ট্রেন দূর্ঘটনায় চাঁদপুরের একটি পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ

  • আপডেট: ০২:৪৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯
  • ২৯

চাঁদপুর, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর:

তূর্ণা আর নিশীথার দূর্ঘটনার সাথে সাথে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে চাঁদপুর একটি পরিবারের। পরিবার হারিয়েছে তাদের আদরের ছোট মেয়ে ফারজানাকে। হাসপাতলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে একই পরিবারের শিশু বৃদ্ধাসহ আরো ৬জন। আদরের ছোট মেয়ে ফারজানাকে শেষবারের মতো দেখতে প্রবাস থেকে রওনা দিয়েছেন বাবা বিল্লাল বেপারী। প্রবাস থেকে ফরাজানা একনজর দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করায় বাবা বিল্লাল হোসেনের অপেক্ষায় রয়েছে ফারজানার মরদেহ।

এদিকে ফারজানার মা বেবী বেগম (৪০), মামাতো ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), নানি ফিরোজা বেগম (৭০), মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতু (১৭), ইলমা (৭) – তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামে। নিহত ফারজানা বিবাহিত। তিনি শহরের নাজিরপাড়া দেওয়ানবাড়ির মোহন দেওয়ানের স্ত্রী।

জানা গেছে, একটি জাঁকজমক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ক্লান্ত সবাই। ফেরার পথে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথার ধাক্কায় পুরো পরিবার এখন চুরমার হয়ে গেল। কারো পা, কারো হাত, কারো কোমার ভেঙে গেছে। আবার কারো মাথায় কাচের টুকরা ঢুকে গেছে।

সিলেটের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন থেকে লাকসাম রেল জংশনের উদ্দেশে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু করে পুরো পরিবার। সেই যাত্রা শেষ রজনীতে ছত্রভঙ্গ হয়ে সঙ্গী এখন দুঃখ-যন্ত্রণাময় বাঁচার লড়াই।

নিহত ফারজানার পরিবারের সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য মুনাফ খান। তিনি খবর পেয়ে রাজধানীর হাসপাতালে হাজির। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রান্ত বদল করে ছুটে চলছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সিলেটে ফারজানার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান গেছে। সেখান থেকে চাঁদপুরে ফেরার পথে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে ফারজানার নানি ফিরোজা বেগম (৭০), ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতুর (১৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ নামক স্থানে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোর ২টা ৫৬ মিনিটে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুটি ট্রেনে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৬ যাত্রী। এর মধ্যে চাঁদপুরের ৫জন রয়েছে। নিহতরা হলেন হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম রাজারগাঁও গ্রামের বেপারী বাড়ীর মৃত আব্দুুল জলিলের ছেলে মজিবুর রহমান (৫০) ও তার স্ত্রী কুলসুমা বেগম (৪২)। চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামের বিল্লাল বেপারীর মেয়ে ফারজানা আক্তার (২০), হাইমচর উপজেলার ঈশানপুরের গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে মরিয়ম বেগম (৬) একই উপজেলার দক্ষিণ ঈশানপুরের মঈনউদ্দিনের স্ত্রী কাকলী (২০) ।

Tag :

সম্পাদক ও প্রকাশক:
মোঃ মহিউদ্দিন আল আজাদ

মোবাইল : ০১৭১৭-৯৯২০০৯ (নিউজ) বিজ্ঞাপন : ০১৬৭০-৯০৭৩৬৮
ইমেইলঃ notunerkotha@gmail.com

দেশে HMPV ভাইরাসে আক্রান্ত নারীর মৃত্যু, বাড়ছে আতঙ্ক

ট্রেন দূর্ঘটনায় চাঁদপুরের একটি পরিবারের স্বপ্ন ভঙ্গ

আপডেট: ০২:৪৭:০০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০১৯

চাঁদপুর, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর:

তূর্ণা আর নিশীথার দূর্ঘটনার সাথে সাথে স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে চাঁদপুর একটি পরিবারের। পরিবার হারিয়েছে তাদের আদরের ছোট মেয়ে ফারজানাকে। হাসপাতলে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে একই পরিবারের শিশু বৃদ্ধাসহ আরো ৬জন। আদরের ছোট মেয়ে ফারজানাকে শেষবারের মতো দেখতে প্রবাস থেকে রওনা দিয়েছেন বাবা বিল্লাল বেপারী। প্রবাস থেকে ফরাজানা একনজর দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করায় বাবা বিল্লাল হোসেনের অপেক্ষায় রয়েছে ফারজানার মরদেহ।

এদিকে ফারজানার মা বেবী বেগম (৪০), মামাতো ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), নানি ফিরোজা বেগম (৭০), মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতু (১৭), ইলমা (৭) – তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন।

তাদের গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামে। নিহত ফারজানা বিবাহিত। তিনি শহরের নাজিরপাড়া দেওয়ানবাড়ির মোহন দেওয়ানের স্ত্রী।

জানা গেছে, একটি জাঁকজমক বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে ক্লান্ত সবাই। ফেরার পথে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথার ধাক্কায় পুরো পরিবার এখন চুরমার হয়ে গেল। কারো পা, কারো হাত, কারো কোমার ভেঙে গেছে। আবার কারো মাথায় কাচের টুকরা ঢুকে গেছে।

সিলেটের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন থেকে লাকসাম রেল জংশনের উদ্দেশে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেসে যাত্রা শুরু করে পুরো পরিবার। সেই যাত্রা শেষ রজনীতে ছত্রভঙ্গ হয়ে সঙ্গী এখন দুঃখ-যন্ত্রণাময় বাঁচার লড়াই।

নিহত ফারজানার পরিবারের সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য মুনাফ খান। তিনি খবর পেয়ে রাজধানীর হাসপাতালে হাজির। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রান্ত বদল করে ছুটে চলছেন। তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার সিলেটে ফারজানার খালাতো বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান গেছে। সেখান থেকে চাঁদপুরে ফেরার পথে এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।

জানতে চাইলে তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে ফারজানার নানি ফিরোজা বেগম (৭০), ভাই ইউছুফ ওরফে জুবায়ের বেপারী (২৮), মামি শাহিদা বেগম (৪০), মামাতো বোন মিতুর (১৭) অবস্থা আশঙ্কাজনক।

উল্লেখ্য, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার মন্দবাগ নামক স্থানে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ভোর ২টা ৫৬ মিনিটে উপজেলার ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের ক্রসিংয়ে আন্তনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ও তূর্ণা নিশীথা ট্রেনের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দুটি ট্রেনে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন ১৬ যাত্রী। এর মধ্যে চাঁদপুরের ৫জন রয়েছে। নিহতরা হলেন হাজীগঞ্জ উপজেলার রাজারগাঁও ইউনিয়নের পশ্চিম রাজারগাঁও গ্রামের বেপারী বাড়ীর মৃত আব্দুুল জলিলের ছেলে মজিবুর রহমান (৫০) ও তার স্ত্রী কুলসুমা বেগম (৪২)। চাঁদপুর সদর উপজেলার বালিয়া ইউনিয়নের উত্তর বালিয়া গ্রামের বিল্লাল বেপারীর মেয়ে ফারজানা আক্তার (২০), হাইমচর উপজেলার ঈশানপুরের গ্রামের জাহাঙ্গীরের মেয়ে মরিয়ম বেগম (৬) একই উপজেলার দক্ষিণ ঈশানপুরের মঈনউদ্দিনের স্ত্রী কাকলী (২০) ।