর, জেনারেল স্টোর বা সুপারশপ, বড় ও মাঝারি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, যান্ত্রিক লন্ড্রি, সিনেমা হল ও সিকিউরিটি সার্ভিস। দশ হাজার ইএফডি মেশিন কেনায় সরকারের ব্যয় হচ্ছে ৩১৭ কোটি টাকা। এনবিআর সূত্র জানিয়েছে, এতদিন ধরে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে সারাদেশের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোয় ইলেকট্রনিক ক্যাশ রেজিস্ট্রার (ইসিআর) মেশিন ব্যবহার হতো। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি সংবলিত এই ইএফডি মূলত ইসিআরের উন্নত সংস্করণ। জামাল হোসেন বলেন, দেশের অর্থনীতির আকার বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পণ্য ও সেবা খাত থেকে যে পরিমাণ ভ্যাট রাজস্ব আয় হওয়ার কথা ছিল ইসিআরের মাধ্যমে সে অনুযায়ী ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হয়নি। তবে, ইএফডি মেশিনে ভ্যাট ফাঁকির সুযোগ যেমন নেই তেমনি ব্যবসায়ীদের হয়রানিরও সুযোগ নেই। কেননা এই যন্ত্রটি এনবিআরের সার্ভারে সরাসরি যুক্ত থাকায় প্রতিটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রতিদিনকার বিক্রয়ের তথ্য সরাসরি এনবিআরের সার্ভারে চলে আসবে। তিনি বলেন, এ কারণে একবার ইএফডিতে ইনপুট দেয়া হলে সেই তথ্য গোপন করার কোন সুযোগ নেই। ইসিআর মেশিন অফলাইন হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীদের তথ্য আড়াল করার সুযোগ থাকে। আবার যেসব ব্যবসায়ী এনবিআরের স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী ইসিআর ব্যবহার করেন না। তাদের অনেক ফিচার অনুপস্থিত থাকে। এ কারণে ভ্যাট আদায়ে ইসিআরের তুলনায় ইএফডি মেশিন অনেক বেশি কার্যকর। নতুন ভ্যাট আইন অনুযায়ী-বাংলাদেশের যেসব ব্যবসায়ীর বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার বেশি অর্থাৎ যারা ভ্যাটের আওতাধীন তাদের ইএফডি মেশিন ব্যবহার করতে হবে।
শিরোনাম:
মার্চে ১০০ ইএফডি বসানো হবে
অনলাইন ডেস্ক
মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) আদায়ে স্বচ্ছতা আনতে আগামী মার্চ মাসে ১০০টি প্রতিষ্ঠানে বসানো হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) মেশিন। সে লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০০টি ইএফডি মেশিন আমদানি করা হয়েছে। এ বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন) মো. জামাল হোসেন জানান, চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে ইএফডি মেশিন চালুর ঘোষণা দেয়া হয়েছিল। কিন্তু এনবিআরের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের ডাটা সেন্টারের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় সময়মত এটি চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে, এখন সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে রয়েছে। তাই, আশা করছি আগামী মাসে ১০০ মেশিন বসানো যাবে।
Tag :
সর্বাধিক পঠিত