নিজস্ব প্রতিনিধি:
গৌরিপুর-কচুয়া-হাজীগঞ্জ-লক্ষীপুর সড়কটি লক্ষীপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের জনগনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যস্ততম সড়ক। এ সড়কটির কাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ হলে ঢাকা থেকে নোয়াখালী, লক্ষীপুর, চাঁদপুর, শরীয়তপুর’সহ দক্ষিণাঞ্চলের সাথে যোগাযোগের সময় কমবে অত্যন্ত ১ ঘন্টা। সে সাথে সাশ্রয়ী হবে সময় ও অর্থের।
১৯৯৬ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এ সড়কটির নির্মাণ কাজ হতে নেয়। পরবর্তীকালে জোট সরকার ক্ষমতায় আসলে সড়কটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
পুনরায় ২০০৮ সালে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় এসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শেষ করে কচুয়া অংশে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর ও হাজীগঞ্জ অংশে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেজর অব. রফিকুল ইসলাম বীরউত্তম সড়কের উদ্বোধন করেন।
পরবর্তী সময়ে সড়কটি আরো প্রশস্ত করণের জন্য ৫৮ কোটি টাকা ও রাস্তার বাঁক সরলীকরণের চাঁদপুর অংশেংজন্য ১৪ কোটি টাকা বরাদ্ধ প্রদান করা হয়। এ সড়কে কাজ শেষ না হতেই কয়েকটি স্থানে বাঁক সরলী করণ এবং মূল সড়কের মাঝ পর্যন্ত চলে এাসেছে।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের ৪২ কিলোমিটার এ সড়ক দিয়ে কচুয়া, হাজীগঞ্জ, মতলব, চাঁদপুর, রামগঞ্জ, লক্ষীপুর ও নোয়াখালী অঞ্চলের লোকজন ঢাকা, চাঁদপুর ,কুমিল্লা ও চট্রগাম যাতায়াত করে। দুর্ঘটনা এড়াতে নতুন করে ওই সড়কে বাঁক সরলীকরন ব্রীজ, কালভার্টের কাজ শেষ হয়েছে । চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ অফিস সুত্রে জানা যায় কুমিল্লার মেসার্স এমআরসি ও মেসার্স হাসান বিল্ডার্স ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজের টেন্ডার পায়। এ ছাড়াও ৫৮ কোটি টাকা ব্যয়ে চলছে চাঁদপুর অংশের ১৮ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণের কাজ। এ কাজের টেন্ডার পেয়েছে কুমিল্লার রানা বিল্ডার্স লিমিটেড। কাজের শুরু থেকেই রানা বিল্ডার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল নিন্মমানের পাথর ও বালু দিয়ে কাজ করার। এ ছাড়াও বালুর সাথে আনুপাতিক হারে পাথর ও বালু না মিশিয়ে অতিরিক্ত বালু ও নামে মাত্র পাথর দিয়ে কাজ করার অভিযোগ ছিল।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায় ১২টি বাঁক সরলীকরন, ৪টি কালভার্ট ও ১টি ব্রীজ ইতিমধ্যে নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। রাস্তার কাজ শেষ না হতেই নির্মানাধীন সড়কটির অন্তত ২২টি স্থানে ভেঙ্গে সড়কের মাঝ পর্যন্ত চলে এসেছে। সড়কের কাজ করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সড়কের বিভিন্ন স্তরে বালি, খোয়া ও পাথর আনুপাতিক হারে মিশ্রন না করার কারণে কাজ শেষ হতেই না হতেই সড়কটি ভেঙ্গে যাচ্ছে বলে স্থানীয়রা মনে করে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তদরকিও খুব একটা চোখে পড়েনা। ফলে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হওয়ার আশংকা করছে যাত্রী ও সাধারন জনগন। ভেঙ্গে যাওয়া কোন কোন স্থানে লাল পতাকাও দেওয়া হয়নি। কয়েকটি স্থানে স্থানীয়রা জনস্বার্থে গর্তের মাঝে বাঁশের আগায় লাল পতাকা টানিয়ে দিয়েছে।
গাড়ি চালক ও যাত্রী সাধারন মনে করছে পালাখাল মোড়ে ২টি, দোয়াটি মেড়ে ২টিসহ অন্তত ৪টি স্থানে বাঁক সরলীকরণ খুবই ঝুকিপূর্ণ হয়েছে। কারণ বাঁক সোজা করতে গিয়ে প্রকৃত পক্ষে সোজা করাই হয়নি। সড়কের বাঁকের এক প্রান্ত থেকে অন্যপ্রান্তের গাড়ী দেখা যায়না। এতে দুর্ঘটানর ঝুঁকি আরো বেড়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে বলে যাত্রী ও গাড়ির চালকগন মনে করে। সড়কটির চাঁদপুর অঞ্চলের ৩২ কিলোমিটারের বাঁক সরলীকরণ ব্রীজ নির্মানের কাজ শেষে কচুয়-গৌরিপুর সড়কে বিশাল ব্যয়ে মজবুতীকরনের কাজ চলছে। মজবুতী করনের কাজ সঠিকভাবে করা ও ভেঙ্গে যাওয়া সড়কটির বিষয়ে জরুরী ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান স্থানিয়রা ।
গৌরিপুর-কচুয়া-হাজীগঞ্জ রাস্তা মেরামতের কাজের বিষয়ে চাঁদপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলামের মুঠোফেনে (০১৭৩০৭৮২৬৪৪) কয়েকবার ফোন করেও ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।