চাঁদপুর, ১০ নভেম্বর, রবিবার:
ঘুর্ণিঝড় ‘বুলবুল’র প্রভাবে বাতাসের গতি বৃদ্ধি পেয়ে চাঁদপুর সদর ও হাইমচর উপজেলায় প্রায় দুই হাজার গাছ ভেঙে উপড়ে পড়েছে। গাছ পড়ে এবং ঝড়ো হাওয়ায় হাইমচর উপজেলার চরাঞ্চলে ৫শতাধিক ও সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে বহু বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। চরাঞ্চলের ঘরগুলোর টিন ও বেড়া বাতাসে উড়ে নদীতে গিয়ে পড়ে। হাইমচর ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের আঃ ছোবহান (৫৫) নামে এক ব্যাক্তি গাছের ডালের নিচে পড়ে আহত হয়েছেন।
রোববার (১০ নভেম্বর) বিকাল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় বুলবুল এই তান্ডব চালায়। বিকাল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চাঁদপুর শহরসহ জেলার ৮উপজেলার অনেকাংশে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছন্ন রয়েছে।
হাইমচর প্রতিনিধি জানান, উপজেলার প্রায় সকল গ্রামেই প্রচুর পরিমাণে গাছ ভেঙে রাস্তায় ও ঘরবাড়ির উপরে পড়েছে। ঝড়ো হাওয়ায় বহু পানের বোরজ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌসি বেগম বলেন, প্রচন্ড বাতাসে হাইমচর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে হাওলাদার কান্দিতে ৩৮টিসহ উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের ঈশানবালা, মনিরপুরচর, গাজীপুর, নীলকমল, মাঝির বাজার, সাহেবগঞ্জ, চরকোড়ালিয়া, মাঝেরচর ও নতুন চরে প্রায় ৫শতাধিক কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এছাড়া সড়কে বহুগাছ ভেঙে পড়ে। এসবগাছ তাৎক্ষনিক চাঁদপুর ও হাইমচর ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও স্থানীয়দের সহায়তায় কেটে অপসারণ করা হয়েছে।
সদর উপজেলার বাগাদী ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা জানান, চাঁদপুর সিআইপি বেড়িবাঁধের সড়কে, বিদ্যালয়ে ও ঘরবাড়িতে প্রায় শতাধিক গাছ ভেঙে উপড়ে পড়েছে। স্থানীয় লোকজন এসব গাছ কেটে সড়ক থেকে সরিয়ে নিয়েছে।
এদিকে শহরের পুরাণ বাজার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় ৮ থেকে ১০টি বড় বড় গাছ উপড়ে পড়েগেছে। শহরের কালিবাড়ী এলাকার গুয়াখোলা রোডে গাছের ডাল ভেঙে বিদ্যুৎ তারের উপরে পড়েছে এবং বিদ্যুৎ তার ছিড়ে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, সকাল থেকে ঝড়ো হাওয়া থাকলেও বিকেল ৩টার পরে মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড়ে গোয়ালনগর ও বলিয়ার চরে প্রায় বহু কাঁচা ও অস্থায়ীভাবে উঠানে ঘর ভেঙে পড়েছে এবং এসব ঘরের টিনের চাল ও বেড়া বাতাসে উড়ে নদীতে গিয়ে পড়ে।
চাঁদপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শোয়েব বলেন, ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবের কারণে চাঁদপুরে বাতাসের তীব্রতা বেড়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ৪নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত রয়েছে।
চাঁদপুর বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এস.এম.ইকবাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পড়ে বহু গাছপালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়েছে। এসব গাছপালা কেটে অপসারণ করা হচ্ছে। এছাড়াও আমাদের জাতীয় গ্রীডে মেরামতের কাজ করার কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। লাইনগুলো সচল হলেই বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা হবে।
চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রমহান খান বলেন, হাইমচর উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতির খবর পেয়েছি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে সরেজমিন দেখে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য।